SHANKU SANTRA
#কলকাতা: চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে, শোধ দিতে না পেরে বার বার হুমকি মুখে পড়েছিল দশরথ মল্লিক। আর সেই লজ্জায় নিজের গলার নলি কেটে আত্মঘাতী হলেন বছর তেত্রিশের যুবক। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে হেস্টিংস এলাকাতে। গত এক বছরে অতিমারিতে সংসারে রোজগার বলে কিছু ছিল না। পরিবারে মোট ১৩ জন সদস্য। পরিবারের কেউ লোকের বাড়িতে কাজ করেন, কেউ সুইপারের কাজ করে সংসার চালান।
এক বছর ধরে পরিবারের সবাই রোজগারহীন হয়ে পড়েছিলেন। সংসার চালাতে, বাধ্য হয়েই নানা জায়গা থেকে, সুদে কটাকা ধার নিতে থাকেন দশরথ। দশরথের বাবা কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঝাড়ুদারের কাজ করতেন। বাবা মারা যাওয়ার পর মা গঙ্গোত্রী দেবী সাড়ে ন’হাজার টাকা করে পেনশন পান। সেই টাকাটাও প্রতিমাসে সুদ কারবারিরা নিয়ে চলে যায়। হেস্টিংস এলাকায় আচম্বিত শাহ রোডে দশরথের বাড়ি। এই এলাকার সুদ কারবারি বিট্টু, মহেশ, রাজকুমার, সুন্দরীদের কাছ থেকে শতকরা ১০,১৫,২০ টাকা হারে সুদে টাকা ধার নিয়েছিলেন দশরথ। এদের কাছে সুদে আসলে টাকার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল অনেকটাই ।
দশরথ নিয়েছিলেন আড়াই লক্ষ টাকা । সেটা বেড়ে এক বছরে পাঁচ লাখ পেরিয়ে গিয়েছিল। গতকাল এক পাওনাদার এসে খুনের হুমকি দিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপর নিজের মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেননি দশরথ। নিজের অপমান আর পরিবারের অপমানের জ্বালায় আত্মঘাতী হন তিনি। দশরথের বাবা যেহেতু চাকরি থাকাকালীন মারা গেছিলেন সেহেতু বাবার চাকরির জন্য কাগজপত্র জোগাড় করতে বেশ টাকা খরচ করেছিলেন দশরথ । সেই চাকরি পাওয়ার বহুদিন ধরে চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। চাকরি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছিল না দশরথ। শেষ পরিণতি আত্মহনন। দশরথের স্ত্রী সোনি মল্লিকের কথায়, ‘‘এক বছর হল বাবুর বাড়িতে আর ঢুকতে দিচ্ছে না। করোনা যতদিন থাকবে আমাদের কাজ থাকবে না। আর কাজ নেই বলেই স্বামীকে সাহায্য করতে পারলাম না। ও অপমান সহ্য করতে পারত না। মরে গেল!' এই বলতে বলতে মূর্ছা যান সোনি।