#নয়াদিল্লি:চলতি বছর অনেক দিক থেকেই একেবারে অন্য রকম ভাবে ধরা দিয়েছে মানুষের কাছে। সারা বিশ্ব জুড়েই এ কথা সত্যি প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে। যার মূলে রয়েছে মারণ-ভাইরাস করোনা (Coronavirus)। কোভিড ১৯-এর ক্রমশ বেড়ে চলা সংক্রমণ রোধ করার লক্ষ্যে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই এই বছরের শুরুর একটু পরে আরম্ভ হয়েছিল লকডাউনের পালা। অতিমারীর আবহে অসুস্থ বা মৃতের তালিকায় যাতে নাম না ওঠে, সেই জন্য মানুষ নিজেকে এক রকম নিরুপায় হয়েই করে ফেলেছিল ঘরবন্দী!
আর সেই লকডাউন-ই আশীর্বাদের মতো নেমে এসেছিল প্রকৃতির প্রাণীজগতে। আমাদের চারপাশে জলে এবং স্থলে এমন অনেক প্রাণীই আছে, যারা শব্দদূষণ বিন্দুমাত্র সহ্য করতে পারে না। ও দিকে মানুষের সভ্যতার মূল কথাই তো হল বর্তমানে যান্ত্রিক কলরব, তার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যেন অসম্ভবের সামিল। ফলে এই লকডাউনে যখন চারপাশ ছিল সুনসান, মনের সুখে আর নির্ভয়ে মানুষের বসতির কাছাকাছি বিচরণ করতে পেরেছে অনেক প্রাণী। বছর শেষের মুখে ডুব দেওয়া যাক সেই সুখস্মৃতিতে!
১. পাখির কূজন
কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় একদা লিখেছিলেন যে এ দেশের মানুষ পাখির ডাকে যেমন ঘুমিয়ে পড়ে, তেমনই আবার পাখির ডাকে জেগে ওঠে। একদা কথাটা খেটে যেত এই দেশের মানুষের সভ্যতার পক্ষে সন্দেহ নেই। চলতি বছরে লকডাউনের সময়ে সেই কথা আবার সত্যি হয়ে দেখা দিল। চারপাশে লকডাউনের সময়ে শহরবাসী দেখেছেন নানা জাতের পাখি। এত পাখি যে শহরে থাকতে পারে, তা আগে কল্পনাও করা যায়নি! প্রাণিবিদরা বলছেন, শব্দদূষণ না থাকায় সেই ব্যাপারটা বেশ কিছু পাখি, বিশেষ করে জেব্রা ফিঞ্চের প্রজননের সহায়ক হয়েছে।
২. হরিণ গতি
ভারতীয় প্রাচীন সাহিত্যে মানুষের বসতির কাছাকাছি হরিণের বিচরণের উল্লেখ মেলে ঘন ঘন। সেই সব দিন মূর্ত হয়ে উঠল লকডাউনের সৌজন্যে। অসমের এক সমবায় বসতি থেকে তিরুপতির মন্দির এলাকা- হরিণ ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে দেশের নানা প্রান্তে। জাপানের নারা শহরেও হরিণ ঘুরে বেড়ানোর নানা ছবি আর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
৩. সাগরজলে তোলপাড়
প্রাণিবিদরা বলেন, নৌযানের আওয়াজ না কি হাম্পব্যাক হোয়েলরা ( Humpback Whales) একেবারে সহ্য করতে পারে না, সেটা তাদের প্রজননেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এই লকডাউনে সমুদ্রের বুক চিরে জলপোত যাতায়াত করেনি। পরিণামে বিশ্বের নানা প্রান্তে ইতিউতি দেখা গিয়েছে সাগরজলে হাম্পব্যাক হোয়েলের বিশাল শরীর নিয়ে মনের সুখে আলোড়ন!
৪. চারপাশে চারপেয়ে
লকডাউনের কল্যাণে সান ফ্রান্সিসকোর জনবসতিতে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়িয়েছে নেকড়ের সমগোত্রীয় চারপেয়ে প্রাণী কোয়েত (Coyote)। অন্য দিকে, ইউনাইটেড কিংডমের মানুষ সাক্ষী থেকেছেন বিরল প্রজাতির হেজহগের (Hedgehog) বিচরণের।
৫. সাগরবেলার শোভা
অলিভ রিডলি সি টার্টল (Olive Ridley Sea Turtles) নামে বিরল প্রজাতির কচ্ছপও লকডাউনের সৌজন্যে দেখা গিয়েছে ওড়িশার গাহিরমাথায়। মানুষের উপদ্রব না থাকায় জল থেকে উঠে এসে নির্ভয়ে তারা ডিম পেড়েছে সৈকতে।