#মুর্শিদাবাদঃ মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী ব্লকে চলছে মালটা চাষ। ডায়াটারি ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি 6,পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ এই ফল খাদ্যগুণে ভরপুর। স্বভাবতই বাজারে চাহিদাও প্রচুর। পাকুড়দিয়াড় এলাকার শিক্ষিত যুবক সিরাজুস সালিকের হঠাৎই ইউটিউব দেখে মালটা চাষে উৎসাহ জাগে। তারপরেই খোঁজ শুরু হয় এই চাষের বিষয়ে। তারপরেই হরিহরপাড়ায় খোঁজ মেলে মালটা চাষের। সেখানে গিয়ে পরিচর্যা জেনে আসেন।
এরপর রানাঘাট থেকে কেনেন মালটা গাছের চারা। শুরু হয় পরিচর্যা। দেড় বছর আগে এই মালটা গাছের চারা লাগিয়ে কয়েটি গাছে দেখা মিলেছে মালটা ফল। যার আসল নাম বারি অন মালটা। পাকিস্তান এই চাষের মুল উৎস। সেখান থেকে বাংলাদেশ। তারপর এখন ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই চাষ হচ্ছে। সাড়ে তিন বিঘা জমিতে শুরু করেন এই মালটা চাষ। পরে জলঙ্গী সহ কৃষি অধিকর্তার উদ্যোগেও কিছু চারা দেওয়া হয়। এখন অপেক্ষা। বছর দুয়েক বাদেই মিলবে ফল।
বাজারে এই ফলের চাহিদা থাকলেও জোগান খুব কম। তাই দাম ও তুলনামুলক বেশি। খরচের উপর নির্ভর করে ফলের দাম কেজি প্রতি ৬০ টাকাতেই মুনাফা হবে প্রচুর। গাছে জল দেবার জন্য রয়েছে স্প্রে-র মাধ্যমে জল সেচ। মাঝেমধ্যে ড্রোনের মাধ্যমে দেওয়া হয় কীটনাশকও। অভিনব পদ্ধতিতে মালটা চাষ করে ড্রোনের মাধ্যমে স্প্রে করাতে কৃষি দফতরও খুশি। স্থানীয়রা জানান, সিরাজুস সালিকে এতে লাভবান হলে হয়তো এলাকার আরোও কৃষক মালটা চাষ করবে। মুলত কি ভাবে করবেন এই চাষ। ষড়ভুজ বা বর্গাকার পদ্ধতিতে চারা বা কলম রোপণ করতে হবে। বৈশাখ থেকে মধ্য ভাদ্র (মে- আগস্ট) মাস রোপণের উত্তম সময়।
তবে জল বা সেচের ব্যবস্থা থাকলে সারা বছর রোপণ করা যায়।চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পূর্বে উভয় দিকে ৩/৪ মিটার দূরত্বে ৭৫x৭৫x৭৫ সেমি মাপে গর্ত খুড়তে হবে। প্রতি গর্তে ১৫ কেজি পচা গোবর, ৪/৫ কেজি ছাই, ২৫০গ্রাম টিএসপি, ২৫০ গ্রাম এমওপি, ৫ গ্রাম বোরিক অ্যাসিড, ৫০০ গ্রাম চুন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে গর্তে ভরে দিতে হবে। গর্ত ভরাট করার ১০-১৫ দিন পরে চারা রোপণ করতে হবে। রোপণের পর খুঁটি দিয়ে বেধে দিতে হবে। প্রয়োজন মত সেচের ব্যবস্থা করতে হবে।
গাছের বৃদ্ধি এবং ফল ধারণের জন্য বছরে তিন বার সার দেওয়া দরকার। বর্ষার আগে মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্রে এবং মধ্য বৈশাখ হতে মধ্য জ্যৈষ্ঠে। বর্ষার পরে মধ্য ভাদ্র থেকে মধ্য আশ্বিন মাসে। দুপুরবেলায় মাটিতে গাছের ছায়া যতটুকু পড়ে ততটুকু স্থানে ৬ ইঞ্চি গভীর করে ভালোভাবে কুপিয়ে সার দেওয়া উত্তম। অথবা গাছের গোড়া হতে ১ ফুট বাদ দিয়ে এরপর ৪ ফুট পরিমাণ জমি বৃত্তাকারে অনুরূপভাবে কুপিয়ে দিলেও হবে। সার প্রয়োগের পর সেচ দিতে হয়। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে খাবারের চাহিদাও বৃদ্ধি পায়। তাই বয়সভেদে পরিমাণ মতো জৈব ও অজৈব সার দেওয়া প্রয়োজন। মালটা চাষের সাফল্য দেখাচ্ছেন এই চাষী। খুশি মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনও।
কৌশিক অধিকারী
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Murshidabad