বীরভূম : করোনাকালে দীর্ঘ দু'বছরের কাছাকাছি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল (School)। সম্প্রতি অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল খোলার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার অনুমোদন দিলেও এখনও পুনরায় প্রাইমারি স্কুল খোলার কোনও রকম অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে এই পরিস্থিতিতে দুঃস্থ দরিদ্র পরিবারের খুদে পড়ুয়াদের দিশা দেখাচ্ছে কোভিড নৈশ বিদ্যালয় (Covid Night School)।
আরও পড়ুন Bengal News| Good News: বিশ্বেসেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক
বীরভূমের (Birbhum) সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আড্ডা গ্রামের ধর্মরাজ তলায় এমন একটি অবৈতনিক কোভিড নৈশ বিদ্যালয় চালু করা হয়েছে স্থানীয় কিছু মানুষ ও কলেজ পড়ুয়া, যুবক-যুবতীদের সহযোগিতায়। এই স্কুলে রবিবার বাদে সপ্তাহের প্রতিদিন পড়াশোনা করানো হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যা ছটা নাগাদ শুরু হয় স্কুল এবং শেষ হয় রাত্রি আটটায়।
স্কুলটি (Night School) মূলত সেই সকল পড়ুয়াদের নিয়েই চলে যাদের অভিভাবকরা দিনমজুর অথবা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কারণ তারা নিজেরা তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করানোর জন্য সময় দিতে পারেন না। এছাড়াও রয়েছে শিক্ষা ও আর্থিক অসঙ্গতি। যে কারণে এই সকল পরিবারের খুদে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুল খোলার পর বর্তমানে এখানে পড়ুয়া সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫।
অভিনব এই স্কুল (Bengal School) প্রসঙ্গে শিক্ষক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে এই সকল ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল। অন্যদিকে এইসকল ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা হয় দিনমজুর অথবা চাষবাসের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাদের পক্ষেও সময় দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এসব নানান প্রতিকূলতার কথা মাথায় রেখেই এমন স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।"
এই স্কুলটি রাত্রিকালীন এবং সরকারি স্কুল না হলেও সরকারি স্কুলের মতোই নিয়ম মেনে খুদেদের পড়াশোনা করানো হয় যাতে করে তারা এই স্কুলকে (School) নিজেদের স্কুল থেকে আলাদা না ভাবে। স্কুলের মতোই এখানে রয়েছে রেজিস্টার্ড খাতা। প্রতিদিন এখানে আসা পড়ুয়াদের উপস্থিতি নেওয়া হয় স্কুলের মতই। এছাড়াও রয়েছে ব্ল্যাকবোর্ড সহ অন্যান্য পড়াশোনার সামগ্রী।
আরও পড়ুন Bengal News: অবহেলিত, সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে ভেঙে পড়ছে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের বসতবাড়ি
এই স্কুলে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত কলেজ ছাত্রী অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "আমরা প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ভাগ ভাগ করে পড়ুয়াদের পাঠদান দান করছি। এতে ওদের যেমন শিক্ষালাভ হচ্ছে, ঠিক তেমনি আমাদেরও পড়াশোনার একটা ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। পাশাপাশি এই সকল ছেলেমেয়েদের শিক্ষা দিতে পেরে আমরাও খুব খুশি।"
কোভিড নৈশ বিদ্যালয়ের (Night School, Birbhum) এক পড়ুয়ার অভিভাবক শ্রীরাম মাল জানিয়েছেন, "আমাদের চাষবাস করে সংসার চলে। এখন স্কুল বন্ধ। আলাদা করে টাকা খরচ করে পড়ানোর মতো সামর্থ্য নেই। এই স্কুলটি হওয়ার কারণে আমরা ছেলেমেয়েদের এখানে পাঠিয়ে পড়ানোর সুযোগ করে দিতে পারছি। এই স্কুল না হলে ছেলেরা সব ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।"
মাধব দাস
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: School, South bengal news