#নয়াদিল্লি: আজকাল বহু মহিলাই এন্ডোমেট্রিওসিস (Endometriosis) বা চকোলেট সিস্টের (Chocolate cyst) সমস্যায় নাজেহাল। এটা আসলে একটা রোগ। আর এই রোগের ক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিয়াম বা জরায়ুর আস্তরণ জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠতে থাকে। যার জেরে পেলভিক অঞ্চলে ব্যথা, ঋতুস্রাব চলাকালীন মারাত্মক যন্ত্রণা, সহবাসের সময় ব্যথা, মলত্যাগ এবং প্রস্রাবের সময় যন্ত্রণার মতো উপসর্গ দেখা যায়। এখানেই শেষ নয়, এই রোগের কারণে অতিরিক্ত রক্তপাত এবং বন্ধ্যাত্বের মতো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যদিও এন্ডোমেট্রিওসিস একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনধারা এবং খাদ্যাভাসে পরিবর্তন করে সংশ্লিষ্ট সমস্যাটির উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কী খাওয়া যেতে পারে?
খাদ্যাভাস ঠিক থাকলে বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এন্ডোমেট্রিওসিসের ক্ষেত্রেও কিছু নির্দিষ্ট খাবার উপসর্গের জটিলতা কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এন্ডোমেট্রিওসিসে হওয়া প্রদাহ এবং ব্যথা উপশম করতে বেশি পরিমাণে খেতে হবে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। যেমন- ফল, সবজি, ডাল এবং গোটা শস্য ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ ফ্যাট খাওয়ার পরিমাণ বাড়ালে শরীরে প্রদাহ কমে। সেই সঙ্গে ব্যথা ও অস্বস্তিও দূর হয়। এই ধরনের খাবারগুলি হল স্যামন, অলিভ অয়েল, আখরোট, চিয়া সিড এবং ফ্লাক্স সিড ইত্যাদি। আবার ব্রোকোলি, গাঢ় সবুজ সবজি, বিনস্, বাদাম প্রভৃতি আয়রন সমৃদ্ধ খাবারও এক্ষেত্রে ভালো। যাঁদের সেলিয়্যাক রোগ রয়েছে, তাঁদের গ্লুটেন ফ্রি ডায়েটের পরামর্শ দেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, গবেষণায় এ-ও দেখা গিয়েছে যে, এই ধরনের ডায়েট মেনে চললে এন্ডোমেট্রিওসিসেও উপকার পাওয়া যায়।
লো-ফডম্যাপ (Low-FODMAP) ডায়েটও এন্ডোমেট্রিওসিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আসলে ফডম্যাপের অর্থ হল ফার্মেন্টেবল অলিগোস্যাকারাইডস্, ডিস্যাকারাইডস্, মনোস্যাকারাইডস্ এবং পলিওলস্। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, লো-ফডম্যাপ খাবারে এইসব পদার্থের পরিমাণ কম থাকে। তবে গ্লুটেন ফ্রি খাবারের মতোই এটিও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাওয়া উচিত।
আরও পড়ুন - ভারতীয় ছেলেদের জার্সি কেটে বানানো হত মহিলা ক্রিকেটারদের জার্সি! বিস্ফোরক অভিযোগ বিনোদ রাইয়ের
কী কী এড়িয়ে চলতে হবে?
কিছু খাবার এন্ডোমেট্রিওসিসে একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। যেমন- প্রসেসড ফুড এবং ফাস্ট ফুডের মতো ট্রান্স-ফ্যাট বেশি রয়েছে, এমন খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো।
রেড মিট বিশেষত প্রসেসড রেড মিটের মতো খাবার খেলে এন্ডোমেট্রিওসিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এছাড়া অ্যালকোহল, ক্যাফিন, কোলা, রেড মিট, অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটযুক্ত অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলি পরিমিত পরিমাণে খেলে সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এক্সারসাইজ কীভাবে সাহায্য করে?
জরায়ুর কলাকোষ কীভাবে বাড়বে, তা নির্ভর করে এস্ট্রাডিওল নামক এক ধরনের ইস্ট্রোজেনের উপর। উচ্চ মাত্রার এই ইস্ট্রোজেন শরীরে প্রদাহ ঘটায়, যা এন্ডোমেট্রিওসিসের উপসর্গগুলিকে আরও গুরুতর করে দিতে পারে। আর এক্সারসাইজ ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং হ্যাপি হরমোন নিঃসরণের মাধ্যমে ব্যথা ও অস্বস্তি দূর করতে পারে। তাই ধ্যান, যোগব্যায়ামের মতো সহজে করা যায়, এমন এক্সারসাইজ করা উচিত। তবে ইনটেন্স ওয়ার্কআউট এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এছাড়া হাঁটা, সাঁতার কাটা, এরোবিকসের মতো এক্সারসাইজও নিয়মিত করা যেতে পারে।
ঘুম, মানসিক চাপ এবং এন্ডোমেট্রিওসিস:
অপর্যাপ্ত ঘুম এবং দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণগুলিকে সবচেয়ে বেশি গুরুতর করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে রাতে ভালো ঘুম হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং স্ট্রেস এড়াতে কিছু নিয়ম মেনে চলা যেতে পারে-
একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচী অনুসরণ করা উচিত। যেমন- প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমোনো এবং জেগে ওঠা।
কমপক্ষে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে।
ঘুম না-এলে বিছানায় জোর করে শুয়ে থাকা উচিত নয়।
একটা ভালো বেডটাইম রুটিন বানিয়ে নিতে হবে
বিভিন্ন ডিভাইসের ব্যবহার এবং স্ক্রিন-টাইম সীমিত করতে হবে।
ঘুমোনোর আগে ভারী খাবার খাওয়া উচিত নয়।
এক্সারসাইজ করতে হবে নিয়মিত।
অ্যালকোহল বা ক্যাফিন সেবনের পরিমাণ কমাতে হবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Lifestyle