#দিল্লি: শুধু কি কেন্দ্র- রাজ্য সম্পর্কে উন্নতি? বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণের নেপথ্যে জোড়া কৌশলও দেখছে রাজনৈতিক মহল (Mamata Banerjee in Delhi)৷ প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আসলে এক ঢিলে আরও দুই পাখি মারলেন বলেই দিল্লি এবং বাংলার রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে৷
শিল্প বিনিয়োগের প্রশ্ন বার বারই রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করে আসছে রাজ্য বিজেপি (BJP)৷ শুধু শিল্পে বিনিয়োগ নয়, বিভিন্ন ইস্যুতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপি-র বিরোধিতার সুর ক্রমশ চড়ছে৷ এই পরিস্থিতিতে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়ে কার্যত রাজ্য বিজেপি-কেই বেশ কিছুটা বিপাকে ফেলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন: দিল্লির পরের গন্তব্য মুম্বাই, উদ্ধব-শরদের সঙ্গে দেখা করবেন মমতা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন৷ যার অর্থ দাঁড়ায়, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলেনর উদ্বোধনে আসতে সম্মত হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি৷ ফলে প্রধানমন্ত্রী যদি সত্যিই উদ্বোধনে আসেন, তাহলে রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে আর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের যৌক্তিকতা বা বিনিয়োগ টানতে রাজ্য সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সহজে প্রশ্ন তুলতে পারবে না৷
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু কেন্দ্র- রাজ্য সম্পর্কে যেন তার প্রভাব না পড়ে৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই ইতিবাচক বার্তার পর সরকারের উন্নয়নমূলক বা সামাজিক প্রকল্পের ক্ষেত্রে শুধু বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করাটাও রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে সহজ হবে না৷
আরও পড়ুন: তৃণমূলকে হারাতে সাহায্য চাইলেন শুভেন্দু, সরাসরি প্রত্যাখ্যান সিপিএম নেতার
রাজনৈতিক মহলের আর একটি ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক এবং তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আসলে কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখার কাজটাও রাজধানীর বুকে দাঁড়িয়ে সেরে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কারণ তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সন্ধি যে এখনই হওয়ার নয়, তা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেও সনিয়া গান্ধিকে মমতা সচেতন ভাবেই এড়িয়ে গেলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের৷
একদিকে প্রশাসক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সওয়াল, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বিজেপি-কে হারানোর কথাও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে৷ অন্যদিকে কংগ্রেসে ভাঙন ধরানোর রাস্তা থেকেও যে তৃণমূল সরছে না, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা৷ সবমিলিয়ে দিল্লি সফরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি, কংগ্রেসের সঙ্গে সমদূরত্ব তৈরির চেষ্টা করে এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷
যথারীতি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি এবং কংগ্রেসের নেতারা৷ বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন প্রধানমন্ত্রী আসবেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে মুখে কী সেকথা বলেছেন? আমরা তো চাই প্রধানমন্ত্রী আসুন৷ কারণ তাঁর হাতেই পশ্চিমবঙ্গের মুক্তি সম্ভব৷ প্রধানমন্ত্রীকে সামনে রেখেই যদি বিনিয়োগ আনা যায়, সেই চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷'
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কটাক্ষ, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাক্তন শিল্প মন্ত্রী অমিত মিত্র কিছুদিন আগে দাবি করেছেন যে নরেন্দ্র মোদির শিল্পনীতির ফলে শিল্প দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ আর সেই নরেন্দ্র মোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনে ডাকছেন৷ এর পরে হয়তো আমরা দেখব ভাইফোঁটা নিতেও নরেন্দ্র মোদি কালীঘাটে আসছেন৷'
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Banerjee, Narendra Modi