#টোকিও: একজন বাচ্চাকে ১০ মাস গর্ভে ধারণ করার পর থেকে তার জন্ম দেওয়া এবং তার ভালো-মন্দের বিষয়গুলি একজন মায়ের থেকে বেশি ভালো কেউই হয় তো বুঝতে পারেন না। সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় থেকেই নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত থাকেন একজন মা। কারণ একজন মায়ের কাছে প্রাথমিক প্রাধান্য যে তাঁর সন্তান। তাই নিজের বাচ্চাকে যে কোনও রকম ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে মায়েরা এক অপ্রত্যাশিত সীমা পর্যন্ত যেতেও একবারের জন্যও দ্বিধাবোধ করেন না।
সন্তানদের প্রতি মায়ের এই যত্ন নেওয়ার বিষয়টি প্রাচীন লোককাহিনী থেকে শুরু করে বর্তমানের সাংস্কৃতিক গ্রন্থগুলিতেও প্রতিফলিত হয়েছে। তবে, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন এক দায়িত্বশীল প্রোটিনের সন্ধান পেয়েছেন, যা একজন মাকে তাঁর বাচ্চাদের সুরক্ষার জন্য তাদের জীবনের ঝুঁকি নিতে বাধ্য করে।
জাপানের শারীরিক ও রাসায়নিক গবেষণা ইনস্টিটিউট (RIKEN)-এর বিজ্ঞানীরা মা ইঁদুর এবং কুমারী ইঁদুর নিয়ে একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। এই গবেষণায় তাঁরা দেখতে পান, মায়েদের ঝুঁকি গ্রহণের প্রবণতা তাঁদের ফোরব্রেনের একটি ছোট্ট অংশের দ্বারা সংঘটিত হয়ে থাকে। যার মধ্যে ক্যালসিটোনিন রিসেপ্টর (Calcitonin Receptor) নামে একটি প্রোটিন রয়েছে। ইঁদুরের মতো মানুষের মধ্যেও এই একই আচরণ প্রত্যক্ষ করেন গবেষকরা।
এই গবেষণার নেতৃত্বদানকারী কুমি কুরোদা (Kumi Kuroda) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিলেন যে, গবেষকরা বনমানুষের (Primates) উপর এই বিশেষ প্রোটিনের ভূমিকা অধ্যয়ন করবেন। “যা মানুষের সঙ্গে ঘটা বিষয়গুলির সঙ্গে অনেক বেশি সদৃশ্যমূলক হবে।” কেন না, মানুষ সহ ২০০টি স্তন্যপায়ী প্রজাতির বিচিত্র গ্রুপ এই বনমানুষ।
সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর মস্তিষ্কে হাইপোথ্যালামাস (Hypothalamus) থাকে যা তাদের মস্তিষ্কের একটি ছোট এবং কেন্দ্রীয় অংশ, যা মূল জীবনের প্রক্রিয়াগুলি পরিচালনা করে এবং কিছু হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া মস্তিষ্কের এই বিশেষ অংশে বিভিন্ন ধরণের নিউরন রয়েছে। কোন নিউরন পিতা-মাতার আচরণে অবদান রেখেছিল তা বুঝতে, গবেষকরা একটি প্ল্যাটফর্মের বিপজ্জনক প্রান্তে শিশুদের রাখেন। এর পর দেখা যায়, ভার্জিন ইঁদুরগুলি কিছুটা দ্বিধায় ছিল এবং নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত শিশু ইঁদুরগুলিকে উদ্ধার করতে পারে সক্ষম হয়নি। অন্য দিকে মা ইঁদুরটি ঝুঁকির পরোয়া না করেই তড়িঘড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাচ্চা ইঁদুর নিয়ে আসে। গবেষণার ওই ভিডিওটিতে দুই ধরনের ইঁদুরের এই বৈষম্যমূলক আচরণ স্পষ্ট দেখা গিয়েছে।
গবেষকরা দেখা গিয়েছে যে, কুমারী মেয়েদের তুলনায় প্রসবের পরে মায়েদের মধ্যে এই প্রোটিন দ্বারা প্রভাবিত নিউরনের সংখ্যা বেশি ছিল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।