#কলকাতা: দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় ফের কংগ্রেসকে (Congress) তুলোধোনা করল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে 'রণক্লান্ত' বলে কটাক্ষ করা হয়েছে (TMC Criticizes Congress in Jago Bangla)।
তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে লেখা হয়েছে, 'বিজেপি-কে প্রতিরোধ করার কথা ছিল কংগ্রেসের। তারাই ছিল কেন্দ্রের বিরোধী দল। কংগ্রেস উদাসীন, রণ-ক্লান্ত, ভারাক্রান্ত, অন্তর্দ্বন্দ্ব আর দলীয় জটিলতায় বিদীর্ণ। ব্যাটন বইতে অপারগ। সময় পড়ে থাকে না, কাউকে এগিয়ে আসতেই হয়।তৃণমূল কংগ্রেস সেই দায়িত্ব পালন করবে। তারাই আসল কংগ্রেস।'
জাগো বাংলার (Jago Bangla) সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে, সকলকে নিয়েই চলতে চান অভিষেকরা। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে কংগ্রেসকে বিঁধে লেখা হয়, আন্দোলন বিমুখ কংগ্রেস 'ডিপফ্রিজে' চলে গিয়েছে। কংগ্রেস নেতারা নেতারা ট্যুইট সর্বস্ব বলেও অভিযোগ করা হয়। ইউপিএ-র অস্তিত্বও অস্বীকার করা হয় তৃণমূলের মুখপত্রে।
সেখানে আরও দাবি করা হয়, কংগ্রেসের এই অচলাবস্থায় বিকল্প বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই সর্বজনগ্রাহ্য এবং জনপ্রিয়। তাঁর দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: 'নিজের বোনের' ভোট প্রচারে জমজমাট ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুর লড়াই!
গত সপ্তাহেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতৃত্বকে। তাঁর সাফ বক্তব্য ছিল, শেষ ১০ বছর ৯০ শতাংশ নির্বাচনে হেরেছে কংগ্রেস। বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়াটা কংগ্রেসের ঈশ্বরপ্রদত্ত কোনও অধিকার নয়। প্রশান্ত কিশোরের এ হেন বিস্ফোরক ট্যুইটের পর কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে পিকে-র বিরুদ্ধে অবশ্য সেভাবে ঝাঁজালো আক্রমণ নেমে আসেনি।
শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস লাগাতার কংগ্রেস নেতৃত্বের দুর্বলতার কথা জনসমক্ষে তুলে ধরলেও খোলাখুলি তৃণমূলের বিরোধিতা করার সাহস সেভাবে দেখাতে পারছেন না রাহুল গান্ধিরা। বরং, তৃণমূল নিয়ে কংগ্রেস এখনও দ্বিধাবিভক্ত। ‘জাগো বাংলা’য় ঘাসফুল শিবিরের বক্তব্য, কংগ্রেস নেতৃত্ব আসলে সেই ঝাঁজটাই হারিয়ে ফেলেছে। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রশ্ন তুলে দেওয়ার পরও কংগ্রেসের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেওয়ার মতো সাহস দেখাতে পারছে না।
আরও পড়ুন: 'পড়ুয়ারা অপেক্ষা করে আছে! স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের কাজে ঢিলেমি নয়', বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর...
ফলে বিগত কয়েকমাস ধরে জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আসলে, গত কয়েকমাসে জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল যত দ্রুত গতিতে উত্থান ঘটিয়েছে, কংগ্রেস যেন ততই সমস্যা জর্জরিত হয়ে যাচ্ছে। দলের কোন্দল সামলাতেই তারা ব্যস্ত। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের শক্তি বাড়াবে। দল মনে করে, দেশের পয়লা পয়লা নম্বর শত্রু হল বিজেপি। সেই দলকে ২০২৪-এর ভোটে দিল্লির মসনদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। নইলে গণতন্ত্রের বিপদ। আর সেই কারণেই অভিষেক বন্দোপাধ্যায় নেতৃত্বে রাজ্যে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস তার শক্তি বাড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই কংগ্রেস শীর্ষনেতা গুলাম নবি আজাদ বলে দিয়েছেন, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি-র মতো ৩০০ আসন জিতে আসার ক্ষমতা তাঁর দলের নেই। অর্থাৎ, ক্ষমতা থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে কংগ্রেস। তৃণমূলের বক্তব্য, আজাদ যে কথা বলছেন, অনেকদিন আগে থেকেই তারা সেকথা বলে আসছে।
তৃণমূল বহু আগে থেকেই বলে আসছে, ইউপিএ শেষ। নবকলেবরে বিরোধী জোট দরকার। দলীয় কোন্দল এবং রক্তক্ষরণে কংগ্রেস এতটাই বিদীর্ণ যে দল ধরে রাখাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, সামান্য লোকদেখানো আন্দোলন ছাড়া কংগ্রেস শীর্ষ নেতারা ঘরবন্দি এবং ট্যুইট সর্বস্ব। কিন্তু দেশে এই মুহূর্তে বিরোধী জোটের দরকার। সেই দায়িত্ব বিরোধীরা তৃণমূল নেত্রীকেই দিয়েছেন। কারণ তিনিই এখন সর্বজনগ্রাহ্য, জনপ্রিয় বিরোধী মুখ। তাঁর দিকেই তাকিয়ে বিরোধী শক্তি। তবে জাগো বাংলার সম্পাদকীয়তে আবারও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে সবাইকে সঙ্গে নিয়েই চলতে চান অভিষেকরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।