ABIR GHOSHAL
#ঝাড়গ্রাম: ৪৩৫ বছরের ইতিহাস। সঙ্গে মিলে মিশে মিথ। ঝাড়গ্রামের কনক দুর্গা মন্দিরের অন্দরে নানা গল্পকথা। সাড়ে চারশো বছর আগের সামন্ত রাজাদের ইতিহাস। স্থানীয়দের বিশ্বাস, চারদিকে গভীর জঙ্গলের মধ্যে সামন্ত রাজাদের এই মন্দিরে আজও অষ্টমীর রাতে নিজেই নিজের ভোগ রান্না করেন দেবী। পুজো উপলক্ষে দর্শকদের ভিড়ে জমজমাট হয়ে থাকে মন্দির চত্ত্বর। সেই কনক দূর্গা মন্দির সংষ্কারে সাহায্য করল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাড়গ্রামে তাঁর প্রশাসনিক সভায় এই বিখ্যাত মন্দিরের উন্নয়নে ২ কোটি বরাদ্দ করলেন। এর পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম জেলার আর একটি বিখ্যাত ধর্মীয় স্থান গুপ্তমণি মন্দিরের জন্যেও ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন।
মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রাম সফরে এলেই একবার এসে পুজো দিয়ে যান কনকদূর্গা মন্দিরে। চিল্কিগড়ের এই বিখ্যাত স্থান পর্যটকদের কাছেও ভীষণ আর্কষণীয়। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঝাড়গ্রাম সফরে এসেও কনকদূর্গা মন্দিরে আসেন পুজো দিতে। প্রায় ১ ঘন্টার বেশি সময় তিনি ছিলেন মন্দিরে৷ পুজো দেন। মন্দিরের সংষ্কারের কাজের বিষয়ে খোঁজ খবর নেন মন্দিরের সেবাইতদের কাছ থেকে। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আতঙ্ক ভঞ্জন ষড়ঙ্গী জানিয়েছেন, "উনি বারবার পুজো দিতে আসেন। কখনও কখনও পুজো পাঠিয়ে দেন। উনি আগেই ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। মন্দিরে এসে তিনি আরও ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।"
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা ঝাড়গ্রাম থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ডুলুং নদী। নদীর তীরে গভীর জঙ্গলের মধ্যে কনক দুর্গা মন্দির। দেবী এখানে অশ্বারোহিনী চতুর্ভূজা। অষ্টধাতুর এই মূর্তি ঘিরেই জমে ওঠে দুর্গাপুজো। শহুরে কোলাহল থেকে বহু দূরে কনক দুর্গার অবস্থান।। প্রাচীন রীতিতে ব্যতিক্রমী আড়ম্বরহীন , ঝাঁ চকচকবিহীন পুজো।
ইতিহাস বলে, চিলকিগড়ের সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ তৈরি করেন এই মন্দির। স্বপ্নাদেশ পেয়ে স্ত্রীর হাতের কাঁকন দিয়ে মূর্তি তৈরি করান তিনি। স্থানীয়রা বলেন, আগে নাকি এখানে নরবলি হত। দেবীর নির্দেশে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বলি আজও হয়। পাঁঠাবলি। অষ্টমীর রাতে। মন্দিরের পাশে গভীর জঙ্গলের মধ্যে। নিশা পুজোয় অংশ নেন শুধুমাত্র রাজপরিবারের সদস্যরাই। স্থানীয়দের বিশ্বাস , নবমীর ভোগ রান্না করেন স্বয়ং দুর্গা মাও । ২০০৭-২০০৮-য়ে দু’বার চুরি যায় মূর্তি। নতুন করে তৈরি হয় অষ্টধাতুর মূর্তি। মন্দিরে বসে সিসিটিভি। পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রেও জায়গা করে নেয় কনকদুর্গা মন্দির। মন্দির লাগোয়া বিশাল ভেষজের জঙ্গল। পরিচর্যার অভাবে দামী দামী ওষুধের গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। বর্তমানে গাছের রক্ষণাবেক্ষণে রাখা হয়েছে রক্ষী। তৈরি হয়েছে চেকপোস্ট। ভগ্নপ্রায় চিলকিগড়ের রাজবাড়ি ও কনকদুর্গা মন্দিরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে ডুলুং নদী । পুজো উপলক্ষে সেজে ওঠে পুরো এলাকা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: District Durga Puja 2020, durga-puja-2020, Jhargram, Mamata Banerjee