#নয়াদিল্লি: নানাভাবে ঢেকেঢুকে রাখা অন্দরের কাজিয়া এখন একেবারে প্রকাশ্যে| দলের অন্দরে জ্বলতে থাকা আগুনের ধোঁয়া অনেক আগে থেকেই দেখা যাচ্ছিল, বিহার নির্বাচনের পর ন্যূনতম আবরণটুকুও খসে গেল ৷ দলের ভিতরের কলহ এখন এতটাই তীব্র যে নাম না করে কপিল সিব্বলের মতো দুঁদে, প্রবীণ, দাপুটে নেতাকে সরাসরি দল ছাড়ার কথা বলে বসলেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷ তাঁর বার্তা যদিও দলের সমস্ত বিদ্রোহী নেতাদের উদ্দেশেই|
সমস্যা সূত্রপাত অনেক আগেই ৷ দলের অধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে দলের অন্দরের বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢেলেছে একের পর এক রাজ্য ও উপনির্বাচনের ফল ৷ বিহারে কংগ্রেসের ভরাডুবি একটানে খুলে দিয়েছে অন্তিম আবরণও ৷ কংগ্রেসেরই আত্মসমালোচনায় সরব দলের প্রবীণ নেতা কপিল সিব্বল ৷ প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী নেতার বিস্ফোরক উক্তি,‘হারই কংগ্রেসের অভ্যেস হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷’ একইসঙ্গে দলের খোলনলচে পাল্টে ফেলার পক্ষেও আরও একবার সওয়াল করেন সিব্বল ৷ এতেই ক্ষুব্ধ অধীর ৷ পাল্টা আক্রমণে এদিন বলেন, শুধু মুখের কথায় কোনও কাজ হয় না ৷ আত্মবিশ্লেষণ নয়, দরকার পদক্ষেপের ৷ কারোর এই দল পছন্দ না হলে সে নিজের আদর্শের উপযুক্ত অন্য দলে যেতে চাইলে বা আলাদা দল করতে পারে ৷
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিব্বল মঙ্গলবার বলেন, ‘গত ছ’বছরে কংগ্রেস যদি আত্মসমালোচনা না করতে পেরে থাকে. তাহলে এখন আর তা সম্ভব নয়। কোথায় ভুল হচ্ছে, কোথায় সমস্যা রয়েছে কংগ্রেস সবটাই জানে। শুধু সেগুলো মেনে নিতে রাজি নয় তাঁরা।’ সিব্বলের অভিযোগ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, ‘কংগ্রেস নিয়ে উনি খুবই উদ্বিগ্ন, কিন্তু সাম্প্রতিক বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের ভোটের সময় ওনাকে দেখা যায়নি ৷ উনি এগুলোতে উদ্যোগী হয়ে এখন যা বলছেন চা করে দেখালেই প্রমাণ হত ওনার কথার সত্যতা ৷ শুধু মুখের কথায় এখানে কিছু হয় না ৷ কাজের কাজ কিছু না করে এই আত্মবিশ্লেষণের কোনও মানে নেই।’
এখানেই শেষ নয় বিদ্রোহী নেতাদের উদ্দেশে অধীরের কটাক্ষ, ‘দলের প্রবীণ অভিজ্ঞ নেতাদের মুখে এমন মন্তব্য শোভা পায় না। দলীয় নেতৃত্ব অথবা দলের মধ্যে সঠিক জায়গায় যাবতীয় অভাব-অভিযোগ জানাতে পারেন তাঁরা। দল পুনর্গঠন নিয়ে যদি এতই চিন্তিত হন, তাহলে সক্রিয় ভাবে মাঠে নামুন।’ শুধু সিব্বলই নন, কংগ্রেসের ধারাবাহিক খারাপ ফলে মুখ খুলেছেন অনেক প্রবীণ নেতাই ৷
বিহার ভোটে ভরাডুবি হাত শিবিরের ৷ জোটসঙ্গী তেজস্বী যাদবের RJD বিহারে একক বৃহত্তম দল হলেও, জোটের বাকি সঙ্গীরা নিজেদের আসন বাড়ালেও কংগ্রেস মুখ থুবড়ে পড়ায় সরকার গড়ার অঙ্কে এগিয়ে যায় এনডিএ ৷ চলতি নির্বাচনে বহু জেতা আসনে হেরে গিয়েছে কংগ্রেস ৷ এহেন পরাজয়ের পর আরজেডিও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেসের নির্বাচনের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে ৷ কংগ্রেসের অন্দরে তৃণমূল স্তর থেকেও উঠে এসেছে উষ্মা ৷ সবমিলিয়ে অন্তর্কলহ একেবারে প্রকাশ্যে ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Adhir Ranjan Chowdhury