#হুগলি: ছোট ঘর থেকে বড় স্বপ্ন দেখা। এই প্রবাদটির সাক্ষাৎ উদাহরণ এবার সন্তোষ ট্রফির বাংলার অধিনায়ক মনোতোষ চাকলাদার। হুগলি -চুঁচুড়া শরৎচন্দ্র সরণির বাসিন্দা মনোতোষ, ১০ বাই ১০ এর টালির চালের ঘর থেকে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পথ চলা শুরু করেন। বাবা মন্টু চাকলাদার পেশায় রাজমিস্ত্রি, মা লীলা চাকলাদার পরিচারিকার কাজ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া সংসার তাদের।
ছেলে যখন রাজ্যের হয়ে অধিনায়কত্ব করছে, সেই সময় কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টিতে জলে ভাসছে টালির চালের ঘর। ইটের ঘর বহুদিন ধরে মেরামতের অভাবে জীর্ণ। ঘরের মধ্যে জায়গা এতটাই কম, একসাথে পরিবারের সবাই খেতে বসতে পারেন না। ছোট্ট মিটার ঘরের মধ্যে ছেলের যাবতীয় খেলার সরঞ্জাম রাখা। পরিবারের অবস্থা বলতে গেলে নুন আনতে পান্তা ফুরায়! কিন্তু তাতে কি? পরিবারের মুখে হাসিটা রয়ে গেছে কারণ সোমবার সন্ধ্যায় বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফির ফাইনালে অধিনায়কত্ব করবে তাদেরই ঘরের ছেলে।
মনোতোষের প্রথম উত্থান মোহামেডান ক্লাবের হয়ে ২০১৬ সালে। তারপর গোকুলাম কেরলের হয়ে আই লিগ ২০২০ তে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে সই। এভাবেই একের পর এক ধাপ পেরিয়ে বাংলার অধিনায়কের মুকুট নিজের মাথায় তুলে নিয়েছেন বছর বাইশের মনোতোষ। ডিফেন্ডার হিসেবে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন বহুবার। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলা একমাত্র পরাজিত হয়েছে কেরলের কাছেই। আবারো ফাইনালে মুখোমুখি বাংলা বনাম কেরল।
মনোতোষের মা লীলা দেবি জানান, ছোট থেকে বহু প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে মনোতোষ। খেলার জুতো কিনে দেওয়ার মতন সামর্থ্য ছিল না তাদের। পাড়া-প্রতিবেশীরা সাহায্য করে ছেলেকে খেলাধুলা করিয়েছেন। এখন তিনি প্রতিদিন ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করছেন যাতে বাংলাকে ফাইনালে জিতিয়ে ছেলে ঘরে ফেরে।মনোতোষের বাবা মন্টু চাকলাদার বলেন, "ছেলে ছোট থেকে সারা জীবন নিজের চেষ্টায় খেলাধুলায় যাবতীয় উন্নতি করেছে। আমরা যতটা পেরেছি ছেলেকে সাহায্য করেছি। ছেলের খেলার প্রতি অদম্য জেদই তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।"
মনোতোষের ফুটবল প্রশিক্ষক গোপী চক্রবর্তী বলেন, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পরা পরিবার থেকে উঠে এসেছে মনোতোষ। মনোতোষ নিজেই একটি স্ফুলিঙ্গ, আমরা তাতে শুধু একটু আগুন ধরাতে সাহায্য করেছি।" তিনি আরও বলেন, একদিন মনোতোষকে ভারতের জার্সি পড়ে খেলতে দেখবেন তিনি।এর আগে ৩২ বার সন্তোষ ট্রফি জিতেছে। ৩৩ তম ট্রফি মন্ত্রীর হাত ধরেই আসুক, সেটাই চাইছে গোটা রাজ্যবাসী। খেলায় হার-জিত থাকলেও ইতিমধ্যেই বাংলার অধিনায়ক মন জয় করে নিয়েছে গোটা হুগলিবাসীর।
Rahi Haldarনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।