#নয়াদিল্লি: সোমবার সাত দফার আলোচনাও কার্যত সুরাহার পথ দেখাতে পারেনি। সরকার যতক্ষণ না নয়া কৃষি বিল প্রত্যাহার করে নিচ্ছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত দিল্লির নিকটবর্তী সিংঘু সীমান্তে প্রতিবাদ জারি থাকবে- সাফ জানিয়ে দিয়েছেন হরিয়ানা, পঞ্জাব আর দেশের উত্তর প্রদেশের কিছু অংশের জমায়েত হওয়া কৃষকেরা। এরই মাঝে রাজধানী এবং আশেপাশের এলাকার তাপমাত্রার পারদ নেমে গিয়েছে চড়চড় করে। পরিস্থিতিকে আরও সঙ্গীন করে তুলতে সঙ্গী হয়েছে প্রবল বর্ষণও। তাঁবুর ফুটো দিয়ে কনকনে ঠাণ্ডা জল নেমে এসেছে গায়ে, প্রতিবাদভূমিতেও জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কিন্তু কৃষকদের তাঁদের দাবি থেকে বিচ্যুত করা যায়নি তিলমাত্রও। এ হেন পরিস্থিতিতেই তাঁদের উষ্ণতা জোগাতে কাশ্মীর থেকে এল কাংড়ির উপহার।
কাংড়ি এক ধরনের পোড়া মাটির পাত্র। এর বাইরের দিকটা মুড়ে দেওয়া হয় বেত দিয়ে। থাকে বেতের হাতলও। সব মিলিয়ে দেখতে হয় একটা সাজির মতো। তার মধ্যে কাঠকয়লা দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিব্যি সেঁক নেওয়া যায়, ঠাণ্ডায় কিছুটা হলেও গরম রাখা যায় নিজেকে। কাশ্মীরে এই কাংড়ির ব্যবহার চলে আসছে ঐতিহ্য-পরম্পরায়। এ বার সে-ই কাংড়িই হাজির হল আন্দোলনরত কৃষকদের সাহায্য করার জন্য।
জানা গিয়েছে যে জম্মু এবং কাশ্মীরের হস্তশিল্প বিক্রি করেন, দিল্লির এমন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই কাংড়ি জোগান দিয়েছেন সিংঘু সীমান্তে জমায়েত হওয়া আন্দোলনরত কৃষকদের। কাশ্মীরের যে দোকানদারের কাছ থেকে এসেছে ওই কাংড়ির সম্ভার, তিনি মুখ খুলেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। জানিয়েছেন- আচমকা অনেকগুলো কাংড়ির বরাত পেয়ে তিনি খুবই অবাক হয়েছিলেন। তা ছাড়া কাংড়ি তিনি বিক্রি করেনও না। তাই জানতে চান সংস্থার কাছে- দরকারটা ঠিক কী রকমের! এর পর যখনই তিনি জানতে পারেন যে এই কাংড়িগুলো দেওয়া হবে আন্দোলনরত কৃষকদের, তিনি আর দেরি করেননি। নিজের লোক পাঠিয়ে কাশ্মীরের নানা প্রান্ত থেকে জোগাড় করে আনেন বরাত-মাফিক কাংড়ি।
এর পরের ধাপে দেখা দেয় দ্বিতীয় সমস্যা। কাংড়ি না হয় জোগাড় হল, কিন্তু সেটা পাঠানো হবে কী করে? কেন না, শীতে বরফ পড়ে রাস্তা আটকে যাচ্ছে বলে কাশ্মীর থেকে বাস পঞ্জাবের মাধবপুর ঘুরে দিল্লিতে পৌঁছচ্ছে। তাতে সময়ও লাগছে অনেক বেশি। অনেক খুঁজেপেতে শেষ পর্যন্ত ওই দোকানদার এমন একটা বাসের বন্দোবস্ত করতে পারেন যা টানা কাশ্মীর থেকে দিল্লি যাবে!
খবর বলছে, এই ভাবে আপাতত ৫০টি কাংড়ি পাঠানো হয়েছে বয়স্ক কৃষকদের জন্য। তাঁরা স্বচ্ছন্দবোধ করলে আরও জোগান দেওয়া হবে।