হোম /খবর /কলকাতা /
করোনা আবহে ও খাস কলকাতাতেই কলেজে বসে পরীক্ষা!

করোনা আবহে ও খাস কলকাতাতেই কলেজে বসে পরীক্ষা!

অনলাইন নয়, এভাবেই চলল পরীক্ষা।

অনলাইন নয়, এভাবেই চলল পরীক্ষা।

সব ছাত্র নয়, হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র- ছাত্রী কলেজে ক্লাস রুমে বসে সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখেই পরীক্ষা দিলেন। আর তাতেই শুরু হয়েছে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক।

  • Last Updated :
  • Share this:

#কলকাতা: খাস কলকাতাতেই কলেজে বসে পরীক্ষা দিলেন ছাত্রছাত্রীরা। শিক্ষামন্ত্রী বারণ সত্তেও  বৃহস্পতিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা কলেজে বসেই নিল দক্ষিণ কলকাতার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ। তবে সব ছাত্র নয়, হাতেগোনা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী কলেজে ক্লাস রুমে বসে সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখেই পরীক্ষা দিলেন। আর তাতেই শুরু হয়েছে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক।

বাড়িতে বসেই অনলাইনে ওপেন বুক সিস্টেমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেবেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছিল। তারপরেও ছাত্র-ছাত্রীদের এইভাবে কলেজে বসে আদেও পরীক্ষা দেওয়া যায় নাকি সেই নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে? যদিও এজেসি বোস কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণ চন্দ্র মাইতি জানিয়েছেন, "আমাদের কলেজে মালদহ, মুর্শিদাবাদের মত জায়গা থেকে প্রচুর ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে। ওদের ওখানে ইন্টারনেট সমস্যা বা অনেকের কাছেই অ্যান্ড্রয়েড ফোনও নেই। ওরা আমাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল, তাই আমরা কলেজে বসে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি ওদের কথা মাথায় রেখেই।"

তবে এই সিদ্ধান্তের পিছনে উচ্চ শিক্ষা দফতর বা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছিল নাকি সে প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য অধ্যক্ষ দাবি করেন, "এই সিদ্ধান্ত কলেজগুলির ওপরই নির্ভরশীল।"

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ অন্যান্য কলেজগুলিতেও এদিন পরীক্ষা হয়। বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী বাড়িতে বসে আবার কেউ কেউ সাইবার ক্যাফেতে বসে পরীক্ষা দেয়। কোনও কলেজই ছাত্রছাত্রীদের কলেজ ক্যাম্পাসে বসিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়নি। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ সারেঙ্গী বলেন, " সরকার থেকে বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাদের কাছে বারণ ছিল কলেজ ক্যাম্পাসে কোনওভাবেই পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। একান্ত প্রয়োজন হলে সে ক্ষেত্রেও যদি প্রান্তিক অঞ্চলেই সমস্যাগুলি হয় তাহলে সেই সিদ্ধান্ত কলেজ গুলি নিয়ে নেবে।"

বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছে। ইউজিসির গাইডলাইন মেনেই দু'ঘণ্টার মধ্যে লিখিত পরীক্ষা এবং তারপর ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশ্নপত্রের উত্তরপত্র আপলোডের জন্য। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নিয়ম চালু করার পর রাজ্যের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পথে হেঁটেই এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও এবার সেই পরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিল। উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন পরীক্ষা হবে অনলাইনে। অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দেবেন। কোনও ভাবেই কলেজ ক্যাম্পাসে বা কলেজে এসে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে পারবেন না। কিন্তু তারপরেও বিধিভঙ্গ।

শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশ্নপত্র ছাত্র-ছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময় দিয়ে বই রেখেই পরীক্ষা দিতে পারবেন ছাত্রছাত্রীরা। এমনই নিয়ম করেছে দক্ষিণ কলকাতার এই কলেজ। অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলির বেশ কয়েকটি কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশ্নপত্র পেতে খানিকটা দেরি হয়।

অনেকক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের উত্তরপত্র পাঠাতেও দেরি হয়। প্রশ্নপত্রের ফাইল বড় হওয়াতে খানিকটা সমস্যা হয়েছে বলে কলকাতার কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষদের দাবি। তবে কলকাতার বেশিরভাগ কলেজই কলেজ ক্যাম্পাসে কোন ছাত্রছাত্রীদেরই অনুমতি দেয়নি পরীক্ষা কলেজে বসে বা কলেজ ক্যাম্পাসে বসে দেওয়ার জন্য। অনেক ছাত্রছাত্রী অবশ্য কলেজের কাছাকাছি কোন সাইবার ক্যাফে বা কোন দোকানে বসেই এদিন পরীক্ষা দিয়েছেন। বেশ কয়েকজন ছাত্র ছাত্রীদের অভিভাবকরা কলেজ ক্যাম্পাসে এসেই উত্তর পত্র জমা দিয়ে গিছে। তবে এজিসি বোস কলেজ ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি কার্যত পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনেই নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিল। মান সত্ত্বেও এই ভাবে কোন কলেজ পরীক্ষা নিতে পারে নাকি তার প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোন মন্তব্য করতে চাননি।

 -সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published by:Arka Deb
First published:

Tags: Covid ১৯