#আলিপুরদুয়ার: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, “এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্থির হইয়া আছে৷ মানব আত্মা অমর আলোক অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে ৷”
অজস্র মানুষের শব্দহীন মিলনের মুক্তমঞ্চ এই গ্রন্থাগার। শিক্ষাকে সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে গ্রন্থাগারের বিকল্প নেই। গ্রন্থাগার হলো শিক্ষার আকর, যেখানে উত্তর রয়েছে হাজারো বছর ধরে জমে থাকা সমস্ত প্রশ্নের৷ বই থেকে মানুষ খুঁজে পায় কত অজানা প্রশ্নের উত্তর।
কিন্তু, বিজ্ঞান যত এগিয়ে যাচ্ছে, ততই যেন মানুষের কাছে ব্রাত্য হয়ে পড়ছে গ্রন্থাগারগুলি৷ দীর্ঘ করোনা অতিমারি কেড়ে নিয়েছে পাঠকদের গ্রন্থাগারে গিয়ে বই পড়ার অভ্যেস। ফলস্বরূপ, নির্দিষ্ট সময় গ্রন্থাগার খোলে৷ কিন্তু, সারাদিনে হাতেগোনা কয়েকজন পাঠককেই সেখানে দেখা যায়৷ একই চিত্র আলিপুরদুয়ার জেলা অতিরিক্ত গ্রন্থাগারে। পাঠকের অভাবে কার্যত শুনশান রেফারেন্স সেকশন। সারাদিন ধরে আসছেন হাতে গোনা কয়েকজন পাঠক। করোনার আগে যেখানে রোজই ভিড় জমতো, ভরে উঠতো সব বয়সের পাঠকদের উপস্থিতিতে, সেখানে বর্তমানে কার্যত পাঠকের অভাবে ধুঁকছে জেলা লাইব্রেরি।
এদিকে, জেলার সাহিত্যিক মহলে উঠছে নানান প্রশ্ন। শতবর্ষ প্রাচীন বহু ঐতিহ্যের সাক্ষী আলিপুরদুয়ারের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত আলিপুরদুয়ার জেলা অতিরিক্ত গ্রন্থাগার। যার আরেক নাম সপ্তম এডওয়ার্ড লাইব্রেরি। ১৯১৭ সালে স্থাপিত হয় এই লাইব্রেরি। গ্রান্থাগার স্থাপিত হওয়ার শতবর্ষ পেরিয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগে। গ্রন্থাগারের নিজেস্ব জমিতেই ভবন রয়েছে। পাশেই আবার রয়েছে পুরোনো কাঠের ভবন। ওই কাঠের ঘরেই আগে গ্রন্থাগার ছিল। পরবর্তীতে পুরো কংক্রিটের ঘর নির্মাণ করা হয়।
জানা যায়, গত দুবছরে জেলায় প্রায় ২২ হাজার সরকারি বই নষ্ট হয়, লাইব্রেরি বন্ধ থাকার সময় ঝড়-জল, উইপোকার দাপটে এই বইগুলি নষ্ট হয়ে যায়। নষ্ট হওয়া এই বইগুলির মধ্যে নামিদামি বহু সাহিত্যিকের সৃষ্টির পাশাপাশি দুষ্প্রাপ্য বহু প্রাচীন পুঁথি রয়েছে।
আলিপুরদুয়ার জেলা অতিরিক্ত গ্রন্থাগারের কর্মী সহরাও ওঁরাও বলেন, "এই গ্রন্থাগারে প্রায় ১৮ হাজারের উপর বই রয়েছে। আছে ২০০ বছরের পুরানো বই থেকে পুঁথি।করোনার আগে প্রচুর পাঠকদের আনাগোনা লেগেই থাকতো রোজ এই গ্রন্থাগারে। বই এর সংখ্যা বেশি থাকলেও পাঠকের সংখ্যা খুবই কম বর্তমানে।"
বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক মানবেন্দ্র দাস জানান, নতুন প্রজন্মের পাঠকদের গ্রন্থাগারমুখী করতে, বিভিন্ন গ্রন্থ উপন্যাসের পাশাপাশি চাকরির বিভিন্ন বই দরকার। এর সাথে পর্যাপ্ত ইন্টারনেট পরিষেবা ও কম্পিউটারের ব্যবস্থার মাধ্যমে গ্রন্থাগারগুলিকে সাজানো হলে আবার পাঠকেরা গ্রন্থাগারমুখী হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
Dependra Lahiriনিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Alipurduar