#নিউইয়র্ক: করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই উত্তেজনা, উদ্বেগ আর চিন্তায় ভুগছেন? তাহলে জেনে রাখুন আপনিই একা নন। সারা বিশ্বে বহু মানুষ এই রকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। আর একে বলা হচ্ছে প্যানডেমিক প্যারানয়া।
জীবদ্দশায় এই রকম অতিমারীর ভয়াল প্রকোপ অনেকেই প্রত্যক্ষ করেননি। বহু মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। অনেকেই সুস্থ হয়েও অন্যান্য অসুখের গ্রাসে পড়েছেন। আরও ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে অর্থনীতির উপরে। বহু মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। ব্যবসা পড়েছে মুখ থুবড়ে। আর এই নানা নেগেটিভ ঘটনার প্রভাব পড়েছে মানুষের স্নায়ুতে। অনেকেই এই এত কিছু একসঙ্গে মেনে নিতে পারছেন না। আগামী ভবিষ্যতে কী হতে পারে, এই ভেবে তাঁরা অস্থির হয়ে পড়ছেন।
পুরো পরিস্থিতিটাই স্ট্রেস বা মানসিক চাপে পরিপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন দিনের পর দিন গৃহবন্দী হয়ে থাকা, অসুস্থ হলেই আত্মীয় পরিজনদের থেকে দূরে চলে যাওয়া, সর্বত্র মাস্ক, পিপিই স্যুট পরে থাকা, লকডাউন ইত্যাদি সব মিলিয়ে এই স্ট্রেস তৈরি হয়েছে। সব কিছু নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে আর তার থেকেই জন্ম নিচ্ছে উদ্বেগ, চিন্তা ও ভয় দেখা দিচ্ছে। সংক্ষেপে একেই বলা হচ্ছে প্যানডেমিক প্যারানয়া।
কিন্তু এই ভাবে দীর্ঘ সময় স্ট্রেসের কবলে থাকলে শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। কী ভাবে এই প্যারানয়া সামলাতে হয়, সেটা বলতে গিয়ে তাঁরা বলেছেন যে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিৎ সমস্যা চিনে নেওয়া। অর্থাৎ কেন আপনার চিন্তা হচ্ছে বা কেন আপনি ভয় পাচ্ছেন তার গোড়ায় যাওয়া প্রয়োজন। এর পরের পদক্ষেপ হচ্ছে এই নিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সময়ে একটি সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তোলা। আর এই সাপোর্ট সিস্টেমে থাকবেন বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয় স্বজনরা। কাছের মানুষদের সাহচর্যে প্যারানোয়া অনেকটাই কমে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
আমেরিকার ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট অ্যাডাম বরল্যান্ড দাবি করেছেন যে একজন ব্যক্তি যদি প্যারানয়ার শিকার হন, তাহলে তাঁকে নিজেকেই এটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তাঁকে এমন ভাবে দৈনিক রুটিন তৈরি করতে হবে যাতে এই সব চিন্তা না আসে। ঘুমের সময় ঠিকঠাক রাখা এবং কিছু ইতিবাচক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারলে প্যারানয়া অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।