#মুম্বই: প্রায় ১২৫ বছরের ব্যবসা। থুড়ি! ট্র্যাডিশন বলাটাই শ্রেয়। ছুটছে মানুষ, ঘুরছে চাকার শহরে সময় কোথায়? মুম্বইয়ের ব্যস্ত জীবনে মানুষের খাওয়া-দাওয়ার চিন্তা তারা অনেকটাই কমিয়ে এসেছেন এত বছর ধরে। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীতে তাদের গুরুত্ব অপরিসীম। মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন যেমন লাইফলাইন, তেমনই এরাও আরব সাগরের পাশের শহরের হৃদপিণ্ড।
ওরা ডাব্বাওয়ালা। কেউ বলেন টিফিনওয়ালা। এদের নিয়ে যেমন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টে আলাদা কেস স্টাডি হয়েছে, তেমনই হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলেও লজিস্টিক সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে এদের নিয়ে গবেষণা চলেছে। নিয়মিত ৪,৫০০ থেকে ৫০০০ ডাব্বাওয়ালা রোজ কাজ করেন মুম্বইতে। খদ্দেরের সংখ্যা ১,৮০,০০০ থেকে ২,০০,০০০। কিন্তু করোনা উত্তর যুগে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতোই বিরাট ধাক্কা খেয়েছে তাদের ব্যবসা। ইউনিয়নের তরফ থেকে মাসে ৫০০০ টাকার গ্যারান্টি থাকলেও বিগত কয়েক মাস ধরে তাও বন্ধ। তাই নতুন ভাবনা চিন্তা করছে মুম্বই টিফিন বক্স সাপ্লাইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। মানুষকে টিফিন পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি চাষের জমি থেকে টাটকা আনাজ মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দেবেন তারা। ডাব্বাওয়ালারা প্রধানত কৃষক যাদের গ্রামে নিজস্ব চাষ করার জমি আছে।
পশ্চিম মহারাষ্ট্রের বিরাট অঞ্চল জুড়ে চাষাবাদ হয়। কিন্তু সাইক্লোন নিসর্গ এবং নভেম্বরে বৃষ্টি ফসলের প্রচুর ক্ষতি করে দিয়েছে। অতিমারি পরিস্থিতিতে মানুষ বাজার যেতেও ভয় পাচ্ছেন। তাই যদি তাদের ঘরের সামনে আনাজ পৌঁছে দেওয়া যায়, তাতে মানুষের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই কিছু রোজগার হবে ডাব্বাওয়ালাদের। মাঝে ফোঁড়েদের উৎপাত রয়েছে। এই ব্যাপারটা বন্ধ করার জন্য অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে। এই মুহূর্তে রোজ ৪৫০ জন ডাব্বাওয়ালা কাজ করছেন। জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসেও সংখ্যাটা ছিল পাঁচ হাজারের কাছে। আগে এক এক জন দিনে যেখানে কুড়ি থেকে পঁচিশটি লাঞ্চ সাপ্লাই করতেন, সেই সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছে চার থেকে পাঁচ।
অক্টোবর মাসে তাদের ট্রেনে ওঠার অনুমতি দেওয়া হলেও আগের মত সাড়া মেলেনি। অনেক জায়গায় তাদের ঢুকতে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই এই বিকল্প ভাবনা। মহারাষ্ট্র সরকার অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে তারা পাশে রয়েছে। মুম্বইয়ের আত্মার সঙ্গে মিশে যাওয়া ডাব্বাওয়ালারা আশা ছাড়তে নারাজ। এই শহর যখন এত বছর তাদের পেট চালিয়েছে, সেই শহর আবার তাদের আশ্রয় দেবে। মায়ানগরীর ওপর আস্থা হারাতে নারাজ ডাব্বাওয়ালারা। ভ্যাকসিন এসে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করছেন। জীবন স্বাভাবিক হলে আবার কবে বলতে পারবেন "মুম্বই মেরি জান",সেই দিনটার অপেক্ষায় ডাব্বাওয়ালারা।
Written By Rohan Roy Chowdhury
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mumbai