হোম /খবর /দেশ /
অন্য দেশের তুলনায় ভারতে হতে পারে পজিটিভ গ্রোথ, করোনার পরেও আসতে পারে সুসময়

অন্য দেশের তুলনায় ভারতে হতে পারে পজিটিভ গ্রোথ, করোনার পরেও আসতে পারে সুসময়

ফলে ব্যবসা বাণিজ্য যেমন বিপর্যস্ত তেমনি চাকুরিজীবীদেরও চিন্তার কারণ উপস্থিত। ইতিমধ্যেই কর্মীদের ২৫% - ৫০% পর্যন্ত বেতন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক সংস্থা। এবং এই অবস্থার যদি শীঘ্রই কোনও পরিবর্তন না হয় তাহলে কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

আরও পড়ুন...
  • Share this:

#কলকাতা: লকডাউনের তৃতীয় পর্যায় প্রায় শেষ হতে চলেছে। এরপরেও বাড়বে লকডাউনের সময়সীমা৷ তবে সেটা কতদিন, তা জানা যায়নি৷ পরবর্তী সময়ে ভারতীয় অর্থনীতির কী হাল হবে?  এই সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন দেশের নাগরিকরা। ইতিমধ্যেই বহু  মানুষ বেকার হয়ে পড়েছেন বা কাজ হারানোর আতঙ্কে ভুগছেন। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে বন্ধ করতে হয়েছে আমদানি ও রপ্তানি। বন্ধ হয়েছে উৎপাদনও। ফলে ব্যবসা বাণিজ্য যেমন বিপর্যস্ত তেমনি চাকুরিজীবীদেরও চিন্তার কারণ উপস্থিত। ইতিমধ্যেই কর্মীদের ২৫% - ৫০% পর্যন্ত বেতন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক সংস্থা। এবং এই অবস্থার যদি শীঘ্রই কোনও পরিবর্তন না হয় তাহলে কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও আশার আলো শোনাচ্ছেন অনেকেই। যেমন শহরের  ওয়েলথ আর্কিটেক্ট ও অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা সুরজিৎ কালার মতে,  '  কিছু ইন্ডাস্ট্রির জন্য সুখবর এই যে চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসার উন্নতির আশাও যেমন থাকে তেমনি থাকে চাকরি বাড়ার প্রতিশ্রুতি। যেমন সরকারি চাকুরীজীবিদের জন্য আশঙ্কার কারণ নেই বললেই চলে তেমনি প্রাইভেট সেক্টরেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। যেহেতু এই সময়টি একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি তাই খুব সহজেই বোঝা যায় যে ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলির জন্য এটি একটি আশ্বাসের সময়। বিশেষত যারা হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন উৎপাদনে এগিয়ে এসেছে। এই সমস্ত ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা যারা ওষুধের চাহিদা মেটাতে উদ্যত তারা খুব একটা অসুবিধায় পড়বে না। '

ভারতের  আই টি সেক্টরের  ক্ষেত্রেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন সুরজিৎ কালা। তাঁর দাবি, ' এখনও পর্যন্ত যেহেতু এই আই টি সেক্টর  বেশিরভাগটাই ই-কমার্সের এর ওপর নির্ভরশীল, তাই এক্ষেত্রেও খুব একটা অসুবিধায় পড়তে হবে না বলেই আশা করা যায়। এমনকি ই-কমার্স সংস্থা গুলির চাহিদা এখন ক্রমবর্ধমান, ফলে আমাজনের মতো বৃহৎ সংস্থা নতুন করে প্রায় ৭৫,০০০ নতুন কর্মী নিয়োগ করছে। তাই এই ক্ষেত্রেও বেশ কিছুটা আশ্বস্ত হওয়ার আভাস দেখা যাচ্ছে। এর থেকে সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে কিছু কিছু ইন্ডাস্ট্রি কিন্তু সম্পূর্ণ নিরাশ করবে না। হয়তো আশানুরূপ লাভ নাও হতে পারে তবে একদমই স্থির হয়ে যাবে না। '

যে সব ইন্ডাস্ট্রির জন্য অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সুরজিৎ কালা।

