#নয়াদিল্লি: দেশের প্রায় সব রাজ্যেই উর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ। হু-হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। ফিরে আসছে গত বছরের স্মৃতি। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনার প্রথম স্ট্রেইনের থেকে দ্বিতীয় স্ট্রেইন আরও অনেক বেশি সংক্রামক। যার ফলে সংক্রমণের মাত্রাও আগের তুলনায় অনেক বেশি।
এই পরিস্থিতিতে আমার বা আপনার আশেপাশে এমন অনেকে রয়েছে যাদের পরিবারে সকলেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ফলে কারও পক্ষেই রান্না করে খাওয়া সম্ভব নয়। এই অবস্থায় কেউ বাড়িতে এসে রান্নাও করে দিয়ে যাচ্ছে না ফলে খাবার নিয়ে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু দিল্লিতে এমন যারা রয়েছেন তাদের আর চিন্তার কারণ নেই। কারণ তাদের বাড়িতে ঘর কা খানা পৌঁছে দিচ্ছে কয়েকজন যুবক। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে সাহায্য।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা হলে বাইরের খাবার খেতে না, এতে পেটের সমস্যা হতে পারে। কিন্তু যাদের বাড়িতে সকলেই অসুস্থ তাদের ক্ষেত্রে বাড়িতে রান্না করে খাওয়া অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না। ফলে খাওয়া নিয়ে বিরাট সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই সব মানুষের পাশে দাঁড়াতেই দিল্লির ইয়ুথ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি অসরকারি সংগঠনের তরফে চালু করা হয়েছে ঘর কা খানা, হামারে ঘর সে আপকে ঘর তক। অর্থাৎ ঘরের খাবার, আমার বাড়ি থেকে আপনার বাড়ি পর্যন্ত।
২৭ জনের এই টিমের প্রেসিডেন্ট রাঘব পাল মণ্ডল। তিনি IANS-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এবিষয়ে জানান, গত কয়েকদিনে আমরা দেখি, এমন অনেক পরিবার আছে যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং রান্না করার পরিস্থিতিতে নেই। ক্রমাগত এমন পরিবারের সংখ্যা বাড়তে দেখায় আমরা সিদ্ধান্ত নিই, যারা এমন আক্রান্ত হবে, তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেব আমরা, যতদিন না তারা এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়।
এই খাবারের জন্য এই অসরকারি সংস্থা কারও থেকে কোনও টাকা নিচ্ছে না। এই ভোজন সেবা বিনামূল্যে দিচ্ছে তারা। রাঘব বাবুর কথায়, আমরা সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যাদের সত্যিই এমন পরিস্থিতি হয়েছে এবং আমাদের সাহায্য প্রয়োজন তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আমাদের এই খাবারগুলো ভলান্টিয়ারদের বাড়িতেই তৈরি হয়। এবং তারাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার পৌঁছে দেন।
তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে গিয়ে বলেন, গতকাল আমরা ১২ জন কোভিড রোগীর বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়ে এসেছি। পাশাপাশি আমাদের সেক্রেটারি ও কোষাধক্ষ্যের বাড়িতে যে খাবার তৈরি হয়েছে, তা ১৩ জনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট কোনও রান্নাঘর বা রান্না করার জায়গা নেই, যেখানে আমরা করোনা আক্রান্তদের জন্য রান্না করতে পারি। আমরা নিজেদের বাড়িতেই বাড়তি কয়েকজনের জন্য রান্না করছি। আমরা যা খাই, তারাও তাই খাচ্ছে।
দিল্লির কোথায় কোথায় পাওয়া যাচ্ছে এই পরিষেবা?
রাঘববাবু জানিয়েছেন, আপাতত গ্রিন পার্ক, সফদরগঞ্জ, লাজপত এরিয়া, গ্রেটার কৈলাস, ডিফেন্স কলোনি ও এর আশেপাশের এলাকাতে এই খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।
এই সংস্থা ছাড়াও আরও একটি সংস্থা রয়েছে, নাম AAS ফাউন্ডেশন। তারাও কোভিড রোগীদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। গতরাতেই ২০০ জনের কাছে খাবার দিয়ে এসেছে তারা।
AAS ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট রেখা গুপ্ত বলেন, আমরা একটি হেল্পলাইনের মাধ্যমে ফোন পেতে শুরু করি, যেখানে বাড়ির সকলেই আক্রান্ত। কেউ নেই রান্না করে খাওয়ানোর। এমনই পরিবারকে শেষ ২০ দিন ধরে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি আমরা।
এর পাশাপাশি BJP নেতা ওল্ড দিল্লিতে প্রবীণ শঙ্কর কাপুর ও তাঁর বন্ধু অমরনাথ গুপ্ত, অশ্বিনী বৎস্য ও হরিবংশ শর্মার সঙ্গে মিলে শ্রমিক রসোই বানিয়েছেন। যেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের এই পরিস্থিতিতে খাবার দিচ্ছেন তাঁরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Corona, Coronavirus, Delhi, Food