#নয়া দিল্লি: সহজ ভাবে বললে, সরকারের আয়বৃদ্ধির মূল উৎস হল নানা ক্ষেত্রে কর। করদাতারা যে টাকাটা প্রতি অর্থবর্ষে দিয়ে থাকেন, তা রাজস্ববৃদ্ধির সহায়ক হয়। এখান থেকেই নানা উন্নয়মূলক কাজে ব্যয় করে থাকে সরকার। সে ক্ষেত্রে করছাড় কী ভাবে রাজস্ববৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ভারতের অর্থনীতি মূলত গ্রাহকের চাহিদার উপরে নির্ভরশীল। তাই আশা করা হচ্ছে যে এই চাহিদাবৃদ্ধির লক্ষ্যে সব রকম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের বাজেটে। সুখবর এই যে ফরেক্স রিজার্ভ প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলারের কাছে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। অন্য দিকে, পর্যাপ্ত বর্ষণ কৃষিনির্ভর দেশের অর্থনীতির পক্ষে সহায়ক হয়ে উঠেছে। সব মিলিয়ে, করোনা-বিধ্বস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে ওঠার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
এই দিক থেকে GDP যদি অন্তত ৮ শতাংশ-এ বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে নির্মাণক্ষেত্রে নানা ধরনের কর ছাড়ের উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, যে সব সাবসিডি, ভেন্ডার পেমেন্টগুলো বাকি পড়ে আছে, সরকারের সেগুলো সত্বর মেটানো উচিৎ বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। তাতে দেশের গ্রাহকেরা নানা ব্যাপারে উৎসাহিত হয়ে উঠবে। সেই কেনাকাটা থেকে যে কর উঠে আসবে, তা রাজস্ববৃদ্ধি করবে।
ভারতে নির্মাণক্ষেত্র দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প বলে পরিগণিত হয়ে থাকে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই দিকে যদি করছাড়ের বন্দোবস্ত করা যায়, তাহলে দুই দিক থেকে লাভ হতে পারে। বিনিয়োগকারীরা যেমন নির্মাণক্ষেত্রে টাকা ঢালবেন, তেমনই দেশের মানুষেরও এই ক্ষেত্রে ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। যা চাহিদা পরিমাণ বাড়িয়ে অর্থনীতির উন্নতির সহায়ক হবে। এই এক নিয়ম যদি বিদ্যুৎ, পরিবহন এবং রেলশিল্পে প্রযোজ্য হয়, তাহলে সেখান থেকেও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আসতে পারে বলে দাবি করছেন অর্থনীতিবিদরা।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা GST নিয়েও করছাড়ের উল্লেখ করছেন। তাঁরা বলছেন, যদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্ষেত্রে GST-র পরিমাণ মাত্র ৫ শতাংশ রাখা হয়, তাহলে সেটা সরকারের পক্ষে অলাভজনক বলে সাব্যস্ত হবে না। বরং, দেশের মানুষ আরও বেশি করে কেনাকাটায় উৎসাহিত হয়ে উঠবে। আখেরে তা রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করবে। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে যদি হাইজিন-সংক্রান্ত পণ্যে GST কমিয়ে দেওয়া যায়, তা হলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রেরও উন্নতি হবে।
সব মিলিয়ে অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য- আসন্ন বাজেটে যত বেশি করে দেশের মাুষকে কেনাকাটার সুযোগ করে দেওয়া যাবে, তত বেশি করে রাজস্ব এবং অর্থনীতির উন্নতি ঘটবে। যা করছাড় ব্যতিরেকে সম্ভব নয়।