কথায় আছে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানো। কিন্তু কখনো কী ভেবে দেখেছেন এই ঘোলটা আদতেও কি জিনিস ! কেমন হয় সেটা দেখতে, কিরকমই বা খেতে! তপ্ত গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা লস্যি আমরা তো প্রায়ই খেয়ে থাকি। এবার আলাপ করানো যাক আরেকটি সুস্বাদু পানিয়ের সাথে। তবে শহরতলীতে আদৌ কি এখন পাওয়া যায় এই ঘোল? উত্তর পেয়ে যাবেন নদীয়ার নবদ্বীপে। নবদ্বীপের বিখ্যাত দইয়ের কথা আমরা মোটামুটি সবাই জানি। সেই দই দিয়েই সুন্দর পদ্ধতিতে তৈরি হয় অতি সুস্বাদু এই ঘোল।বিগত ৪০ বছর ধরে নবদ্বীপের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামা তলার বটগাছের নিচে মাটির হাঁড়িতে ঘোল বিক্রি করেন জয়দেব ঘোষ। এর আগে প্রায় বছর কুড়ি এই ঘোল বিক্রি করতেন তার বাবা। বাবার অবর্তমানে তিনি এখন এই ব্যবসার সাথে যুক্ত । তবে বর্তমানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছুদিন ধরে জয়দেব বাবুর ছেলে যাচ্ছে বিক্রি করতে। তিনি ছাড়াও তার দুই ভাইও এই পেশার সাথে যুক্ত বলে জানান জয়দেব বাবু। মূলত দুধ জ্বাল দিয়ে সেটি যখন হালকা লালচে রঙে পরিণত হয় সেটিকে ঠান্ডা করে দই পাতা হয়। পরের দিন সকালে সেই দইকে বাঁশের তৈরি একটি বিশেষ লাঠির সাহায্যে ফাটিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তার সাথে জল মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু ঘোল। কোনরকম কেমিক্যাল ছাড়াই খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি হয় এই ঘোল বলে জানান জয়দেব বাবু।এখন তার ঘোলের সুনাম ছড়িয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে । বহু দুর দুরান্ত থেকে লোক এসে তার ঘোল খেয়ে সুনাম করেন। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও তার ঘোল খেয়ে সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলে জানান তিনি। তবে বর্তমানে করোনার জন্য তার ব্যবসায় কিছুটা ভাটা পড়লেও তার ঘোলের স্বাদ ভোলেননি নাবদ্বীপবাসী। এখন দেখার বিষয় বর্তমানের আধুনিক ঠান্ডা পানিয়ের সাথে এই প্রাচীন সুস্বাদু পানীয় তালে তাল মিলিয়ে চলতে পারে কিনা।