#কলকাতা: মুকুন্দপুর আমরিতে শিশু মৃত্যুর ঘটনায় শেষমেশ সাসপেন্ড হলেন ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় ৷ সঙ্গে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে তদন্ত চলবে ৷ তদন্তের নির্দেশ মুকুন্দপুর আমরি কর্তৃপক্ষের ৷ কীভাবে মৃত্যু আড়াই বছরের ঐত্রির? তদন্ত করবে ৬ সদস্যের কমিটিও ৷
এদিকে মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে ঐত্রির মা জানিয়েছিলেন, ‘ইউনিট হেড জয়ন্তীকে সরাতে হবে ৷ সরাতে হবে অভিযুক্ত চিকিৎসককে ৷ সবাইকে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে ৷ ২ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে অনশন ৷ আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব ৷
শিশুমৃত্যুকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল মুকুন্দপুর আমরিতে ৷ মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ ভুল ইঞ্জেকশনের ফলেই মৃত্যু হয় শিশুর ৷ সময়ে অক্সিজেন মাস্ক না মেলার সঙ্গে সঙ্গে ভুল ইনজেকশনেই ঐত্রির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। জ্বর নিয়ে মুকুন্দপুরের আমরিতে ভর্তি করা হয় ঐত্রি দে-কে। সেখানেই বুধবার সকালে মৃত্যু হয় কামালগাজির আড়াই বছরের শিশুর। পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের পরিবারের ৷ হাসপাতাল চত্বরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিশুর পরিবারের লোকজন ৷
এই বিক্ষোভ সামলাতে মাঠে নামেন হাসপাতালের ইনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় ৷ শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ইউনিট হেড অসংবেদনশীল আচরণ করেন পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে ৷ শুধু তাই নয়, পরিবারের লোকদের রীতিমতো শাসানিও দেন তিনি ৷ সংবাদ মাধ্যমের সামনে মৃতের পরিবারকে হুমকি দিয়ে ইউনিট হেড বলেন, ‘এখানে মাস্তানি করবেন না ৷ আমার থেকে বড় মস্তান কেউ নেই ৷ ’ ইউনিট হেডের আচরণ নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে মুকুন্দপুর আমরিতে ৷
পরে অবশ্য উত্তেজনার চাপে পড়ে ক্ষমাও চান তিনি ৷ কানে হাত দিয়ে ক্ষমার ভান করেন ইউনিট হেড জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায় ৷ জয়ন্তী চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দাবি পরিবারের ৷
এদিনই ডিসচার্জ হওয়ার কথা ছিল ছোট্ট ঐত্রির। কিন্তু ডিসচার্ড হওয়ার বদলে নিজের ফুটফুটে আড়াই বছরের মেয়ে ঐত্রিকে চোখের সামনে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখেছেন মা শম্পা দে। বাধা মানছে না শোক। বারবারই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন সন্তানহারা মা।
১৫ জানুয়ারি জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে মুকুন্দপুর আমরিতে ভর্তি করা হয় কামালগাজির বাসিন্দা ঐত্রিকে। সঙ্গে ছিলেন শম্পাও। সুস্থ হয়ে উঠছিল ঐত্রি। মঙ্গলবার হাসপাতালের প্লেরুমে মায়ের সঙ্গে খেলাও করে সে। মায়ের অভিযোগ, বুধবার সকালে মেয়েকে একটি ইঞ্জেকশন দেন নার্স। তারপরই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। সেই সময়ে অক্সিজেন মাস্ক খুঁজেই পাননি নার্স বলে দাবি তাঁর।
তখন ঘড়িতে ভোর সাড়ে ছটা থেকে সকাল আটটা। ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট ঐত্রি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিশুর। তবু মন মানছে না পরিবারের। আর ফিরবে না মেয়ে। কিন্তু যাদের জন্য আর ঐত্রীর মুখে মা ডাক শুনতে পাবেন না কোনোদিন, তাঁদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার শোকার্ত মা, পরিবার পরিজন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: AMRI, Child death