#নিউ ইয়র্ক: প্লাস্টিক দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, রাসায়নিক দূষণ, বিশ্ব উষ্ণায়ন- এই সবের কারণে যে পৃথিবীর অনেক প্রাণীকুল অবলুপ্তির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে, সেই সংক্রান্ত নানা সমীক্ষাপত্র নিয়ে মাঝে মধ্যেই আলোকপাত করে থাকেন বিজ্ঞানীরা। এই বারে এক চিকিৎসকের আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে বাস্তুতন্ত্রের সামাজিক প্রাণী অর্থাৎ মানুষের কথা। শানা সোয়ান (Shanna Swan) নামের নিউ ইয়র্কের মাউন্ট সিনাইয়ের ইকান স্কুল অফ মেডিসিনের এক এপিডেমিওলজিস্ট তাঁর নতুন বইয়ের মাধ্যমে সচেতন করে দিতে চেয়েছেন আমাদের। জানাচ্ছেন যে আর বড় জোর বছর চব্বিশ, ২০৪৫ সালের মধ্যেই পৃথিবীর একটা বড় অংশের পুরুষেরা নির্বীর্য হয়ে পড়বেন। তাঁদের শরীরের শুক্রাণু উৎপাদনের ক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাবে পুরোপুরি ভাবে যা মানবসভ্যতাকে একটু একটু করে অবলুপ্তির মুখে ঠেলে দেবে।
কাউন্ট ডাউন নামের বইতে শানা তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে একটি পরিসংখ্যানও পেশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে সারা পৃথিবীর নিরিখে পুরুষদের শরীরে শুক্রাণু উৎপাদনের পরিমাণ কমে গিয়েছে ৫৯ শতাংশ। পশ্চিম গোলার্ধের দেশগুলোয় এই সমস্যা বিশেষ করে প্রকট করে উঠেছে। সেই হিসেবের সূত্র ধরেই তিনি দাবি করেছেন যে পৃথিবীর মধ্যভাগের দেশগুলোয় ২০৪৫ সালের মধ্যে অনেক পুরুষ পুরোপুরি ভাবে নির্বীর্য হয়ে পড়বেন। একই সঙ্গে, মহিলাদের সন্তানপ্রসব নিয়েও একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন শানা। বলছেন যে ১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে বিশ্ব উর্বরতা বা গ্লোবাল ফার্টিলিটি কমে গিয়েছিল ২.৪ শতাংশ। আপাতত সেই সংখ্যাটা এসে ঠেকেছে ২.১ শতাংশে।
প্রজননের হার কমে যাওয়ার নেপথ্যে শানা দায়ী করেছেন নানা ধরনের রাসায়নিক দূষণকে। তিনি বলছেন যে সারা বিশ্বেই মানুষ এমন বহু জিনিস ব্যবহার করে চলেছে, যার মধ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। আর তার জেরেই পুরুষদের শরীরে শুক্রাণু উৎপাদনের হার কমে যাচ্ছে, বয়ঃসন্ধিকাল থেকে দেখা দিচ্ছে পুরুষাঙ্গ-সংক্রান্ত নানা সমস্যা। অন্য দিকে, মহিলাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বয়ঃসন্ধি, যা তাদের সন্তানপ্রসবে সমস্যা তৈরি করছে। শানার বক্তব্য- মূলত পাঁচটি কারণে কোনও প্রাণীকুল অবলুপ্তির পথে এগিয়ে যায়, মানুষের ক্ষেত্রে তার তিনটিরই উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এছাড়াও বিশ্ব উর্বরতার হার কমে আসার নেপথ্যে শানা দায়ী করছেন জীবনযাত্রার ধরনকে। তিনি জানিয়েছেন যে সমাজে এখন নিরোধকের ব্যবহার কল্পনাতীত ভাবে বেড়ে গিয়েছে। সন্তানকে বড় করে তোলা বর্তমান সময়ে খুবই খরচসাপেক্ষ এক বিষয়, সেই কারণেই অনেক দম্পতিই এখন আর সন্তান চান না! স্বাভাবিক ভাবেই তা সভ্যতায় মানুষের সংখ্যা কমিয়ে দিচ্ছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Fertility