#শিলিগুড়ি: এ কোনও এক হলিউড অ্যাকশন সিনেমাকেও (Hollywood action cinema) হার মানাবে! চিতাবাঘ শিকার করেনি মানুষকে! এবার মানুষে চিতাবাঘকে শিকার করে তার সঙ্গে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট। এখানেই ক্ষান্ত নয়! সেই শিকার করা চিতাবাঘের মাংস দিয়েই চলল দেদার পিকনিক (Picnic)। সেখানেও থামল না দুষ্কৃতীরা! পিকনিক শেষে চিতাবাঘটির চামড়া ও থাবা পাচার করার চেষ্টা চলে! আর ঘটনায় সূত্র মারফত খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তিন যুবককে গ্রেফতার করল বন দফতর। চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ফাঁসিদেওয়া ব্লকে। ধৃতদের বয়ান শুনে চক্ষু চড়কগাছ বন দফতরের আধিকারিকদের। এই প্রথম চিতাবাঘের মাংস খাওয়ার ঘটনায় অবাক বন আধিকারিক থেকে পুলিশ প্রত্যেকে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকজন যুবকের সঙ্গে মৃত চিতাবাঘের ছবি ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসে ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো, সশস্ত্র সীমা বলের গোয়েন্দা বিভাগ ও বন দফতরের। ছবিগুলি হাতে আসা মাত্রই তড়িঘড়ি তদন্তে নামা হয়। টানা ১৫ দিন তদন্তের পর অবশেষে হদিশ মেলে ওই দুষ্কৃতীদের। এরপর এদিন এসএসবির গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে খবর মেলে ওই চিতাবাঘের ছাল নেপালে পাচারের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
খবর পাওয়া মাত্র কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের ফাঁসিদেওয়া রেঞ্জ, ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো ও এসএসবি যৌথভাবে অভিযানে নামে। ফাসিদেওয়া ব্লকের ফৌজিজ্যোতে অভিযান চালানো হয়। সেখানকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে ওই ব্লকেরই রায় লাইনের বাসিন্দা মুকেশ কেরকেট্টা ও পিতালুশ কেরকেট্টা নামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের চামড়াটি। কিন্তু চামড়াটি দেখে সন্দেহ হয় আধিকারিকদের। কারণ চামড়া থেকে চিতাবাঘের থাবাগুলি গায়েব ছিল। এরপর ওই দুজনকে ফের জেরা করা হয়। জেরায় মালবাজারের রানীচেড়া চা বাগানের বাসিন্দা তাপস খুড়া নামে আরেক যুবকের নাম উঠে আসে। তাকেও ঘোষপুকুর এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে এদিন বিকেলে গ্রেফতার করা হয়।
রেঞ্জ অফিসার সোনম ভুটিয়া বলেন, 'মৃত চিতাবাঘের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখা মাত্রই আমরা তদন্ত শুরু করি। এরপর অভিযানে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এই প্রথম শুনলাম যে চিতাবাঘের মাংসও তারা খেয়েছে। আর ওই চামড়া পাচারের উদ্দেশ্যে ধৃতরা খোঁজাখুঁজি করছিল। কিভাবে ওই চিতাবাঘটিকে মারা হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।' তবে এদিন তিনি ওই ঘটনার পরই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারণ মৃত চিতাবাঘের বিষয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশ বা বন দফতরকে কোনও খবর দেয়নি। ফলে গ্রামবাসীদের আরও সচেতন হতে হবে।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব সম্প্রতি চিতাবাঘটিকে মারা হয়েছে বা মারা গিয়েছে। কারণ তার চামড়ায় কাঁচা মাংস লেগেছিল। থাবাগুলি আলাদা বিক্রি করার কথা ছিল পাচারকারীদের। ১৫৬ মিটার লম্বা ও ৫০ মিটার চওড়া চামড়াটি। তবে বনদফতর কিংবা পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই মাংস রান্না করে খাওয়া হয়েছিল বলে ধারণা আধিকারিকদের। শনিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হবে। তাদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বনদফতর।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jalpaiguri