সামনেই রাজ্য সড়ক। দিনভর নিজের গতিতে ছুটে চলেছে গাড়ি। কিন্তু রাস্তা থেকে কিছুটা এগিয়ে ভেতরের দিকে গেলেই, আর হদিশ পাওয়া যাবে না রাস্তার। ঠিক যেন প্রদীপের তলায় অন্ধকার। গ্রাম আছে। গ্রামে কমপক্ষে কুড়িটি পরিবারের বসবাস। গ্রামে বিদ্যুৎ আছে, আছে বিদ্যালয়ও। নেই শুধু রাস্তা। রাস্তার দাবিতে লড়াই চলছে বহুদিন ধরেই। তবে রাস্তা স্বপ্ন, এখনও রাস্তাতেই। যাতায়াতের প্রধান ভরসা শুধু কৃষিজমির আল। পানাগড় মোরগ্রাম রাজ্য সড়কের পাশে সাহেবডাঙ্গা গ্রাম। দু'দশক আগে সেখানে একটি-দুটি আদিবাসী পরিবারের বসবাস ছিল। পরবর্তীতে তা বাড়তে বাড়তে এখন ২০ থেকে ২৫ টি পরিবারের বসবাস। জনসংখ্যা ১০০ কাছাকাছি।
কিন্তু এই গ্রামে ঢোকার জন্য এখনও কোনও রাস্তা নেই। মাটির রাস্তার উপরেই জীবন যাপনের ধারা বয়ে নিয়ে চলেছে সাহেবডাঙ্গার মানুষজন।বহুবার প্রশাসনের কাছে দরবার করেছেন রাস্তার দাবিতে। কিন্তু কোনও সুফল মেলেনি। বাধ্য হয়ে তারা ভোট বয়কট করেছেন। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তারা প্রথম ভোট বয়কট করেন। সাহেবডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দারা পরে লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোট বয়কট করেন। একুশের নির্বাচনেও গ্রামের সব মানুষ ভোটগ্রহণপর্বে যোগদান করেননি। তবে তাতে চোখ খোলেনি স্থানীয় প্রশাসনের। এখনও পর্যন্ত সাহেবডাঙ্গা গ্রামের প্রধান প্রবেশপথ কৃষি জমির উপর তৈরি আলের রাস্তা।গ্রামের মানুষ বলেছেন, বহুদিন ধরে তারা কষ্টের মধ্যে বসবাস করছেন। গ্রামে বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আছে একটি আইসিডিএস সেন্টার।
কিন্তু বহুবার দাবি জানানোর পরেও গ্রামে ঢোকার রাস্তা তৈরি হয়নি। রাজ্য সড়ক থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে এই গ্রামটি। তবে সেই পথ পার হতে অনেকটা লড়াই করতে হয় গ্রামের মানুষকে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে খাটে চাপিয়ে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। রাস্তা না থাকার জন্য গ্রামের কোন মানুষ দুই চাকার বাহনও কিনতে পারেন না। বর্ষাকালে সমস্যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কৃষি জমির উপর মাটির রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে সমস্যায় পড়েন তারা। গ্রামের মহিলা থেকে শুরু করে বাচ্চা, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা চরম সমস্যার সম্মুখীন হন। তাছাড়াও সাপের উৎপাতের ভয় থাকে।তাই গ্রামবাসীদের দাবি, প্রশাসন গ্রামের মানুষের কথা ভেবে, রাস্তা তৈরির দিকে নজর দিক। রাজ্য সড়ক থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বের গ্রামে, পাকা সড়কের ব্যবস্থা করা হোক।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Monsoon, West Bardhaman