#কলকাতা: যৌনতার ধরন এবং এই বিষয় সংক্রান্ত মানসিকতা যেমন বহুমুখী, তেমনই বিচিত্র। কেউ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করেন, কেউ সেই টান অনুভব করে থাকেন সমলিঙ্গের প্রতি। কখনও কখনও শারীরিক মিলনের চেয়ে অনেকে বেশি যৌন আনন্দ অনুভব করে থাকেন স্রেফ অন্যকে চোখের দেখায় বা অন্যদের রতিক্রীড়া দেখায়, যাকে ভয়েরিজম (Voyeurism) বলা হয়ে থাকে। কখনও বা আবার মানুষ নয়, জড়বস্তুর প্রতি যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন অনেকে, এই বিষয়টাকে বলা হয়ে থাকে অবজেক্টোফিলিয়া (Objectophilia) বা অবজেক্ট সেক্সুয়ালিটি (Object Sexuality)।
যৌনতার ক্ষেত্রে একজনের পছন্দ অন্যের চোখে অস্বাভাবিক ঠেকলেও আদতে তাকে স্বাভাবিক বলেই গণ্য করতে হবে, এ কথা বার বার আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞা পল্লবী বার্নওয়াল। ঠিক সে রকম ভাবেই তিনি কারও প্রতিই যৌন আকর্ষণ না থাকা বা আসেক্সুয়ালিটিকেও (Asexuality) স্বাভাবিক বলেই ব্যাখ্যা করছেন।
পল্লবী জানিয়েছেন যে এই বিষয়টি নিয়ে তাঁর কাছে সম্প্রতি এক চিঠি এসেছে। লেখক জানতে চেয়েছেন- কারও প্রতিই যৌন আকর্ষণ না থাকাটা কি স্বাভাবিক? তা কি শারীরিক সুস্থতার লক্ষণ?
এই প্রসঙ্গে এসে সবার আগে পল্লবী একটা বিষয় উল্লেখ করতে ভোলেননি। তিনি সাফ জানিয়েছেন যে আদতে শারীরিক সম্পর্ক আমাদের ভালো থাকায় সাহায্য করে। কাজেই কেউ যদি সেটা ছাড়াই ভাল থাকতে পারেন, সুখে থাকতে পারেন, সে ক্ষেত্রে তাকে অস্বাভাবিক বলার কোনও কারণ নেই!
পল্লবী বলছেন যে যৌনতা আমাদের কিছু শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে উপকার দেয়। যেমন, তা আয়ু বৃদ্ধির সহায়ক, হার্ট ভালো রাখে, সঙ্গী বা সঙ্গিনীর চোখে পরিতৃপ্তির ঝলক আত্মশ্লাঘা বাড়িয়ে মন ভালো রাখে। কিন্তু এই সব কিছুই যৌনতা ছাড়াও পাওয়া যায়। শরীরচর্চা করলে এ ক্ষেত্রে কাজ হয়, ক্রিয়েটিভ কোনও কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে সেটা দেখে সবাই যখন প্রশংসা করেন, তখনও একই রকম আত্মশ্লাঘা অনুভূত হয়।
তাই পল্লবীর পরামর্শ- যৌনতায় থাকা প্রয়োজনীয় নয়, কিন্তু মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং বন্ধুত্বে থাকা প্রয়োজনীয়। কারও প্রতি যৌন আকর্ষণ না থাকার মানে এই নয় যে সেই ব্যক্তির কাউকে ভালোবাসার ক্ষমতা নেই। বরং সেটা সর্বতো ভাবেই আছে। তাই সমাজিক মেলামেশা বন্ধ করলে চলবে না!
Pallavi Barnwal