#কলকাতা: লেখার একেবারে শুরুতে কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তর 'দেবীকে স্নানের ঘরে নগ্ন দেখে' কবিতাটির প্রসঙ্গ টেনে আনা খুব একটা ভুল হবে না। এই কবিতায় গ্রিক মিথোলজির টাইরেসিয়াসকে কবি হাজির করেছিলেন রূপকধর্মিতায়। দেবী এথেনাকে স্নানঘরে নগ্ন দেখে ফেলায় এই ভবিষ্যদ্বক্তার চোখদু'টি অন্ধ হয়ে যায়!
কিন্তু বিশেষজ্ঞ পল্লবী বার্নওয়ালকে চিঠি দিয়েছেন যে তরুণ, তাঁর সমস্যা আরও করুণ! তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর মা ফরাসি এবং বাবা ভারতীয়। ফলে, নগ্নতা নিয়ে তাঁর মায়ের তেমন কোনও দ্বিধাবোধ নেই। স্নানশেষে তিনি নগ্ন হয়েই বেরিয়ে আসেন বাথরুম থেকে, তার পর পোশাক পরে নেন। এই ঘটনা তরুণটির মনে অসম্ভব রকমের চাপ ফেলছে। তিনি জানতে চেয়েছেন পল্লবীর কাছে- ভারতীয় হোক বা অন্য সমাজ, বাড়িতে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ানো কত দূর যুক্তিসঙ্গত?
পল্লবী কী বলছেন, জেনে নেওয়া যাক এক এক করে!
১. সবার প্রথমে বিশেষজ্ঞার অভিমত, তরুণটিকে তাঁর অস্বস্তি কাটাতে হবে। মাকে নগ্ন দেখা অস্বস্তির কারণ তো বটেই, কিন্তু একটি কথা এক্ষেত্রে মাথায় না রাখলেই নয়- মা শুধুই একজন নারী নন, তিনি একজন মানুষও! অতএব তাঁর ব্যক্তিস্বাধীনতাকে সম্মান করতে শিখতে হবে।
২. যদি নারীর নগ্নতাই অসুবিধার কারণ হয়, তা হলেও দ্বিধা কাটিয়ে ওঠাটাই উচিৎ হবে। আমাদের দেশে প্রাচীন যে সব ভাস্কর্য দেখা যায়, তার কোনওটাতেই নারীদের উর্ধ্বাঙ্গে আবরণ দেখা যায় না। অতএব, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিসর্জন দেওয়াটাই ঠিক হবে!
৩. তবে, সব শেষে পল্লবী আরেকটি কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি! তিনি বললেই যে তরুণটির অস্বস্তি দূর হবে, এমন কোনও মানে নেই। এই তরুণটির মতো আরও অনেকেই আছেন, যাঁরা বাড়িতে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ানো মেনে নিতে পারেন না। সবার জন্যই তাই পল্লবীর পরামর্শ- এই রকম যদি হয়, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটির সঙ্গে নম্র ভাবে কথা বলে নিজের সমস্যাটা তাঁকে বোঝাতে হবে। তরুণটির জন্য বিশেষ পরামর্শ- মাকে বাথরোব ব্যবহার করার কথা বলা যায়!
যদিও বাড়িতে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ানোকে অসমর্থন করছেন না পল্লবী। বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তা অন্যের অস্বস্তির কারণ না হচ্ছে, এর মধ্যে কোনও ভুল নেই!
Pallavi Barnwal