#নয়াদিল্লি: ভাগ্য দেবতা কখন যে কার উপর তাঁর কৃপা দৃষ্টি রাখবেন তা আগে থেকে বলা বেশ শক্ত । তা না হলে কী আর মাত্র ২ মাসেই রাস্তার ভিখিড়ি থেকে হাজার হাজার টাকার মালিক হয়েছিলেন তিনি! তবে সেই সুখ চিরস্তায়ী হল না । ফের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই আবারও ফিরলেন সেই পুরনো আস্তানায় । ঝাঁ চকচকে রেস্তোরাঁর মালিক কান্তা প্রসাদ আবারও ফিরে গেলেন নিজের সেই ভাঙাচোরা টিনের এক চিলতে দোকানে । এক বছর আগে যে লকডাউনের দৌলতে তিনি রাতারাতি খবরের শিরোনামে এসেছিলেন, বড়সড় একটি রেস্তোরাঁরার মালিক হয়েছিলেন, এ বারেও সেই লকডাউনই তাঁকে ফের নিজের পুরনো জীবনে ফিরিয়ে আনল ।
মনে আছে সেই কান্তা প্রসাদের কথা? গত অক্টোবর মাসের আগে পর্যন্ত অবশ্য তাঁকে কেউ চিনত না । তারপর একদিন হঠাৎই ঘটে এক মিরাক্যাল । গোটা দেশে জনপ্রিয় হয়ে যান কান্তা । সৌজন্যে একটাই শব্দ- ‘ভাইরাল’ । আর তার জেরেই ঝরঝরে গুমটি দোকান ‘বাবা কা ধাবা’র মালিক কান্তা প্রসাদ দিল্লির মালব্য নগরের ধোপদুরস্ত এক রেস্তোরাঁ খুলে ফেললেন । ৮০ বছরের কান্তা এবং তাঁর স্ত্রী’র সেই রেস্তোরাঁয় ইন্ডিয়ান ও চাইনিজ ফুড পাওয়া যেত ।
Delhi: Kanta Prasad, the 80-year-old owner of 'Baba Ka Dhaba', starts a new restaurant in Malviya Nagar. "We're very happy, god has blessed us. I want to thank people for their help, I appeal to them to visit my restaurant. We will serve Indian & Chinese cuisine here," he says. pic.twitter.com/Rg8YAaJ1zk
— ANI (@ANI) December 21, 2020
কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ফের সব ওলোটপালট হয়ে গেল । শুরু হল দ্বিতীয় লকডাউন । একে একে ক্রেতা কমতে থাকল । ফের বন্ধের মুখে কান্তার নতুন রেস্টুরেন্ট । নতুন এই রেস্তোরাঁ যুক্ত হয়েছিল জোম্যাটোর সঙ্গেও । বাজারের সমস্ত দেনা মিটিয়ে দিয়েছিলেন কান্তা । নিজের ও তাঁর পরিবারের জন্য কিনেছিলেন স্মার্ট ফোনও । কিন্তু ফেব্রুয়ারি থেকে ফের ব্যবসার পতন শুরু হয় । দিল্লিতে করোনার বাড়বাড়ন্ত শুরু হতেই তাঁদের রেস্তোরাঁ প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ে । এক ধাক্কায় ৩৫০০ থেকে দৈনিক আয় এসে দাঁড়ায় মাত্র ১ হাজারে । কান্তার ৮ জনের সংসারে তা ছিল খুবই কম ।
UPDATE: baba ka dhaba is now listed on zomato and our team is working with the elderly couple there to enable food deliveries thank you to the good people of the internet for bringing our attention to this
— zomato india (@zomatoin) October 8, 2020
নতুন রেস্তোরাঁ খুলতে কান্তা প্রায় ৫ লাখ টাকা ঢেলেছিলেন । ৩ জন কর্মচারী রেখেছিলেন । কান্তা বলছেন, এই বিশাল অঙ্কের টাকা এখন জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন তিনি । অনেকেই সে সময় তাঁকে ভুল পরামর্শ দিয়েছিল । নতুন রেস্তোরাঁ খোলার সিদ্ধান্ত একেবারেই ঠিক হয়নি । এখন চেয়ার, টেবল, বাসনপত্র, কুকিং মেশিন বিক্রি করে তিনি মাত্র ৩৬ হাজার টাকা তুলতে পেরেছেন । বাকি টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবেন তা এখনও জানেন না কান্তা ।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল গত বছর । দীর্ঘ লকডাউনের কারণে সে সময় দু’বেলা খেতে পেতেন না কান্তা ও তাঁর স্ত্রী বাদামী দেবী । ‘বাবা কা ধাবা’ নামে ছোট্ট একটি গুমটি দোকান ছিল তাঁদের । মটর পনীর, ডাল বিক্রি করতেন তাঁরা । কিন্তু প্রতিদিন সেই খাবার নষ্ট হত । একজন ক্রেতাও আসতেন না তাঁদের দোকানে । সমস্ত পুঁজি শেষ হয়ে গিয়েছিল । রোজই চোখের জল মুছতেন কান্তা আর বাদামী ।
মোড় ঘোরে একটা ভিডিওতে । ফুড ব্লগার গৌরব ওয়াসন ‘বাবা কা ধাবা’ নিয়ে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে । সেখানে কান্তা আর বাদামীর দুর্দশা সকলের চোখে পড়ে । মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি । পরের দিন সকাল থেকে ‘বাবা কা ধাবা’র সামনে ক্রেতাদের লাইন পড়ে যায় । বিপুল বিক্রি বেড়ে যায় কান্তার । আর তারপরেই বদলে যায় তাঁদের ভাগ্য । কয়েক দিনের মধ্যে ঝাঁ চকচকে এক রেস্তোরাঁর মালিক হয়ে যান কান্তা আর বাদামী । কিন্তু তাঁদের সেই সুদিন অচিরেই মুখ লুকালো দুর্ভাগ্যের আড়ালে ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Baba ka dhaba, New Delhi