'

"লো-রিস্ক” বা কম ঝুঁকিপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রি:

এডুকেশন

দুগ্ধজাত পণ্য

এফ এম সি জি

স্বাস্থ্য

খাদ্য ও খাদ্য দ্রব্য

কৃষিজাত দ্রব্য

ইন্সুরেন্স

ইউটিলিটি, ইত্যাদি

"মিডিয়াম-রিস্ক" বা মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রি:

অটোমোবাইল

নির্মাণশিল্প

কেমিকাল বা রাসায়নিক শিল্প

রিয়েল এস্টেট

লজিস্টিকস

ভোগ্যপণ্য

খনন শিল্প

ব্যাঙ্কিং

ফুটওয়্যার, ইত্যাদি

"হাই-রিস্ক" বা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রি:

এভিয়েশন

ভ্রমণ

সিফুড ও পোল্ট্রি

শিপিং

রিটেল

রত্ন এবং গহনা, ইত্যাদি

আপনার সংস্থা যদি কোনো রিস্ক বা ঝুঁকির আওতায় পরে তাহলে এই পরিস্থিতিতে কর্মচারী বা মালিক দুই পক্ষ থেকেই কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। দুই পক্ষই এক অনিশ্চিত সমস্যার সম্মুখীন, তাই এখন দরকার সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাব নিয়ে "কম্প্রোমাইস" -এর আশ্রয় নেওয়া। কর্মীদের জন্য এটাই মন্দের ভাল হবে, কারণ  ছাঁটাইয়ের থেকে "কম্প্রোমাইস" বাঞ্ছনীয়। একটি শিল্প নির্ভর করে সেই শিল্প ভিত্তিক সংস্থা গুলির ওপর, তেমনি একটি সংস্থা নির্ভর করে তার কর্মীদের ওপর। আবার কর্মীরা নির্ভর করেন তাদের সংস্থার ওপর। তাই এই সময়ে দরকার 'নিড" বা প্রয়োজন ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়া। দুই তরফ থেকেই এখন শান্ত হয়ে আলোচনা করতে হবে যে ঠিক কত টাকা বেতন হিসেবে না দিলেই নয়, বা না নিলেই নয়। অত্যন্ত সততার সাথে একে অপরকে বুঝতে হবে এই প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে।

মনে রাখতে হবে যে এখন সময় আপনার একান্ত "নিড" যেগুলো, শুধুমাত্র সেগুলোকেই বেছে নেওয়া। "নিড' ও "ওয়ান্ট" এর যে সুক্ষ বিভেদ আছে এখন তা উপেক্ষা করে শুধুমাত্র লক্ষ্য করতে হবে আপনার "নিড" গুলির ওপর। আর তার ওপর ভিত্তি করেই দেখতে হবে যে আপনার ঠিক কত টাকা প্রতি মাসে দরকার। এখন দরকার একটি সুনির্দিষ্ট খরচের পরিকল্পনা করার আর যে কোনও ব্যক্তির জন্য দরকার এই পরিকাঠামোতেই চলা। ঠিক যতটা প্রয়োজনীয় খরচ তার থেকে একটুও বেশি খরচ না করা।

এই প্রতিকূল পরিবেশেও যেটা সব থেকে সুখবর সেটা হলো যে আই এম এফ -এর তথ্য অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী যত গুলি দেশ করোনা ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত তার মধ্যে খুব কম সংখ্যক দেশেরই একটি পজিটিভ গ্রোথ হতে চলেছে; তার মধ্যে ভারতবর্ষ অন্যতম। যদিও যেই ৬% গ্রোথ রেট প্রত্যাশিত ছিল তা হবে না, তাও আশা করা যাচ্ছে ১.৯ জি ডি পি গ্রোথ হতে চলেছে। যেখানে অধিকাংশ দেশগুলিরই নেগেটিভ গ্রোথ হতে চলেছে। অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে যে কিছুদিন যদি একটু পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলা যায় তাহলে ভারতবর্ষের জন্য একটি সুসময় আস্তে চলেছে।'

Published by:Pooja Basu
First published:

Tags: Coronavirus, COVID19, Lockdown