#কলকাতা: বিশ্ব নিদ্রা দিবসে ঘুম নিয়ে কথা তো হবেই! সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের পক্ষে কতটা উপকারী, সেই দিকেও আলোকপাত করা হবে স্বাভাবিক নিয়মেই। কিন্তু এই জায়গায় এসেই একটা হোঁচট খেতে হয়। পর্যাপ্ত ঘুম বলতে ঠিক কী বুঝি আমরা?
সাধারণ ভাবে দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর কথা বলা হয়। অনেকেই এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা। তাঁদের বক্তব্য, বয়স, শারীরিক অবস্থা, কাজকর্ম, ওজন-সহ একাধিক বিষয়ের উপরে নির্ভর করে ঘুমোনোর সময় পরিবর্তিত হয়। এই বিষয়ে একটি সময়সূচি দিয়েছে স্লিপ ফাউন্ডেশন (Sleep Foundation)। এক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ঘুমের সময় ৭-৯ ঘণ্টা। ৬৫ বছরের উর্ধ্বে ঘুমের সময় ৭-৮ ঘণ্টা। তরুণ-তরুণীদের জন্য ঘুমের সময় ৯-১১ ঘণ্টা। সাত বছরের নিচে ঘুমের সময় ১০-১৩ ঘণ্টা। এছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে ঘুমের সময় প্রায় ১৭ ঘণ্টা।
যদি নিয়ম মেনে ঘুমের পিছনে এই সময়টা দেওয়া যায় বয়স অনুযায়ী, তাহলে কী কী উপকার মিলবে দেখে নিন এক নজরে!
১. জটিল অসুখ থেকে মুক্তি দেয় ঘুম
সাধারণত আমরা দিনে খাটি আর রাতে ঘুমোই। সারা দিনের পরিশ্রমের ফলে যে প্রাণশক্তি অপচয়িত হয়, তা আবার রাতের বেলা ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার মতো করে পুষিয়ে নেয় ঘুম। ফলে ঘুম ঠিকঠাক না হলে হার্টের অসুখ, হজমের অসুখ, কোলোরেকটাল ক্যানসারের মতো একাধিক জটিল রোগ বাসা বাঁধতে পারে শরীরে।
২. বাড়তি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে ঘুম
শুনলে প্রথমটায় আশ্চর্য লাগতে পারে, কিন্তু এর পিছনে হিসেবটা খুব সোজা! আমরা যখন ঘুমোই, তখন আমাদের খিদে পায় না। কিন্তু ঘুম না হলে খিদে পাবে এবং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাওয়া হয়ে যাবে। এর জেরে বাড়তে থাকবে ওজন। কিন্তু ঘুম ঠিক হলে এই ব্যাপারটা ঘটবে না, ওজন থাকবে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।
৩. ক্লান্তি নিবারণ করে, শরীর ঠাণ্ডা রাখে ঘুম
এটা হিসেবের মধ্যেই পড়ে। যদি ঘুম ঠিক মতো হয়, তাহলে হৃদস্পন্দনের হার ঠিক থাকবে। রক্তচাপ থাকবে স্বাভাবিক। সারা দিনের পরিশ্রমের শেষে শরীর নিজেকে জুড়িয়ে নেওয়ার অবকাশ পাবে। কিন্তু ঘুম না হলে বিপরীত ক্রমে এর সবক'টা তৈরি করবে একাধিক সমস্যা।
৪. দুর্ঘটনা থেকে রেহাই দেয় ঘুম
যদি পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, যদি বিশ্রাম না পায় শরীর, তালে মাথা ভারী হয়ে থাকে, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়, অনেক সময়ে শারীরিক ভারসাম্যও বিঘ্নিত হয়। এমনটা হলে চট করে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। কিন্তু পর্যাপ্ত ঘুম তার হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
৫. সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখে ঘুম
যে ব্যক্তির ঠিক মতো ঘুম হয় না, তিনি নিজে তো অসুবিধায় থাকেনই, পাশাপাশি অস্বস্তিতে ফেলেন পরিবারের অন্য সদস্য, পোষ্য এবং প্রতিবেশীদেরও। সব মিলিয়ে সামাজিক শৃঙ্খলার ভারসাম্যটি নষ্ট হয়। এটিও রক্ষা করে একমাত্র পর্যাপ্ত ঘুম।