#বহরমপুরঃ বহরমপুরে প্রকাশ্যে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীকে খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ। ধৃতের নাম সুশান্ত চৌধুরী। বাড়ি মালদহ জেলার অন্তর্গত পাকুড়ে। সোমবার রাতেই সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ নাকা চেকিং করার সময়ে, সামশেরগঞ্জের নতুন ডাকবাংলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সুশান্তকে।
এদিকে, এই খুনের বিষয়ে নিউজ ১৮ লোকালের পক্ষ থেকে বহরমপুরের মনোরোগ চিকিৎসক ডাঃ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "প্রেমে প্রত্যাখান হলে তা বেশি আঘাত দেয়। ফলে লস অফ লাভ অবজেক্ট থেকে প্রতিহিংসা পরায়ণতা আসে। যে খুন করেছে তার মধ্যে অপরাধমূলক মানসিকতা থাকতে পারে বা মানসিক সমস্যা থাকতে পারে। এখানে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক মুহূর্তে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে এই চরম পরিণতি ঘটিয়েছে অভিযুক্ত।"
বর্তমানে কোন মহিলাকে হেনস্থা করা হলেও তার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। এই ব্যাপারে সামগ্রিকভাবে সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রশাসনকে আরও গতিশীল হতে হবে। সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। তবেই এই জাতীয় অপরাধ আগামী দিনে কমবে।
সোমবার রাতেই বহরমপুরে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার কে সবরী রাজ কুমার জানান, "সোমবার সন্ধ্যায় বহরমপুর গার্লস কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে খুন করা হয় মেসের বাইরে। তিনি মালদহ জেলার ইংরেজবাজারের বাসিন্দা। ঘটনার পরেই মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ ও জঙ্গিপুর জেলা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। জঙ্গিপুর ও মালদহ জেলার পুলিশ নাকা চেকিং চালায়। এরপরেই মালদহ জেলার পাকুর থানার বাসিন্দা সুশান্ত চৌধুরীকে সোমবার রাত দশটা নাগাদ গ্রেফতার করা হয় সামশেরগঞ্জ এলাকা থেকে। ধৃতের কাছ থেকে একটি নকল আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।"
সুশান্ত চৌধুরীর সাথে মৃতার আগে থেকেই পরিচয় ছিল, প্রণয় ঘটিত কারণে কোন ভাবে তাদের সম্পর্কে ছেদ হতেই এই খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের। খুনের সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে তৎপরতার সাথে পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্তকে। মঙ্গলবার পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে বহরমপুর আদালতে পেশ করা হবে ধৃতকে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই তদন্ত প্রক্রিয়া এগোচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতেই মালদহ থেকে বহরমপুরে আসে মৃত ছাত্রীর পরিবার। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। নিহত ছাত্রীর বাবা পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিনি জানান, তাঁর মেয়ের সাথে সুশান্ত চৌধুরীর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। মালদহর ইংরেজবাজারে নিহত তরুণীর বাড়ির সামনেই সুশান্তর পিসির বাড়ি। সেখান থেকেই তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যদিও দুই পরিবার তা মেনে নেয়নি। গত তিন মাস আগে দুই পরিবারকে ডেকে গ্রামে সালিশি সভাও করা হয়। বলা হয়, দুইজনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরে সব কিছু ভাবা যাবে। কিন্তু তার পরেও মেয়ের ওপর মানসিক নির্যাতন করত অভিযুক্ত যুবক। মঙ্গলবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
Koushik Adhikaryনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Berhampore, Murder, Murshidabad