আমাদের বেশিরভাগেরই সাধারণ স্বভাব প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন রাখা। কিন্তু সেই অভ্যাসের ফল মারাত্মক হতে পারে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা। বুক পকেটে ফোন রাখা সম্ভব নয়। কারণ, যেখানেই যাতায়াত করতে যান না কেন, তাতে ফোন চুরি যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্ত তার বদলে প্যান্টের পকেটে যদি নিয়মিত ফোন রাখার অভ্যাস থাকে, তাহলে আরও বড় সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে পুরুষরা। সমস্যাটা বিশেষত পুরুষদের হতে পারে বলে জানাচ্ছে গবেষণা।
পুরুষেরা প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন রাখলে তাঁদের প্রজননের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যুক্তরাজ্যের এক্সেটর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বহুদিন আগেই তাঁদের একটি গবেষণায় এই তথ্য প্রকাশ করে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সেই বিষয়ে আজও মানুষের হুঁশ ফিরেছে বলে মনে হয় না। এক্সেটর বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োসায়েন্সের গবেষক ফিয়োনা ম্যাথিউসের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ সংক্রান্ত বিগত ১০টি গবেষণার রিভিউ করেন এবং এক হাজার ৪৯২টি নমুনা পর্যবেক্ষণ করেন। মোবাইল ফোন ব্যবহারে ক্ষতির বিষয়টি পরিষ্কারভাবে জানতে এই উদ্যোগ নেন তাঁরা।
গবেষণা সংক্রান্ত নিবন্ধটি প্রকাশিত হয় ‘এনভায়রনমেন্টাল ইন্টারন্যাশনাল’ সাময়িকীতে। গবেষক ম্যাথিউস বলেন, সারা বিশ্বে প্রচুর মোবাইল ফোন ব্যবহূত হচ্ছে। পরিবেশে এর উন্মুক্ত ব্যবহারে সম্ভাব্য ভূমিকাগুলো আরও পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। ম্যাথিউস স্বীকার করেছেন, তাঁরা যে গবেষণা করেছেন তাতে দেখা গেছে মোবাইল থেকে নির্গত হওয়া রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন শুক্রাণুর গুণগত মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এ ফলে যৌন জীবনে সরসারি প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও এর ফলে সন্তান উৎপাদনে পুরুষের যে ভূমিকা থাকা উচিত, তাতেও প্রভাব পড়তে পারে। শুক্রাণুর অভাব দেখা দিতে পারে। শুধু মাত্র প্যান্টের পকেটেই নয়, ফোনের রেডিয়েশনের বিরূপ প্রভাব শরীরের সর্বত্রই যে পড়ছে, সে কথা জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেছেন, বুকে ভাইব্রেট মোডে ফোন রাখলে যেমন সমস্যা হয়, তেমনই ফোনের রেডিয়েশনের একটা প্রভাবও পড়ে। বুকে সেই রেডিয়শেনর প্রভাবে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলে চিকিৎসকদের একাংশের মত।
তাহলে মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপায় কী? চিকিৎসকরা বলছেন, একটি আলাদা ব্যাগ ব্যবহার করতে। বা যে ব্যাগ ব্যবহার করে আপনি অফিস বা অন্যত্র যাচ্ছেন, সেটিতেই মোবাইল ফোনটি রাখতে। যাতে ফোন নিতেও অসুবিধা হবে না, আবার রেডিয়েশনের হাত থেকেও বাঁচবে শরীর। টানা বেশিক্ষণ কানে লাগিয়ে ফোনে কথা বলাতেও আপত্তি করেছেন অনেক চিকিৎসক। তাতে শ্রবণ যন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এখানেও প্রভাব বিস্তার করছে রেডিয়েশন। সেক্ষেত্রে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করে অনেক নিরাপদ।