#নয়াদিল্লি: গরুকে মাতা রূপে পুজোর রীতি নতুন নয়। তবে গরু যে একাই কোনও পরীক্ষার সিলেবাস হয়ে দাঁড়াতে পারে, তা কেউ কখনও কল্পনা করেছেন? সম্ভবত উত্তরটা অনেকের কাছেই না। আবার অনেকেই উড়িয়ে দিচ্ছেন হেসেই। কিন্তু আর হাশির দিন নেই। কারণ, মঙ্গলবারই কেন্দ্রের সরকার ন্যাশনাল লেভেল 'কাউ' সায়েন্স পরীক্ষার কথা ঘোষণা করেছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি পরিচালিত হবে পরীক্ষা। যে কোনও বয়সের, পুরুষ এবং মহিলা পরীক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় এবং বিনামূল্যে অংশগ্রহণ করতে পারবেন সেখানে।
ইতিমধ্যেই 'Annual Cow Exam'র সিলেবাস বা পাঠ্যক্রম তৈরি হয়েছে। সেই সিলেবাসের বিস্তারিত বিবরণ যে কারও চোখ কপালে তুলতে বেশই সময় নেবে না। কি রয়েছে সিলেবাসে? জানা গিয়েছে, গো-মাংস খাওয়াকে সেখানে 'bad karma' বলে বর্ণনা করা হয়েছে। অর্থাৎ গরুর মাংস খাওয়া খারাপ কাজ বা আরও স্পষ্ট করে বললে মহাপাপ। the Quint-র রিপোর্ট থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ৫৪ পাতার সিলেবাসের ছত্রে ছত্রে রয়েছে বিতর্কিত বিষয়। যেগুলির অনেকক্ষেত্রেই কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যেমন, পাঠ্যক্রমে রয়েছে, 'দেশীয় গরু কোনও জার্সি গরুর থেকে অনেক বেশই ভাল। দেশি গরুর দুধ হয় হলুদ বা সোনালি, কারণ তাতে সোনা থাকে।' একইসঙ্গে রয়েছে, 'যে সব শিশুরা ছোট থেকে জার্সি গরু বা দেশি গরু বাদে অন্য কোনও গরুর দুধ খায়, তারা অটিজম, ডায়াবেটিসের মতো নানা রোগের শিকার হয়। এমনকি যে কোনও সময় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে তাদের।'
রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ (RKA) চেয়ারম্যান বল্লভভাই কাথিরিয়া জানিয়েছেন, "গো-মাতার পবিত্রতা এবং উপকারিতা বিষয়ে সাধারণ মানুষ এবং পড়ুয়াদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে প্রতি বছর এই পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।" সিলেবাসে রয়েছে, দেশি গরু অন্য যে কোনও প্রজাতির গরুর তুলনায় বুদ্ধিমান। আর ঠিক এই কারণেই তারা নাকি কোনও নোংরা জায়গায় বসে না। এমনকি দেশীয় গরু যে কোনও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতেও অনেক বেশই সক্ষম। গোটা পাঠ্যক্রম জুড়ে গোবর এবং গো-মূত্রের উপকারিতা এবং পবিত্র ব্যবহার নিয়েও বহু তথ্য রয়েছে। গো-মূত্র পরিপাকতন্ত্র, চোখের রোগ, মূত্র থলি, শিরদাঁড়া, লিভার-সহ একাধিক শারীরিক সমস্যার সমাধানে অব্যর্থ কাজ করে।
The Homi Bhabha Centre for Science Education-র অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অনিকেত শুলে এ প্রসঙ্গে the Quint-কে বলেন, "পড়ুয়ারা বহু পড়াশুনা করে পরীক্ষা দেয় ভাল ফলাফলের জন্য। এ ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা পড়াশুনা করলে বহু ভুল তথ্য জানবেন, যার জন্য তাঁদের ভুগতে হবে।" শুলে বলেন, "গো-মূত্র গরুর শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া বর্জ্য পদার্থ। সে যা হজম করতে পারে না, তা মূত্রের আঁকারে নির্গত হয়। ফলে গো-মূত্রের কোনও ঔষধি গুণ নেই।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।