#নদিয়া: হুল দিবস বা বলা যেতে পারে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন সাঁওতালরা। এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন সিধু ও কানু। ইংরেজদের আমলে একাধিক জমিদার ব্যবসায়ীদের নিপীড়ন ও ব্রিটিশদের অত্যাচারের কারণেই এই আন্দোলনের সূচনা ঘটে। এবং এই সমস্ত অত্যাচার ও নিপীড়নের থেকে মুক্তি পেতেই এই আন্দোলনে নামে একাধিক সাঁওতালেরা। এই আন্দোলনে ইংরেজ সৈন্যদের গুলিতে প্রাণ হারান সিধু ও কানু।
অসৎ ও অত্যাচারিত জমিদার ও ব্যবসায়ীদের শোষণ অত্যাচার ও নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম সাঁওতাল রাজ্য গড়ে তোলার উদ্দেশ্য ছিল তাদের। নিজেদের অধিকার ছিনিয়ে নিতে ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ৩০ শে জুন সিধু ও কানুর নেতৃত্বে ভাগনা বিহির মাঠে সমাবেত হয় হাজার হাজার সাঁওতাল মানুষেরা। তবে কিছু তথ্য থেকে জানা যায় কয়েকজন মানুষের বিশ্বাসঘাতকতার ফলেই ব্রিটিশদের হাতে গ্রেফতার হন সিধু এবং পরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে ১৮৫৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভগনডিহির সন্নিকটে পাঁচ কাটিয়া বটবৃক্ষে ফাঁসির মঞ্চে তোলা হয় কানুকে।
এই দুই অমর বীরকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতেই আজকের দিনে পালন করা হয় হুল দিবস। আদিবাসী নৃত্যে খোল ও মাদল বাজিয়ে দেশের সমস্ত সাঁওতালেরা পালন করেন এই হুল দিবস। ঠিক তেমনি নদিয়ার শান্তিপুর মতিগঞ্জ মোড়ের সন্নিকটে রয়েছে একটি ছোট আদিবাসীদের গ্রাম। সেই গ্রামেই ঝুমুরিয়া নামে একটি আদিবাসী সংগঠন তাদের রীতি রেওয়াজ মেনে খোল ও মাদলের তালে নাচে গানে শহীদদের সম্মান জানিয়ে পালন করলেন হুল দিবস। এছাড়াও শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে তারা আয়োজন করেছিলেন একটি রক্তদান শিবিরেরও। সাঁওতালদের দুই অমর বীর অসীম সাহসের উপর ভর করে ইংরেজ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছিলেন সাঁওতাল বাহিনীর মুক্তির আশায়। স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে দিয়েছিলেন নিজেদের প্রাণও। সেই কারণে আজও তাদেরকে সম্মান জানাতে পালন করা হয় 'হুল দিবস'।
Mainak Debnath
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Nadia, Nadia news