#নয়াদিল্লি: বাড়ছে ভূগর্ভস্থ জলের অপচয়। যার ফলে আর কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশে জল সঙ্কট শুরু হতে চলেছে। সেই তালিকায় রয়েছে আমাদের দেশও। এদেশের চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু-সহ একাধিক শহর এবং রাজ্য ইতিমধ্যেই জল সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। ফলে জল বাঁচানো অত্যন্ত প্রয়োজন। এবং এই নিয়ে সকলের মধ্যে সচেতনতাও একইসঙ্গে দরকার।
জলের অপর নাম জীবন। এমন কথা বইয়ের পাতায় পড়ে থাকলেও বাস্তব জীবনে আমরা অনেকেই এই নিয়ে সে ভাবে সচেতন নই। কিন্তু জল সঙ্কটের মুখোমুখি যাঁরা হয়েছেন তাঁরা জানেন জল কী ভাবে আমাদের জীবন রক্ষা করে। সামান্য খাবার জলের জন্যও যখন হাহাকার শুরু হয়, তখন জলের মূল্য অনেকাংশেই বোঝা যায়। হাজার হাজার টাকা দিয়েও কিন্তু জল কিনে চাহিদা পূরণ সম্ভব হয় না। ফলে প্রত্যেককে এই নিয়ে সচেতন হতে হবে, বাড়ির ছোটোদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে এবং জল বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।
জল বাঁচানোর জন্য প্রথমেই আমাদের অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। এবং মাথায় রাখতে হবে কোনও একদিন নয়, প্রতি দিন জল সঞ্চয় প্রয়োজন।
জল বাঁচাতে এই কয়েকটি নিয়মও মেনে চলা যেতে পারে-
১) ডায়েটের মাধ্যমে জল সঞ্চয়
লকডাউন এবং করোনা পরিস্থিতি শিখিয়েছে কী ভাবে বাইরের খাবার না পেলেও সেই সব কিছু বাড়িতে বানিয়ে খাওয়া যায়। এই পরিস্থিতি শিখিয়েছে কী ভাবে বাড়িতে থাকা যায়। পাশাপাশি এই পরিস্থিতিই শিখিয়েছে কী ভাবে অভ্যাস পালটানো যায়। ফলে জল বাঁচাতেও আমাদের বেশ কিছু অভ্যাস পরিবর্তন করা প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যের কথা ও জল বাঁচানোর কথা মাথায় রেখে সুষম ডায়েট মেনে চলা যেতে পারে। সবজি বা মাছ-মাংসে প্রচুর জল লাগে। ফলে বেশি করে দানা শস্য খাওয়া যেতে পারে এবং যে সবজি চাষে কম জল লাগে সেই সবজি খাওয়া যেতে পারে। এসবের সঙ্গেই খাবার তৈরি করতেও নির্দিষ্ট পরিমাণ জল ব্যবহার করলে ভালো।
২) জল বাঁচাতে জিনিস খরচা কম করতে হবে
জিনস, শাড়ি বা যে কোনও জামা কাপড় তৈরি করতেই কিন্তু জলের প্রয়োজন হয়। বাড়ি বসে আমরা হয়তো অনলাইনে সহজেই সেই সব পেয়ে যাই কিন্তু তাতে জল লাগে লিটার লিটার। যেহেতু আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস কিনে থাকি, তাই চাহিদাও থাকে ও জিনিস তৈরিও হয়। এখানেই একটু পরিবর্তন আনা যেতে পারে। যদি অপ্রয়োজনে জামা-কাপড় বা কোনও জিনিস না কেনা হয়, তা হলেও কিন্তু জল বাঁচানো সম্ভব হয়।
৩) ইলেক্ট্রিক বাঁচানোর মাধ্যমে জল বাঁচানো
আমরা সকলেই জানি বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে জলের প্রয়োজন হয়। অকারণে বিদ্যুৎ খরচা অনেকের বাড়িতেই হয়। হয়তো রান্না ঘরে কাজ নেই কিন্তু লাইট জ্বলছে। বা ফোনে চার্জ দেওয়া হয়ে গিয়েছে, কিন্তু তাও সুইচ বন্ধ করা হয়নি। এই ছোট ছোট অভ্যাসেই পরিবর্তন আনলে জল বাঁচানো যেতে পারে। অপ্রয়োজনে লাইট না জ্বালা। দিনে কোনও একটা সময়ে লাইট না জ্বালিয়ে সূর্যের আলো বাড়িতে প্রবেশ করানো ও এই ধরনের আরও কিছু করা যেতে পারে।
৪) জামা-কাপড় কাচা ও জল সঞ্চয়
অনেকেরই অভ্যাস থাকে প্রতি দিন অল্প অল্প করে জামাকাপড় কাচা। এতে বেশি জল খরচা হয়। কারণ প্রতিবার কয়েক লিটার জল লাগে কাচতে, ধুতে। এই সব জামা-কাপড় যদি একসঙ্গে কাচা যায়, তা হলে এই জল বাঁচতে পারে। এর জন্য ওয়াশিং মেশিনের পাশেই একটি বাস্কেট রেখে তাতে এক সপ্তাহ বা একসঙ্গে চার-পাঁচদিনের জামা কাপড় জমিয়ে কাচা যেতে পারে।
৫) ৫ মিনিটে স্নান
জল বাঁচানোর কয়েকটি উপায়ের মধ্যে এটিও অন্যতম। সাধারণত, স্নান করতে অনেকেরই অনেকটা সময় লাগে। তাতে লিটার লিটার জল খরচাও হয়। এই স্নানের সময় যদি বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে জল অপচয় কম হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যদি পাঁচ মিনিটে স্নান সেরে নেওয়ার কথা মাথায় রাখা হয়, তা হলে মন্দ হয় না।
প্রতি দিনের এই অভ্যাসগুলি পাল্টালে জল বাঁচবে, জীবন বাঁচবে। বিশদে জানতে ক্লিক করুন www.news18.com/mission-paani।