#মুম্বই: সালটা ২০১৯। বিয়ের পর প্রথম হনিমুন করে এসেছিলেন নব দম্পতি মহম্মদ শারিক ও অনিবা কুরেশি। সুখেই চলছিল সংসার। মুম্বইয়ের বাসিন্দা তাঁরা। এর পর গর্ভবতী হন অনিবা। এই খবরে পরিবারের সকলেই খুশি হন। আর এই সময় তাঁদেরই এক আত্মীয় তাবাস্সুম কুরেশি যিনি শারিকের চাচি বা কাকিমা হন সম্পর্কে, তিনি একটি গিফট দেন। শারিক ও অনিবার জন্য কাতারের টিকিট ও হোটেল বুক করে বলেন, সন্তান জন্মানোর খুশিতে দ্বিতীয় হনিমুন করে আসুক তাঁরা। এতে শারিক, অনিবা এবং পরিবারের সকলেই বেশ খুশি হয়। কিন্তু কে জানত এর পিঁছনে রয়েছে এক বড় চক্রান্ত।
২০১৯-এ অনিবাকে নিয়ে কাতারের উদ্দেশ্যে রওনা হয় শারিক। কিন্তু হামাদ ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে নেমে তাঁরা চমকে যান। তাঁরা জানতেন না এত বড় বিপদ অপেক্ষা করছে তাঁদের জন্য। তাঁদের কাছে একটি ব্যাগ পাওয়া যায় যাতে ৪ কেজি ১০০ গ্রামের ড্রাগ বা মাদক পাওয়া যায়। এবং এই কারণে তাঁদের দশ বছরের জেল হয়। তখনই কোনও কথা না শুনে তাঁদেরকে আলাদা আলাদা জেলে পাঠানো হয় কাতারে।
View this post on Instagram
ঘটনার প্রায় দু'বছর কাটতে চলে। ভারত সরকারের তরফ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছিল এই দম্পতির হয়ে সঠিক তথ্য যাচাইয়ের। পরিবারের লোক বার বার আবেদন করেন, যে তাঁদের ছেলে মেয়েকে ফাঁসানো হয়েছে। এর পর এনসিবি এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। এবং সামনে আসে ভয়ানক তথ্য। তাবাস্সুম কুরেশি নিজেও শারিক ও অনিবার সঙ্গে যাচ্ছিলেন কাতার। কিন্তু তাঁর প্ল্যান অন্য ছিল। ঠিক ফ্লাইটে ওঠার আগের মুহূর্তে তিনি জানান জরুরি কারণে যেতে পারছেন না। একটি ব্যাগে কিছু গিফট আছে বলে শারিকের হাতে ব্যাগটি ধরিয়ে দেন। শারিক সে সময় আর ব্যাগ খুলে চেক করেননি। তাড়াহুড়োয় সেই ব্যাগ গিয়ে পৌঁছয় কাতারে। এবং দেখা যায় তাতে মাদক রয়েছে। এরপর আর কোনও কথা শোনা হয়নি ওই দম্পতির।
এর পর দীর্ঘ লড়াই। জেলের মধ্যেই কন্যা সন্তান আয়াতের জন্ম দেন অনিবা। ২০২০র ২৬ ফেব্রুয়ারি। সে সময় অন্য জেলে রয়েছেন শারিক। শারিক জানান আট মাস পর তিনি মেয়েকে কোলে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। জেলেই কেটেছে আয়াতের এই এতগুলো মাস। কিছুতেই তাঁদের ছাড়া পাওয়ার কথা নয়। রোজ কান্না কাটি আর ভগবানের কাছে বিচার চেয়েছেন অনিবা। শেষে সব ঠিক হয়। প্রমাণ করা হয় অনিবা ও শারিককে সত্যিই ফাঁসানো হয়েছে। তাঁরা এই ড্রাগ সম্পর্কে কিছু জানতেন না। অবশেষে সব চার্জ মুক্ত করে ছাড়া হয় তাঁদের। অবেশেষে গতকাল মুম্বই বিমানবন্দরে নামেন শারিক ও অনিবা। সঙ্গে তাঁদের মেয়ে আয়াত। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকেরা। গ্রেফতার করা হয় তাবাস্সুম কুরেশিকে। তাঁদের এয়ারপোর্টে নামার ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ইনস্টাগ্রামে ভায়রাল ভায়ানি। চোখে জল আনা ভিডিও ভাইরাল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mumbai, Oniba Qureshi, Qatar jail, Shareeq Qureshi, Viral Video