#কলকাতা: বিয়ে বাড়িতে যোগ দিতে এসে বড় বিপদে পড়েছেন উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের বাসিন্দারা। এক মাসের লকডাউন এর বাজারে অচেনা শহর কলকাতায় যা টাকা এনেছিল সবই খরচ হয়ে গেছে অনেক আগেই। মোট ১১ জন। যার মধ্যে একেবারে শিশু ৭জন। দুবেলা দুমুঠো খাবার জুটছে না। অচেনা শহর কার কাছে খাবার চাইবেন! কাউকেই তো চেনেন না। বাড়িওয়ালা থেকে পাড়ার লোক, কেউ যদি কিছু দেন ।তাই খেয়ে দিন গুজরান করছে সবাই।
সুনিতা সিং, বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আদ্রাস জেলার,আলিগড় থানার রহিরীহি গ্রামে। ছেলে পবন সিং কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকে। তার বিয়েতে দুই মেয়েকে, নাতি নাতনিদের ও জামাই মুকেশকে নিয়ে আসেন কলকাতায়। কলকাতা দেখা এবং বিয়ে বাড়ি দুটোই একসঙ্গে উপভোগ করবেন সেই আশায়। ১১ ই মার্চ কলকাতায় এসে পৌঁছেছিল ওরা।ফেরার টিকিট ছিল ২৩ শে মার্চ।২৩ তারিখ থেকে শুরু হয়ে যায় সারাদেশে লকডাউন। যা কিছু সঙ্গে এনেছিলেন বিয়ে, বিয়ের পরবর্তী খরচ। সবকিছুতেই খরচ হয়ে যায় টাকা পয়সা। মুকেশ রহিরিহী গ্রামে রুপোর ঘুঙুর তৈরির কারিগরের কাজ করে।বছরে ৭মাস কাজ থাকে।ওই ৭ মাসে ৭০ হাজার টাকা মত রোজগার করে।সুনিতা বিধবা।চাষের কাজ করে কোনো ভাবে সংসার চালিয়ে যান।সঙ্গে একটি বোবা কালা ছোট্ট মেয়েও থাকে।এখন সুনিতা কঠিন বিপদে পড়েছে। বিয়ের সময় ১২ দিন থাকার জন্য পাটুলিতে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল।সেই বাড়িতে থেকে যেতে বাধ্য হয়েছে এখনও। ৭ টি বাচ্চা অভুক্ত কাটাচ্ছে প্রায় দিন।মাঝে মাঝে পাশের কেউ সমস্যার কথা জানতে পারলে,কিছু খাবার দিয়ে সাহায্য করছেন।দীপক উপাধ্যায় নামে এক ব্যাক্তি তার বাড়ির গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়ে সাহায্য করেছেন,সামর্থ্য মত খাবারও দেন। বুধবার বিকেলে বিষয়টি শোনার পর গিয়ে দেখা গেল,ওই দিন সকাল থেকে কারো খাওয়া হয়নি।দরজার সামনে যেতেই বছর চারেকের একটি ছোট্ট শিশু সামনে এসে বলল,' খানা লায়া '? খুব সম্ভবত বাচ্চা গুলো খাবারের জন্য কাঁদছিল ,চোখের কোন দিয়ে কান্নার জল গড়িয়ে গেছিল,আর সেটা শুকিয়ে একটি রেখা তৈরি হয়ে রয়েছে।
এতগুলো প্রাণী এক মাসের বেশি এখানে আছে। পাটুলি থানা এসে একবার ২কেজি চাল পাঁচশো গ্রাম মত আলু দিয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় কাউন্সিলর কয়েকদিন কিছু কিছু খাবার পাঠিয়েছিল। তারপর থেকে সবাই হাত তুলে নিয়েছে। ভিন রাজ্যের মানুষ অচেনা শহর কলকাতায় এসে সম্পূর্ণ বিপাকে। বাড়ি থেকে বেরোনোর উপায় নেই। যার সঙ্গেই দেখা হচ্ছে তাকে জিজ্ঞেস করছে' লকডাউন কব খুলেগা?' হাম লোগ ঘার জানা চাহতা হু।' উপায়হীন বাচ্চা গুলো খিদের জ্বালায় কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ছে। তবুও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি তোলা সমাজকর্মীরা এখনো পর্যন্ত ওদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় নি। আশেপাশের বহু বাবু রয়েছেন ।ক্ষুধার্ত বাচ্চার কান্নার শব্দ তারা শুনতে পান না। বাবুরা এখন লকডাউন আর করোনা ভাইরাসের অজুহাতে সম্পূর্ণ বধির।ইন্টারনেট থেকে সবাইকে জ্ঞান দিচ্ছেন,ঘরে থাকুন বাইরে বেরোবেন না।
SHANKU SANTRA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।