#উত্তর ২৪ পরগনা: সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়তে পড়াশোনার ক্ষেত্রে সরকারি স্কুলের নাম শুনলে অনেকেই ভ্রু কোঁচকান। সন্তানের মেধা বিকাশে অনেক অভিভাবকেরই প্রথম পছন্দ বেসরকারি স্কুলের পঠন পাঠন। যেমন সব কিছুর মধ্যেই ব্যতিক্রম থাকে তেমনি বেশকিছু সরকারি স্কুলও টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে বেসরকারি স্কুল গুলোকেও। এক্ষেত্রে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া পৌরসভার অন্তর্গত হাটথুবা পল্লীমঙ্গল জি এস এফ পি স্কুলের নাম বলা যেতে পারে। শুধু পঠন-পাঠন নয়, সাংস্কৃতিক বিকাশের মানদণ্ডে এই প্রাইমারি স্কুল ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে (North 24 Parganas News)।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটকের তালিম দিয়ে থাকেন স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। সারাবছর বিশেষ দিনগুলোতে স্কুলের প্রতিভাবান পড়ুয়াদের নিয়েই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তাদের উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। স্কুলের ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবসেও স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে সারাদিন ব্যাপী এক সাংস্কৃতিক কোলাজের আয়োজন করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কেউ সাজল স্বামিজী, কেউ নেতাজী, কেউ গান্ধীজী, কেউ আবার ভারতমাতা।
এদিন সকালে দেশের মনীষীদের সাজে সজ্জিত হয়ে ক্ষুদে পড়ুয়াদের নিয়ে ৭৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে বর্নাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্যোগ নিল হাটথুবা পল্লীমঙ্গল জি.এস.এফ.পি বিদ্যালয়। শুধুমাত্র পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাই নয়, পড়ুয়াদের অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের স্বতঃস্ফুর্ত উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। হলুদ শাড়ি আর হলুদ পাঞ্জাবী ড্রেস কোড মেনে শিশুদের সঙ্গে সকলেই হাঁটলেন শোভাযাত্রায়। এদিন স্কুলের সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্যে থাকা প্রতিভাবান পড়ুয়াদের নিয়েই অনুষ্ঠিত হল এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। খুদে পড়ুয়ারা নাচ, গান, আবৃত্তি, নাটক পরিবেশন করল। এদিন স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবসকে সার্বিক সুন্দর করে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে দেখা গেল স্কুলের সকল অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের। অনুষ্ঠান শেষে স্কুল চত্বরে বসন্ত উৎসব পালন করলেন পড়ুয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকরা। এদিনের সমস্ত অনুষ্ঠান পর্বে অভিভাবিকাদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা ছিল যথেষ্ঠ প্রশংশনীয়।
পড়ুয়াদের অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণকে সাধুবাদ জানিয়েছেন হাটথুবা পল্লীমঙ্গল জি.এস.এফ.পি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রুনু পাল। তিনি জানালেন, "সকলেই মনে করে সরকারি স্কুলের চেয়ে বেসরকারি স্কুলের মানদন্ড মজবুত। তবে হাটথুবা পল্লীমঙ্গল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একবার আসলে অনেকেরই সেই ধারণা বদলে যাবে। বিশেষ করে কোভিড পরবর্তীতে স্কুলের পড়ুয়াদের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরাতে বিনোদনের সঙ্গে পড়াশুনায় অভ্যস্ত করার প্রয়োজন ছিল। আর সেটাই আমরা চেষ্টা করে সুফল পেয়েছি।"
পড়ুয়াদের মধ্যে ফিরেছে পড়াশুনার স্বাভাবিক ছন্দ। পড়াশুনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের সাংস্কৃতিক ভিত তৈরি করার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পান বলে জানালেন এই স্কুলের অপর এক শিক্ষক বিশ্বজিত দাস। তিনি জানালেন, "প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা লুকিয়ে থাকে। সেই প্রতিভাকে খুঁজে ঠিক ঠিক ভাবে তালিম দিতে পারলেই একদিন সেই প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটবেই। আমরা স্বল্পপরিসরে সেই চেষ্টাটাই করছি মাত্র। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠা দিবস নয়, ভাষা দিবস, রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী, শিক্ষক দিবস সহ নানা বিশেষ দিনগুলোতে স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে পালিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।" সারা বছর ধরেই এই স্কুলে চলে সাংস্কৃতিক শিক্ষার পাঠ। প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এমন উদ্যোগ পড়ুয়াদের আরও মনোযোগী ও শৃঙ্খলাপরায়ন হতে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন অভিভাবক-অভিভাবিকারা।
Rudra Narayan Royনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: North 24 Pargana news