জলই যে জীবন সেটা আরও একবার প্রমাণিত হল। ঠাণ্ডা জল আমাদের তৃষ্ণা তো মেটায় বটেই! আবার ওই ঠাণ্ডা জলে সাঁতার কাটলে এক ধরনের কোল্ড স্টক প্রোটিন RBM3 নিঃসৃত হয় যার সরাসরি যোগাযোগ আছে ব্রেনের সঙ্গে। যা আমাদের স্মৃতিভ্রংশের হাত থেকে বাঁচায়!
লন্ডনের পার্লামেন্ট হিল লিডোতে কয়েকজন নিয়মিত সাঁতারুর উপর এই পরীক্ষা করেছে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁরা দেখিয়েছেন যে ঠাণ্ডা জলে সাঁতার দেওয়ার সময়ে শরীরে RBM3 নিঃসৃত হয় যার সরাসরি যোগাযোগ আছে আপার মস্তিষ্কের সঙ্গে। জলে সাঁতার কাটার সময় শক্তি ক্ষয় হয়, তা স্বত্ত্বেও এই RBM3 প্রোটিন সাঁতারুকে ক্লান্ত হতে দেয় না।
যে সব পশু শীতঘুমে যায়, তাদের শরীরেও এই প্রোটিন উৎপন্ন হয়। আমাদের শরীরে সাইন্যাপসেস যদি নষ্ট হয়ে যায়, তা হলে আমাদের মনঃসংযোগ করতে অসুবিধা হয় এবং মন সব সময় বিভ্রান্ত থাকে। RBM3 প্রোটিন শরীরে আবার নতুন করে সাইন্যাপসেস তৈরি করে। আর সেই জন্যই যাঁরা ঠাণ্ডা জলে সাঁতার কাটেন, তাঁদের ডিমেনশিয়ার মতো স্মৃতিভ্রংশের রোগ অনেক কম হয়। শীতকালে যখন ব্যাঙ বা সাপের মতো প্রাণী শীত ঘুমে চলে যায়, এদের শরীরে সাইন্যাপসিস ২০ থেকে ৩০% নষ্ট হয়ে যায়। তবে বসন্ত এলে সেটা আবার তৈরি হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন ডিমেনশিয়া শুরু হলে বা প্রাথমিক ভাবে ধরা পড়লে কোনও ওষুধ দিয়ে এই RBM3 উৎপাদন শরীরে বাড়িয়ে দেওয়া যায়। যাতে এই রোগ থেকে রোগী তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। শুধু ডিমেনশিয়া নয়, এই RBM3 প্রোটিন মস্তিষ্কজাত অন্যান্য অনেক রোগের বিরুদ্ধেও লড়াই করে। ইঁদুরের উপর গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছেন।বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে যে শরীর ঠাণ্ডা থাকলে মাথাও ঠাণ্ডা থাকে। সেই জন্য যাঁদের কোনও ক্ষত আছে বা যাঁদের হার্টের অসুখ আছে, তাঁদের সার্জারির সময়ে ঠাণ্ডা রাখা হয়।খবর মোতাবেকে, টানা তিন বছর ধরে এই গবেষণা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা সাঁতারুদের পরীক্ষা করে দেখেছেন যে এঁদের শরীরে RBM3 বেশি। অথচ পুলের ধারেই ছিল তাই চি ক্লাব, যেখানে সবাই মার্শাল আর্ট অভ্যেস করেন। অথচ তাঁদের শরীরে এই প্রোটিন পাওয়া যায়নি, কারণ তাঁরা সাঁতার কাটেন না। এই গবেষণা এখনও প্রকাশিত হয়নি। কারণ বিজ্ঞানীরা এখনও বোঝার চেষ্টা করছেন যে কোন ওষুধ দিলে RBM3 শরীরে উৎপন্ন করা যায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।