#কলকাতা: ''করোনার থেকেও বিপদজনক তৃণমূল। তাই আমাদের একদিকে যেমন করোনার সংক্রমণ থেকে সাবধানে থাকতে হবে। তেমনি তৃণমূল কংগ্রেসের থেকেও সাবধানে থাকতে হবে। একইসঙ্গে করোনা এবং তৃণমূল কংগ্রেস দু'জনকেই বিদায়ও জানাতে হবে''। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা শাসক দলকে ঠিক এভাবেই নিশানা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার ক্যানিং স্ট্রিট চা-চক্রে হাজির হয়ে দিলীপবাবুর সুর ছিল সপ্তমে। আমফান থেকে নানান সরকারি প্রকল্পের দুর্নীতি প্রসঙ্গে চাঁচাছোলা ভাষায় রাজ্য সরকার তথা শাসক দলকে আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ।
বলেন, ''কেন্দ্র থেকে সরকারি প্রকল্পের কটি কোটি টাকা এলেও সব টাকা চলে যাচ্ছে শাসক দলের নেতাদের পকেটে। বিজেপি রাজ্য সভাপতির বিস্ফোরক দাবি ,' সাধারণ মানুষের জন্য সরকারের উন্নয়নের টাকায় নির্বাচনী তহবিল গড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। ক্ষমতায় এলে সব হিসেব বুঝে নেব''। নাম না করে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও একহাত নেন দিলীপ ঘোষ। চা চক্রের অনুষ্ঠানে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে এদিনের এক সভা থেকে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, 'আমাকে গুন্ডা - মাফিয়া বলছে। আসলে উনি গুন্ডা মাফিয়াদের সঙ্গে থাকেন বলেই সাত কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়িতে থাকেন। এই সরকার মাফিয়া- চোরেদের সরকারে পরিণত হয়েছে ।তাই মানুষের সমর্থন হারিয়েছে'।
যে কোনও নির্বাচন এলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সি অতি সক্রিয় হয়ে পড়ে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল নেত্রীর এই অভিযোগের জবাব দিয়ে দিলীপ ঘোষের প্রশ্ন, 'আদালতের রায়ে এজেন্সি তদন্ত করছে। মমতা এখন রেগে যাচ্ছেন কেন? দেড় বছর ধরে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সক্রিয় । রাজ্যবাসী খুশি। তবে উনি খুশি নন মানে 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়'। মঙ্গলবারের শুভেন্দু- অভিষেক বৈঠক প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বললেন, ''এটা কী খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন? এটা ওদের বাড়ির ব্যাপার। আমি আগ্রহী নই ''। তবে দিলীপ ঘোষ শুভেন্দু ইস্যুতে আগ্রহী নই বললেও আবার তাৎপর্যপূর্ণভাবে একথাও বলেন , ''এখনও আছে ? জানিনা। কতদিন থাকবে''।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর সংযোজন, ''আরও অনেক শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদ বিজেপিতে আসছেন। অনেকেই ফোন করেন ।তাই অনেক ভেবে চিন্তেই মুকুলবাবু কিংবা আমি শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের দলবদলের কথা বলি। ফাঁকা আওয়াজ না। দেখুন না ডিসেম্বর মাস শেষ হলে কী হয়'। মুখ্যমন্ত্রীর দুয়ারে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়েও কলকাতায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি জানান, ''সরকারি টাকায় তৃণমূলের পতাকা বাইকে লাগিয়ে লোক এনে ভিড় বাড়ানো হচ্ছে। কোনও পরিষেবা মিলছে না। স্রেফ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ভোটের মুখে এই কর্মসূচি। আমরা বিষয়টা নির্বাচন কমিশন এবং প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থও হব''। তবে বিজেপি কিংবা দিলীপ ঘোষের একের পর এক অভিযোগের বোমা ফাটানো নিয়ে চিন্তিত নয় শাসক দল। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ''ওরা ভাবছে বাংলা দখল করেই ফেলেছে। তাই পাগলের প্রলাপ বকছে। ওদের দিবাস্বপ্ন স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে। তৃতীয়বারের মতো বাংলায় আবার মমতার সরকারই জনতার আশীর্বাদে ক্ষমতায় আসবে।''