#দুর্গাপুর: মর্মান্তিক মৃত্যু সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের (Durgapur news) । একসঙ্গে অনেক মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। দুর্গাপুরের এমএমসি'র কলোনিতে ঘটেছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঘটনার জেরে এলাকায় শোকের ছায়া। পাশাপাশি মৌমাছির আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় মানুষজন।
বনদপ্তর এর কাছে অনুরোধ করছেন মৌমাছির (bee) বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য। মৌমাছির কামড়ে যে কোন মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে, এ কথা খুব সহজে মেনে নিতে পারছেন না এলাকার মানুষ।
এমএমসি কলোনির বাসিন্দা বি কে সিং(Durgapur news)। বয়স আনুমানিক ৭০ বছর। তিনি একটি কারখানার অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। গত সোমবার বিকেলে তিনি নিজের কাজে যাওয়ার জন্য রাস্তায় বের হন। বাড়ি থেকে যাওয়ার পথে একটি সরকারি মহাবিদ্যালয়ের কাছে তাকে মৌমাছির ঝাঁক আক্রমণ করে। মুহূর্তের মধ্যেই সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধকে ছেঁকে ধরে মৌমাছির দল। মৌমাছির আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে প্রাণপণ দৌড় শুরু করেন ওই বৃদ্ধ।
শেষে কোন উপায় না পেয়ে একটি নির্মীয়মান বাড়ির কাছে (Durgapur news)থাকা জলাশয় ঝাঁপ দেন তিনি। পরনে থাকা জামাটিও খুলে ফেলেন। কিন্তু ততক্ষণে মৌমাছির কামড়ে জেরবার হয়ে পড়েছিলেন বি কে সিং। জলে ঝাঁপ দেওয়ার পরেও বেশ কিছুক্ষণ মৌমাছির কামড় সহ্য করতে হয়েছে ওই বৃদ্ধকে।
ওই সময় রাস্তা দিয়ে আরও অনেকেই যাচ্ছিলেন(Durgapur news)। তাদের মধ্যেও বেশ কয়েকজনকে দু-একটি করে মৌমাছি কামড় দিয়েছে। তবে বেশিরভাগ মৌমাছি আক্রমণ করেছে বি কে সিংয়ের ওপর। আশপাশে থাকা লোকজন চাইলেও সে সময় ওই বৃদ্ধকে সাহায্য করতে পারেন নি। তারা দূর থেকে কোনওভাবে সাহায্য করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।
তবে কাছে গিয়ে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি কারওর পক্ষেই। বেশ কিছুক্ষণ মৌমাছির তান্ডব চলে। তারপর মৌমাছির দল চলে গেলে, উদ্ধার করা হয় ওই বৃদ্ধকে।
এরপর বি কে সিংকে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে শুরু হয় তার চিকিৎসা। তবে প্রাণ বাঁচানো যায়নি ওই বৃদ্ধের(Durgapur news)। সোমবার গভীর রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি মৌমাছিরও রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় মানুষজন।
সাধারণভাবে মৌমাছি কামড় দিলে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে না। মৌমাছি কামড় দিলে অসহ্য জ্বালা সহ্য করতে হয় মানুষকে। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই জ্বর আসার প্রবণতা দেখা যায়(Durgapur news)। সাধারণভাবে এন্টিভেনাম ইনজেকশন এবং ওষুধের মাধ্যমে সুস্থ হয়ে ওঠেন মৌমাছি আক্রান্ত রোগীরা। তবে এক্ষেত্রে প্রাণ গিয়েছে আক্রান্তের।
যে ঘটনা দেখে তাজ্জব হয়েছেন অনেকেই। মৌমাছির কামড়ে কিভাবে মানুষের প্রাণ যেতে পারে, সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় মানুষজন। ইতিমধ্যেই বৃদ্ধের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বি কে সিংয়ের পরিবারে নেমেছে শোকের ছায়া। অতি সাধারন ঘটনা থেকে যে এমন বিপদ ঘটতে পারে, তা চিন্তাও করতে পারেন নি কেউ(Durgapur news)।
চিকিৎসক থেকে পতঙ্গ গবেষকরা বলছেন, মৌমাছির বিষ থেকে মানুষের মৃত্যু না হলেও, তা যথেষ্ট যন্ত্রণাদায়ক হয়। সেই বিষের পরিমাণ যদি শরীরে বেশি চলে যায়, তাহলে তা জীবন বিপন্ন করে তুলতে যথেষ্ট।
পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৌমাছি ফুল ফোটানোর পরে সেই হুলগুলি শরীরের মধ্যে ফুটে থাকে। হুলগুলির মধ্যে থাকে মৌমাছির পইজন গ্র্যান্ড বা বিষ গ্রন্থি। মৌমাছি হুলে যে বিষ থাকে, তার পিএইচ ৪.৫ থেকে ৫। ফলে অ্যাসিড ধর্মী এই বিষ শরীরে যথেষ্ট ক্ষতি করে(Durgapur news)। পাশাপাশি মৌমাছির বিষ এর মধ্যে মেলিটিন থাকে।
যার কারণে শরীরে অসহ্য প্রদাহ এবং ব্যথা অনুভব হয়। একটি মৌমাছি কামড়ালেই এই প্রদাহ বা ব্যথা অসহ্য হয়। যখন অনেকগুলি মৌমাছি একসঙ্গে কামড়ায়, তখন প্রচুর পরিমাণে মেলিটিন এবং মৌমাছির বিষ শরীরে ঢুকে যায়। যার ফলে অসহ্য যন্ত্রণা, প্রদাহ অনুভূত হয়। ব্যাপক জ্বর আসে। এমনকি অনেক মৌমাছির দংশনের ফলে হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।
তাছাড়া মৌমাছি হুল ফোটানো পর যে হুলগুলি শরীরের মধ্যে থেকে যায়, সেগুলি মৌমাছির শরীর থেকে ছিন্ন হওয়ার পরেও ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত শরীরের মধ্যে বিষক্রিয়া চালাতে সক্ষম।
মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ মৌমাছির হুলগুলি বের করা হয়নি। তার ফলে অনেক বেশি মেলিটিন এবং মৌমাছির হুলে থাকা তরল ধর্মী অ্যাসিড বৃদ্ধের শরীরে অনেক বেশি পরিমানে গিয়েছে। তা ছাড়াও একসঙ্গে বহু মৌমাছি কামড় দেওয়ার ফলে শরীরে ব্যাপক পরিমাণে ব্যথা এবং প্রদাহ অনুভব করেছেন ওই বৃদ্ধ। সব মিলিয়ে মৌমাছির দংশনে বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসক এবং পতঙ্গবিদরা মনে করছেন। তবে বি কে সিংয়ের মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা জানা যাবে ময়নাতদন্তের পরেই(Durgapur news)।
Nayan Ghosh
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bardhaman news, Burdwan news, West burdwan