#আগরতলা: বেনজির সিদ্ধান্ত নিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷ দলের মধ্যে থেকে তাঁকে অপসারণের দাবি ওঠায় প্রকাশ্যে জনতার রায় নেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন বিপ্লব৷ তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১৩ ডিসেম্বর আগরতলার আস্তাবল ময়দানে উপস্থিত থাকবেন তিনি৷ ত্রিপুরাবাসী তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী চান কিনা, জনতার থেকে প্রকাশ্যে সেই রায় নেবেন তিনি৷ জনতা চাইলে তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বিপ্লব৷
ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে দলের একাংশ দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষুব্ধ৷ তাঁদের নেতৃত্বে রয়েছেন বিজেপি নেতা সুদীপ রায় বর্মণ৷ এই দলে বেশ কিছু বিধায়কও রয়েছেন৷ ইতিমধ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছেও বিপ্লবের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী৷ তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসে স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছেন বিপ্লব দেব৷ তাঁর জন্য সরকারের কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যে জনসমর্থন হারাচ্ছে বিজেপি৷ এমন কি, দলীয় সংগঠনও ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ৷
এই পরিস্থিতিতে গত রবিবার ত্রিপুরার একটি গেস্ট হাউসে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে বসেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক বিনোদ সোনকার৷ তাঁর উপস্থিতিতেই ওই গেস্ট হাউসের বাইরে বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের একাংশ৷ স্লোগান ওঠে, 'বিপ্লব হঠাও, বিজেপি বাঁচাও৷' বিপ্লবকে অপসারণের দাবিতে কেন্দ্রীয় নেতার সামনে বিক্ষোভও হয়৷
এর পরই এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকে গণরায় নেওয়ার ঘোষণা করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, 'ত্রিপুরার মানুষ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছেন৷ কোনওদিন ভাবিনি আমি মুখ্যমন্ত্রী হব৷ ত্রিপুরাকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে গড়ে তুলতে জাতপাত, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে আমি কাজ করেছি৷ কিন্তু সেদিনের ঘটনায় আমি খুবই ব্যথিত৷ যেভাবে বিপ্লব হঠাও বিজেপি বাঁচাও বলে আওয়াজ উঠেছে, তার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি জনতার রায় নেব৷'
আবেগতাড়িত গলায় বিপ্লব আরও বলেন, 'সমস্ত ত্রিপুরাবাসীর কাছে নিবেদন, আপনারাই আমাকে মুখ্যমন্ত্রী, বিধায়ক বানিয়েছেন৷ কিন্তু মানুষের কাছ থেকেই জানতে চাই, আমি কি থাকব? আগামী ১৩ তারিখ, রবিবার আমি বেলা দুটোর সময় আমি আস্তাবল ময়দানে যাব৷ আপনারা সবাই সেখানে আসুন৷ আপনারাই বলবেন আমি কি থাকব, না চলে যাব৷ যদি বিপ্লবকে ভাল লাগে সেটা বলুন, না লাগলে সেটাও বলুন৷ আপনারা যা বলবেন সেটাই হবে৷ তার পর আমি দলীয় নেতৃত্বকে জানাব যে ত্রিপুরার মানুষ এটা চায়৷'
বিপ্লবের দাবি, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে আপোস করেননি৷ সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে দলেরই কয়েকজন সরব হয়েছে৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী আরও দাবি করেছেন, শিল্প আনা, কর্মসংস্থান তৈরি করা এবং ত্রিপুরার উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করেছেন তিনি৷গত জুন মাসে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সুদীপ রায় বর্মণকে সরিয়ে দেওয়া হয়৷ এর পর থেকেই বিপ্লবের বিরুদ্ধে সুদীপ রায় বর্মণের নেতৃত্বে একজোট হতে শুরু করে দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী৷ ত্রিপুরায় দলের এই অভ্যন্তরীণ কাজিয়া সামাল দেওয়াই এখন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে বড় মাথাব্যথার কারণ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।