#কলকাতা: গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে তিনটি আসন ছেড়ে ২৯১ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই ২৯১ প্রার্থীর মধ্যে তারুণ্যের সঙ্গে মহিলা, তারকা ছ্বটা ছড়িয়ে দিতেও ভুললেন না তিনি। কিন্তু তা করতে গিয়েই বেশ কয়েকজন 'ঘনিষ্ঠ'কে তালিকা থেকে ছেঁটে ফেলতে হল তাঁকে। তাঁদের মধ্য়ে রয়েছেন ভাঙরের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম, সাতগাছিয়ায় বিধায়ক সোনালি গুহ, নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসের মতো নেতা-নেত্রীরা। আর সেই সূত্রে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই দিকে-দিকে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ, বেড়ে গিয়েছে দল ছাড়ার হিড়িক।
প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই অসন্তোষ দেখিয়ে রীতিমতো টুইট করেন আরাবুল। লেখেন, 'দলে আজকে আমার প্রয়োজন ফুরোল'। এমনকী নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেন আরাবুল। একইসঙ্গে সংবাদমাধ্য়মের সামনে তিনি বলেন, 'এই তৃণমূল দলটাকে বুকে আঁকড়ে রেখেছি, সাধারণ মানুষের পাশে থেকে রাজনীতি করেছি। কিন্তু আজ আমার আর দলে কোনও প্রয়োজন নেই। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভাঙড়ের মানুষ যা বলবেন, আমি এখন তাই করব।' যদিও দল পরিবর্তন নিয়ে মুখ খোলেননি আরাবুল। অবশ্য ভাঙরের তৃণমূল প্রার্থী রেজাউলের দাবি, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কারও প্রয়োজন ফুরোয় না। তিনি সকলের খেয়াল রাখতে জানেন।'
কান্না চেপে রাখতে পারেননি সাতগাছিয়ায় বিধায়ক সোনালি গুহ। বরাবরই মমতার আস্থাভাজন হিসেবেই পরিচিত সোনালি। তা সত্ত্বেও এবার তাঁকে দলনেত্রী প্রার্থী না করার শোকে সংবাদমাধ্যমের সামনে রীতিমতো কান্নাকাটি করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনিও ক্ষোভ উগড়ে বলেন, 'দীর্ঘদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ছিলাম। আর তার ভালোই সম্মান পেলাম।' সরাসরি মমতাকে নিশানা করেই এরপর সোনালি তোপ দাগেন, 'মমতা দি'র বাড়ির লোক ছিলাম আমি। আমার সঙ্গে মমতা দি এমনটা করতে পারেন, বিশ্বাসই হচ্ছে না।'
এদিকে, বীরভূমের নলহাটির বিধায়ক মইনুদ্দিন শামসকেও এবার টিকিট দেননি মমতা। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে রাজেন্দ্র প্রসাদ সিংকে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই দল ছাড়ার ঘোষণা করেন শামস। যদিও নিজের এলাকায় আর কাজ করা যাচ্ছিল না বলে অন্য়ান্য় দলত্য়াগীদের মতোই দাবি করেছেন তিনি। অন্য়দিকে, শিলিগুড়িতে ওমপ্রকাশ মিশ্রকে প্রার্থী করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আর সেই খবর সামনে আসতেই শিলিগুড়ির দাপুটে নেতা নান্টু পাল সরাসরি বলে দিয়েছেন, 'এই প্রার্থীকে নিয়ে ভোট জেতা সম্ভব নয়।'
বিরোধীদের কটাক্ষ, 'তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা শুধু প্রকাশ হওয়ার অপেক্ষা ছিল। এমনিতেই ভাঙনের মুখে তৃণমূল। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার অপেক্ষা ছিল। ভোটের আগেই অর্ধেক দলটাই ভেঙে যাবে। ভোটের পর পুরোটা।' বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। টুইটে দিলীপ লিখেছেন, 'মমতা দৌড়তে পারলেও আর লুকোতে পারবেন না। নন্দীগ্রাম ভুলে যান। বাংলার কোনও আসনই আপনার জন্য আর নিরাপদ নয়।'