#শ্রীনগর: একটার পর একটা লকডাউন । সেই ধাক্কাটা নিতে পারেননি তিনি । প্রায় ডুবেই গিয়েছে তাঁর ব্যবসা । ফলে লোনে জর্জরিত হয়ে কিডনি বিক্রির মতো মারাত্মক সিদ্ধান্ত নিলেন এক কাশ্মীরি যুবক । সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনও দিলেন সেই মর্মে ।
গোটা দেশে শুধু করোনা প্যানডেমিকের জন্য লকডাউন হলেও, কাশ্মীরের জন্য কিন্তু বিষয়টা একটু আলাদা । সেখানে পরপর দু’বার লকডাউন হয়েছে । প্রথমবার হল ২০১৯-এর অগাস্ট মাসে । সে সময় কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার । সে সময় মাস খানেক ধরে চলেছিল সেই লকডাউন । এরপর ২০২০ সাল পড়তে না পড়তেই শুরু হয়ে গেল আরও এক লকডাউন । সেটা অবশ্য অতিমারী ঠেকাতে ।
পরপর দুই লকডাউনের ধাক্কা সামলাতে পারেননি কুলঘাম জেলার কোয়াজিগুন্দের নাসসু গ্রামের বাসিন্দা সবজার আহমেদ খান । পেশায় তিনি ছিলেন গাড়ির ডিলার, পাশাপাশি একজন সরকারি কন্ট্রাক্টর-ও । কিন্তু লকডাউনে ব্যবসা প্রায় লাটে ওঠে । ব্যবসা বাঁচাতে ৯১ লাখ টাকা প্রয়োজন তাঁর । যার মধ্যে ব্যাঙ্ক থেকে ৬১ লাখ আর অন্যান্যদের থেকে চেয়েচিন্তে ৩০ লাখ টাকা জোগাড় করেছেন তিনি । কিন্তু পাওনাদারদের তাগিদায় বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ হয়ে গিয়েছে আহমেদের ।
খানই বাড়ির একমাত্র রোজগেরে সদস্য । গত বছরই বিয়ে হয়েছে তাঁর । বৃদ্ধ বাবা-মা তাঁদের সঙ্গেই থাকেন । আর আছে এক ভাই ও এক বোন । উপায় না দেখে সম্প্রতি মজদুরের কাজ নিয়েছে আহমেদের ভাই । কিন্তু তাতেও ৬ দনের পেট ভরানো মুশকিল হয়ে যাচ্ছে । এমতাবস্থায় কিডনি বেচার সিদ্ধান্ত নেন আহমেদ । বাড়িতেও সব কথা খুলে জানান । প্রথমে পরিবারের সদস্যরা রাজি না থাকলেও শেষে খানের জোরাজুরিতে এক প্রকার রাজি হয়ে যান এই প্রস্তাবে । তারপরেই স্থানীয় কাশ্মীরি একটি সংবাদপত্রে নিজের কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন সবজার ।
আহমেদ বলেন, কিডনি বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ যে কথা তিনি জানেন । কিন্তু আপাতত কোনও উপায় না পেয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি । সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন বেরনোর পর অনেক ইচ্ছুক ব্যক্তিই তাঁকে ফোন করেছে বলেও জানান খান । এখনও পর্যন্ত একজন ২০ লাখ টাকা, অন্য একজন ২৫ লাখ টাকা অফার করেছেন ।