লালুপ্রসাদ যাদবের সেই বিখ্যাত উক্তিটা মনে পড়ে যাচ্ছে । এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকারের ফাঁকে লালুজি বলেছিলেন, ‘ইয়ে বিহার ভারতীয় রাজনীতি কা ল্যাবরেটরি হ্যায়’। আজ বহুবছর পর সত্যিই সেই ল্যাবরেটরির পরীক্ষা নিরীক্ষার দিকেই তাকিয়ে গোটা ভারত । এখনও যা ইঙ্গিত, করোনা লকডাউন পর্বে প্রথম ভোট হতে চলেছে বিহারেই। যেখানে ভোটের চেয়েও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোটের আঙ্গিক। কীভাবে হবে ভোট? তার চেয়েও বড় কথা করোনা লকডাউন পর্বে কীভাবে হবে প্রচার? কিভাবে মানুষের কাছে পৌঁছবে রাজনৈতিক দলগুলি? তা নিয়ে যখন দ্বিধা–দ্বন্দ্বে জেরবার সব পক্ষ, তখনই দেখাচ্ছে বিহার।
আর ভোটের প্রাথমিক পর্বে এখন ভার্চুয়াল প্রচারটাই বড় অস্ত্র বিহারের সব রাজনৈতিক দলের। বিহারের ভোটের লক্ষ্যে অমিত শাহ আগামী ৯ জুন শুরু করছেন ভার্চুয়াল র্যালি। অন্যদিকে ৫ জুন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও শুরু করবেন ভার্চুয়াল প্রচার ।
কী এই ভার্চুয়াল প্রচার?
প্রাথমিকভাবে দলীয় কর্মকর্তাদের ছোট ছোট জমায়েতকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত করা। মূল নেতার ভাষণ জায়েন্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া ।নেতাদের ভাষণ টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করা। প্রত্যেক বিধানসভা ধরে ধরে আলাদা ফেসবুক পেজ, হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে ‘জিও ট্রপিক্যাল লোকেশন’ ঠিক করে সেই বিধানসভা কেন্দ্রিক প্রচার। এই মোটের ওপর ভার্চুয়াল প্রচারের রূপরেখা। এর সঙ্গে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া তো রয়েইছে । তবে ভার্চুয়াল প্রচারের পুরো দিকটাই ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল নয়। এর আরও একটা দিক হল ছোট ছোট, গ্রুপ বা সভা। বড় নেতা যা প্রচার করছেন, তা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মানুষের কাছে আলাপ আলোচনায় নিয়ে যাওয়া। তাই বিহারে এখন ছোট, বড় সব দল মানুষের কাছে প্রচারের আগে কর্মীদের ট্রেনিং দিতে ব্যস্ত । বিজেপি, জেডিইউ, আরজেডি, লোকজনশক্তি পার্টি সবাই ব্যস্ত কর্মীদের ট্রেনিংয়ে।
এই বোধহয় প্রথম কোন বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে যেখানে লালুপ্রসাদ যাদব সশরীরে উপস্থিত থাকছেন না । তবে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে এখন ব্যাপক ব্যস্ত তাঁর দল ও পরিবার। ভার্চুয়াল প্রচারের সাহায্য নিয়ে লালুপ্রসাদের ভিডিও বার্তা আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে দলে।
সবদিক থেকে প্রযুক্তি ব্যবহারের নিরিখে ভোট ম্যানেজমেন্ট কী হয় তা দেখাতে বিহারই পথপ্রদর্শক। ভারতীয় ভোট রাজনীতিতে এ এক সত্যিই বড় ‘টেস্ট’।
যদিও পিছিয়ে নেই বাংলাও। বিহারের পরই দেশের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হবে পশ্চিমবঙ্গে। তাই রাজ্যের শাসক দলের স্যোশাল মিডিয়ার তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। জেলা নেতৃত্ব থেকে সব বিধানসভা কেন্দ্র, সংগঠনের যাবতীয় বৈঠক এখন ভার্চুয়ালেই। এমনকি আগামী পাঁচ তারিখ বিধায়ক, সাংসদ, জেলার নেতাদের নিয়ে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মেই রিভিউ মিটিং সারবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোটের ওপর বলা যায়, নেট দুনিয়ায় সমন্বয় গড়ে তুলতে তৎপর এই রাজ্যেরও শাসক থেকে বিরোধী, সব মহল ।
Sourav Guha
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bihar, Biharstatelection, Onlinepromotion