রুদ্র নারায়ন রায়, উত্তর ২৪ পরগনা: ছোটর থেকেই ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা তার, কিন্তু বাড়ির সম্মতি মেলেনি কখনোই। তবু হাল ছাড়তে নারাজ। অবশেষে পরিকল্পনা করে ঘুরতে যাওয়ার জন্যই বাড়ি ছাড়ে নাবালক। আসামের শিলচরের বাসিন্দা বছর ১৬-এর নবম শ্রেনীর পড়ুয়া নীলকান্ত সিনহার স্বপ্নের নগরী হায়দ্রাবাদ। ছোট থেকেই নীলকান্ত টিভি এবং অন্যান্য মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে হায়দ্রাবাদকে ভালোবেসে ফেলে। সেখানে ঘুরতে যাওয়ার তার খুব ইচ্ছা হয়। এক প্রকার নীলকান্তের কাছে স্বপ্ন নগরী হয়ে ওঠে নিজামের শহর। কিন্তু পরিবার নাবালক ছেলের সেই ইচ্ছায় কোনদিনই সেভাবে আমল দেয়নি। তারা শুধু নীলকান্তকে পড়াশোনা করতে বলতেন।
কিন্তু নীলকান্তর স্বপ্নের শহর তাকে বাড়ে বাড়ে হাতছানি দিত। সামর্থ্য না থাকায় স্বপ্নপূরণের সব ইচ্ছাই যখন প্রায় মলিন তখনই, হঠাৎ সে স্বপ্ন পূরণের দিশা খুঁজে পায়। পরীক্ষার ফ্রি জমা দেওয়ার জন্য তার মা তাকে কিছু টাকা দেয়। এরপরেই সে ঠিক করে তার স্বপ্ন নগরী নিজামের শহরে পাড়ি দেবে নীলকান্ত। সেই মত সে একটি বেসরকারি সংস্থার বিমানের টিকিট কেটে ফেলে। পরিবারের লোকেরা যাতে তাকে খুঁজতে না পারে তার জন্য সে একটি ট্রেনের টিকিটও কাটে। এরপরে রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে সে। শিলচর বিমানবন্দর হয়ে, কলকাতায় এসে পৌঁছায়। কলকাতা থেকে এদিন তার হায়দ্রাবাদের বিমান ছিল। সেই মত সে প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলে। কিন্তু বিমানে উঠতে যাওয়ার আগের মুহুর্তে তাকে ধরে ফেলেন বিধাননগর কমিশনারেটের এন.এস.সি.বি.আই থানার পুলিশ। এরপরে পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে নীলকান্তর দাদা সুরজিৎ সিনহা শহরে এসে পৌঁছান।
অবশেষে নীলকান্তকে নিয়ে শিলচরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এন.এস.সি.বি.আই থানার পুলিশ সূত্রে খবর, আসামের শিলচর সদর থানায় নীলকান্তর পরিবার নিখোঁজ ডায়েরি করে। এরপরে শিলচর সদর থানার পক্ষ থেকে উত্তর পূর্বের সমস্ত থানায় নীলকান্তর ছবি দিয়ে দেওয়া হয়। এবং বিশেষ করে কলকাতা বিমানবন্দরে বলা হয় নজর রাখতে। কেন না, পরিবারের এক সদস্যের কাছে নীলকান্তর বিমানের টিকিটের বার্তা এসে পৌঁছায়। সেই মত সেই বার্তা বেসরকারি সংস্থার বিমান কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে এন.এস.সি.বি.আই থানার পুলিশ। জানতে পারে এদিন রাতেই হায়দ্রাবাদের বিমান রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বিমানবন্দরে ভিতরে প্রবেশ করে এবং বোডিং গেটের কাছ থেকে নীলকান্তকে উদ্ধার করে শিলচর সদর থানায় খবর দেয়। সেই খবর পেয়েই এদিন আসাম থেকে পৌঁছায় নীলকান্তর দাদা। এরপরে দুপুরের বিমানে নীলকান্তকে নিয়ে আসামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ভাই কে ফিরে পেয়ে, নীলকান্তের দাদা বিধাননগর পুলিশ ও আসাম পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।