#লাদাখ: লাদাখে ভারত এবং চিনের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হলেও এতদিন গোলাগুলি বিনিময় হয়নি৷ কিন্তু সবথেকে খারাপ পরিস্থিতির কথা ভেবে এবার নিজেদের তৈরি রাখছে দুই দেশই৷ একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু' পাশেই ভারত এবং চিনের বাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র মজুত করতে শুরু করেছে৷ তার মধ্যে কামান থেকে শুরু করে সামরিক বাহন, সবই রয়েছে৷
প্রায় ২৫ দিন ধরে লাদাখে সংঘাতের আবহে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দু' পাশে অবস্থান বজায় রেখেছে চিন এবং ভারতের বাহিনী৷ দুই দেশই অবশ্য কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালিয়ে বিষয়স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, প্রতৃির নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করছে৷ তার মধ্যেই সামরিকভাবে প্রস্তুত থাকতে চাইছে উভয়পক্ষই৷
তবে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র মজুত করার কাজটা চিনই প্রথম শুরু করেছে বলে খবর৷ নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে নিজেদের ঘাঁটিতেই প্রচুর সংখ্যক কামান, গোলা বারুদ সহ সামরিক যানবাহন আনতে শুরু করে তারা৷ এর পর একই পথে হেঁটেছে ভারতও৷ ওই অঞ্চলে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার পাশাপাশি চিনা বাহিনীর মতোই বিপুল সংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র মজুত করেছে ভারতও৷ তবে ভারতের তরফে করে দেওয়া হয়েছে, লাদাখের প্যাংগং সো লেক, গালওয়ান উপত্যকা বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অন্যান্য এলাকাগুলিতে স্থিতাবস্থাই বজায় রাখা হবে৷ এর পাশাপাশি ভারতীয় বায়ুসেনাও আকাশপথে ওই এলাকার উপরে সমানে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে৷
এ মাসের শুরুতেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চিনের বেশ কয়েকজন সেনা ভারতের দিকে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ৷ এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারতীয় বাহিনী৷ এলাকার শান্তি বজায় রাখতে অবিলম্বে ওই এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য চিনা সামরিক বাহিনীর কাছে দাবি জানানো হয়৷ এর পর থেকেই উত্তপ্ত রয়েছে ওই এলাকার পরিস্থিতি৷ গত ৫ মে চিন এবং ভারতীয় বাহিনীর মধ্যে একপ্রস্ত হাতাহাতি এবং পাথর ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটেছিল৷
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চিনা বাহিনীর তৎপরতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে৷ ওই এলাকায় অন্তত ২৫০০ চিনা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলেও খবর৷ এ সবই ভারতের উপরে চাপ বাড়ানোর জন্য চিনের কৌশল বলে মনে করছে নয়াদিল্লি৷ ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক শীর্ষ কর্তাও জানিয়েছেন, 'চিনের এই কৌশল সম্পর্কে আমরা অবগত৷ কোনও অবস্থাতেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থার দাবি থেকে সরে আসা হবে না৷'
ভারতের দিকে প্যাংগং সো লেক এবং গালওয়ান উপত্যকায় ডাবরুক-শায়ক-দৌলত বেগ ওল্ডি পর্যন্ত দুটো নির্মীয়মাণ রাস্তা নিয়ে চিনের মূল আপত্তি৷ যা অগ্রাহ্য করেই কাজ চালিয়ে গিয়েছে ভারত৷ এই রাস্তাগুলি তৈরি হয়ে গেলে দুর্গম ওই এলাকাগুলিতে পৌঁছনো ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে অনেকটাই সহজ হবে৷ আর সেটাই চিনের মাথাব্যথার মূল কারণ৷
ইতিমধ্যেই লাদাখের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অবশ্য আশা প্রকাশ করে বলেছেন, কথা বলেই চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হবে৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।