কান্দিঃ অবশেষে স্বপ্ন পূরণ, সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগে ও ব্যয়ে গ্রামের বাসিন্দারা তৈরী করলেন সেতু। যার খরচ পড়ল প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা। আর সেই সেতুর উদ্বোধন করা হল বুধবার। কোন সরকারী খরচে নয়, সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগেই তৈরী হল আস্ত একটি কজওয়ে সেতু। দ্বারকা নদীর একদিকে কান্দি থানা অন্যদিকে খড়গ্রাম থানা, স্থানীয় মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই নদীর উপর সেতু নির্মাণের। কিন্তু মাত্র ২ কিমি দূরেই রয়েছে গাঁতলা ব্রিজ। তাই আর সরকারি ভাবে নতুন কোনো ব্রিজ তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ তো করতেই হবে। আর সেই স্বপ্ন পূরণে মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার রামেশ্বরপুর গ্রামের মানুষ নিজেদের প্রচেষ্টায় টাকা তুলে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন গত দুই বছর আগে। এই প্রথম নয়, ভারত এর আগেও পেয়েছে বিহারের দশরথ মাঝি কিংবা উড়িষ্যার মাউন্টেন ম্যান হরিহরকে যাঁরা সরকারের লাল ফিতের দীর্ঘসূত্রিতায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে নিজেরাই পাহাড় কেটে তৈরি করেছিলেন রাস্তা। সেই একই টালবাহানার শিকার হয়েছেন মুর্শিদাবাদের রামেশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দারা। সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছিলেন কিন্তু ইরিগেশন ডিপার্টমেন্টের জায়গায় সরকারি ভাবে নতুন স্কিম দেওয়ার বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। ফলে মেলেনি সরকারি সাহায্য।
গত দুই বছর ধরে গ্রামের বাসিন্দারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে কজওয়ে সেতু নির্মাণ করেছেন। ওই এলাকার পাঁচটি গ্রামের বাসিন্দারা নিজেরা চাঁদা তুলে এই সেতু নির্মাণ করেছেন। বুধবার দুপুরে এই সেতুর উদ্বোধন করা হল ।উপস্থিত ছিলেন কান্দি বিধায়ক অপূর্ব সরকার, খড়গ্রাম বিধায়ক আশিস মার্জিত ও কান্দি পৌরসভার চেয়ারম্যান জয়দেব ঘটক সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এই কাজে এগিয়ে এসেছেন প্রাথমিক শিক্ষকরাও। বুধবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাঁদা তুলে ৩৫ হাজার টাকা দিলেন। গ্রামের বাসিন্দাদের তৈরী এই সেতু পথ দেখাবে গোটা মুর্শিদাবাদ জেলা সহ রাজ্যকে, মনে করছেন জনপ্রতিনিধিরা। এই সেতুর নির্মাণের ফলে ৩০ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। যদিও ব্রীজের দুই প্রান্তে ঢালাই রাস্তার নির্মাণ করবে কান্দি পঞ্চায়েত সমিতি। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের কান্দি থানার কুমারসন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতে ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষের বসবাস। তারমধ্যে রামেশ্বর পুর, মাদারহাটি, নপাড়া গ্রামের মানুষের স্কুল থেকে শুরু করে রেশন কিংবা নিত্য দিনের প্রয়োজন পূরণে দাবি ছিল রামেশ্বর পুরের এই সেতু। এলাকার প্রধান জীবিকা কৃষিকাজ আর বেশিরভাগ কৃষি জমি রয়েছে দ্বারকা নদীর অন্যপারে নওদা, সুন্দরপুর, রতনপুরে। ধান থেকে শুরু করে শাকসবজি কৃষিজ ফসল নিয়ে নদী পার হতে নাজেহাল হতে হচ্ছিল কৃষকদের। বর্ষার সময় সমস্যা আরও বেশি হত। স্বভাবতই এই সেতু নির্মাণ এক অন্য জীবন দিয়েছে রামেশ্বরপুর সহ ওই এলাকাকে। প্রতিবেদনঃ কৌশিক অধিকারী। মুর্শিদাবাদ KOUSHIK ADHIKARY. MURSHIDABAD
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Kandi, Murshidabad