হোম /খবর /কলকাতা /
'রাজনীতিতে এসে বোধহয় ঠিক করিনি', আফশোস তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারির

Manoranjan Bapari: 'রাজনীতিতে এসে বোধহয় ঠিক করিনি', আফশোস তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারির

বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ Photo-Facebook

বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ Photo-Facebook

বিধায়ক হওয়ার পরই মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য একটি টোটো কিনেছিলেন একদা রিকশা টানা মনোরঞ্জন ব্যাপারি (Manoranjan Bapari)৷

  • Last Updated :
  • Share this:

#কলকাতা: রাজনীতিতে এসে তিনি ভুল করেছেন৷ এমনটাই মনে হচ্ছে বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ নিজের ফেসবুক পেজেই একটি পোস্টে এই মন্তব্য করেছেন প্রথমবার বিধায়ক হওয়া মনোরঞ্জনবাবু৷ বিধায়ক হওয়ার পর মানুষের প্রত্যাশার চাপেই যে তাঁর এমন উপলব্ধি, সেকথাও স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি৷

বিধায়ক হওয়ার পরই মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য একটি টোটো কিনেছিলেন একদা রিকশা টানা মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ বরাবর ছাপোষা জীবনযাপন করে আসা এই সাহিত্যিকের পরিকল্পনা ছিল, টোটো চালিয়েই মানুষের দোরে দোরে পৌঁছে তাঁদের সমস্যার কথা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করবেন৷ বলাগড়ের বিধায়কের এ হেন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অসংখ্য মানুষ৷

কিন্তু বাস্তবে মনোরঞ্জন ব্যাপারির অভিজ্ঞতা হচ্ছে অন্যরকম৷ কারণ নিজেদের সমস্যা নিয়ে হাজারো মানুষ প্রতিদিন তাঁর দুয়ারেই ভিড় করছেন৷ বিধায়ক হলে যেটা স্বাভাবিক৷ কিন্তু প্রতিটি মানুষ তাঁর থেকে যেভাবে নিজেদের সমস্যার সমাধান পেতে চাইছেন, সেই প্রত্যাশা পূরণ করা যে সম্ভব না, তা নিজেও বুঝতে পারছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ আর সেটাই তাঁর বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মনোরঞ্জন ব্যাপারি কথায়, মানুষের কান্না, 'হাহাকার তাঁর বুকের ভিতরে ধারালো চাকুর মতো রক্তক্ষরণ ঘটাচ্ছে৷'

মনোরঞ্জন ব্যাপারি লিখেছেন, 'আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি। সত্যিই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি। যখন দূরে ছিলাম, যখন তেমন ভাবে কিছু জানতাম না, খানিক সুখে ছিলাম। এখন সব দেখে জেনে - সরাসরি যুক্ত হয়ে আর কোনো রাতেই ভালো মতো ঘুমাতে পারছি না।কী এক কষ্টে মাঝরাতে উঠে পায়চারী করতে বাধ্য হই।'

বলাগড়ের বিধায়কের কথায়, মানুষ প্রত্যাশা দেখে মনে হচ্ছে তাঁর কাছে কোনও জাদুকাঠি আছে৷ যা দিয়ে তিনি সব সমস্যার সমাধান করতে পারবেন৷ ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'যে বেকার সে ভাবছে চাইলেই আমি তাকে একটা চাকরি দিয়ে দিতে পারি, যার ভাঙা ঘর তাকে দিতে পারি একটা মাথা গোঁজার সুন্দর আবাস। যে অসুস্থ তাকে দিতে পারি সুচিকিৎসা। সেই আশায় তারা সূর্য ওঠার সাথে সাথে এসে আমার দরজায় দাঁড়িয়ে পড়ছে। যে ভিড় রাত এগারোটা বারোটার আগে কম হয়না। তাদের কাতর কান্না, হাহাকার আমার বুকে যেন ধারালো চাকুর মতো চিরে চিরে বসে যায়। রক্ত ক্ষরণ ঘটায়। '

আফশোসের সুরে মনোরঞ্জন ব্যাপারি সবশেষে লিখেছেন, 'ওরা আমাকে ঈশ্বরের সমতুল শক্তিমান বলে মনে করে, যার কাছে যা চাওয়া যায় তা পাওয়া যায়। কিন্তু আমি যে অতি তুচ্ছ নগণ্য একজন মানুষ। আমি যদি পারতাম তাহলে সবার সব চোখের জল, সব হাহাকার, না পাওয়ার বেদনা এক নিমেষে মুছে দিতাম। ওরা আমাকে ঈশ্বর ভাবছে৷ কিন্তু আমি যে সেই খড় মাটি রঙের একটা মুর্তি ছাড়া আর কিছুই নই।'

এ দিন প্রথমবার রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনে অংশ নেন মনোরঞ্জন ব্যাপারি৷ বিধানসভায় এসে অবশ্য অধিবেশন কক্ষের ভিতরের ছবি দিয়ে বলাগড়ের বিধায়ক লিখেছেন, 'এসে গেছি বিধানসভায়। বসে আছি লাষ্ট বেঞ্চে। জীবনে প্রথমবার এখানে প্রবেশ পেয়েছি। অনক কিছু শিখতে আর জানতে হবে। তার পর বলতে হবে।'

যদিও মনোরঞ্জন ব্যাপারির ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন পরিষদয়ীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ পার্থবাবু বলেন, 'উনি কেন হাঁপিয়ে উঠলেন কেন? দেখলাম অক্সিজেন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷'

Published by:Debamoy Ghosh
First published: