#কোলাঘাট: পশ্চিমবঙ্গের গ্রামবাংলার বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন ধরনের কুটির শিল্পের প্রচলন রয়েছে। যদিও একসময়কার এই সমস্ত বিখ্যাত কুটির শিল্প বর্তমানে ধুঁকছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লক এরকমই এক অদ্ভুত শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এই ব্লকের বেশ কিছু মানুষ হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। গরু বা মোষের শিং থেকে ব্যবহার্য জিনিসপত্র সহ কারুকার্যে জিনিসপত্র তৈরি করার নামই হল হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্প। কোলাঘাট ব্লকের কুলহান্ডা, কলাগাছিয়া, দূর্বাচটি, বৈষ্ণবচক সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামে, প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে মানুষজন এই হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল একসময়। কিন্তু বর্তমানে এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে।
গরু বা মোষের শিং থেকে তৈরি হত ঘর সাজানোর জন্য ফুলদানি, ছোট ছোট পাখি, বাঘ, হাতি, ঘোড়া, ময়ূর সহ বিভিন্ন কারুকার্যের জিনিসপত্র। এছাড়াও তৈরি হত নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য লবণদানি, কলমদানি, চিরুনি সহ নানান জিনিস পত্র। একসময় কোলাঘাটের এই গরু বা মোষের শিং থেকে তৈরি জিনিসপত্রের কদর ছিল সারা ভারতবর্ষ তথা বিদেশেও। কোলাঘাটে শিং দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র ভারতবর্ষের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করা হত একসময়। ফলে বাড়ি বাড়ি ছিল এই কুটির শিল্পের কারখানা। কিন্তু বর্তমানে নানান কারণে বিক্রিবাটা বন্ধ। এই শিল্প থেকে রোজগার কমে গেছে অনেকটাই। ফলে নতুন প্রজন্ম বিমুখ এই শিল্প থেকে।
ধিষান শিল্পের সঙ্গে ৫০ বছরের বেশি সময় যুক্ত সন্তোষ সাউ নামে এক ব্যক্তি জানান, তিনি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থেকে বহুবার রাজ্যস্তরে পুরস্কার পেয়েছেন। এক সময় গরু বা মোষের শিং এর তৈরি জিনিস বিদেশে যেত। কিন্তু এখন সরকারি দু চারটে মেলা ছাড়া বিক্রির আর উপায় নেই। বর্তমানে কাঁচামালের দামও অনেক বেশি।
কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে হর্ন শিল্প বা ধিষান শিল্পকে বাঁচানোর কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুরজিৎ মান্না জানিয়েছেন, কোলাঘাটের বিখ্যাত হর্ন শিল্প বাঁচাতে পুরুষদের স্বসহায়ক দল তৈরি করার চিন্তা-ভাবনা চলছে।
Saikat Sheeনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: East Medinipur