#কলকাতা: ২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম রাজনৈতিক দল হিসেবে নিজেদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন কালীঘাটে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয় থেকে নিজে মুখে ২৯৪ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যাশামতো বেহালা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে দলত্যাগী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করেছেন মমতা। 'রত্না' অস্ত্রেই এবার শোভন-বধ করতে চায় তৃণমূল। যদিও বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায় সেখানে আদৌও দাঁড়াবেন কি না, তা নিয়ে বিজেপির তরফে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানা যায়নি।
দলের সম্ভাব্য তালিকা প্রকাশের সময় থেকেই বেহালা পূর্বে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের নাম শোনা গিয়েছিল। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছিল, রত্নাকে দল তৈরি থাকার নির্দেশও দিয়েছিল। তবে প্রকাশ্যে তা নিয়ে মুখ খোলেননি রত্না। বরাবরই তিনি দাবি করেছিলেন, দল যা নির্দেশ দেবে তা মাথা পেতে পালন করবেন রত্না। এদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নাম প্রকাশের পর পরই রত্নাও স্বামী শোভনের কেন্দ্রে দাঁড়াতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। এর পর বিজেপি যদি শোভনকে তাঁর পুরনো কেন্দ্রে পার্থী করে, তা হলে স্বামী-স্ত্রীর সরাসরি লড়াই দেখবে বাংলা।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট যেদিন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে জেপি নাড্ডার হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন, সেদিনই বেহালার এক দলীয় অনুষ্ঠানে এসে রত্নাকেই স্বামীর ছেড়ে যাওয়া দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন মমতা। কিন্তু ওই বছরই ভাইফোঁটার দিন আবার শোভন-বৈশাখীকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে ফোঁটা নিতে গেলে সমীকরণে বদল ঘটে। সেই সময় তৃণমূলের অন্দরেই গুঞ্জন উঠেছিল শোভনের 'ঘর ওয়াপসি' কেবল সময়ের অপেক্ষা। আরও জানা গিয়েছিল, শোভন-বৈশাখীরা শর্ত দিয়েছেন, রত্নাকে যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এই সময়ে বেহালা পূর্বের 'কো-অর্ডিনেটর'-এর দায়িত্ব দিয়েও সরিয়ে দেওয়া হয় রত্নাকে।
পারিবারিক সমস্যার জেরে শোভন যখন মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কের বহুতলে গিয়ে ওঠেন, তখনও বেহালা পূর্বের বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। শোভনের অনুপস্থিতিতে রত্নাই ওই এলাকার পুর পরিষেবার দায়িত্ব হাতে তুলে নিয়েছিলেন। তৃণমূলে ফেরার শর্ত হিসেবে তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকেও সরাতে বলেছিলেন শোভন-বৈশাখী, এমনটাই জল্পনা তৈরি হয়েছিল তখন। কিন্তু কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষের পর করোনা সংক্রমণের কালে রত্নাকেই আবার 'কো-অর্ডিনেটর' নিয়োগ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ দিকে বেহালা পশ্চিমে দাঁড়াচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী হলেও সেখানে প্রচারে থাকবেন রত্না চট্টোপাধ্যায় বলে জানা যাচ্ছে। মূলত রত্না চট্টোপাধ্যায়ই হতে চলেছে এবার শোভনের জন্য তৃণমূলের একমাত্র ভরসা।