#কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে গত দেড় বছর দেশজুড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। তাই অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থাতে ভরসা রাখতে হচ্ছে শিক্ষক-ছাত্র প্রত্যেককেই। এরই মাঝে রবিবার দেশ জুড়ে পালিত হল শিক্ষক দিবস (Teachers Day)। যে দিনটি সকল শিক্ষককূলের কাছে গর্বের দিন হিসেবেই পরিচিত। এই দিনটিতেই প্রত্যেক পড়ুয়া তার শিক্ষাগুরুর কথা বিভিন্নভাবে স্মরণ করে থাকে। এমনকী এই দিনে শিক্ষক ছাত্র সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে, যখন একজন শিক্ষক তাঁর ছাত্রের জীবন গঠনের নানান মূল্যায়ণ করে থাকেন দিনটি পালনের মধ্যে দিয়ে।
এমনই দিনে শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের নানান গল্পে ভরে উঠেছিল রবিবাসরীয় দুপুরের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। সংশোধনাগার, যেখানে জীবনের অপরাধমূলক একটা অধ্যায় সংশোধনের জন্য একজনকে নিয়ে আসা হয়ে থাকে। যেখানে জীবনের মূল্যবোধের একটা পাঠ দেওয়া হয়। সংশোধনাগারের অন্দরে যাঁরা এই কাজ করে থাকেন, তাঁদের শিক্ষক দিবসে সম্মানিত করল প্রেসিডন্সি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
গৌতম রায়, কৃষ্ণচন্দ মাঝি ও মনোরাজ পাল- যাঁরা রাজ্য কারা দফতরে কর্মরত। দফতরের বিভিন্ন কাজে তাঁরা নিয়োজিত থাকলেও নিয়ম করে সংশোধনাগারের বন্দি মনের ‘অপরাধ’ মুছে ফেলে সাধারণ মানুষ গড়ার কাজ করে চলেছেন। এদিন তাঁদের হাতে ফুলের স্তবক তুলে দিলেন সংশোধনাগার সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: 'পাঞ্চজন্য আমাদের মুখপত্র নয়', ইনফোসিস-দেশদ্রোহী কাণ্ডে দূরত্ব বাড়াল RSS
শুধু তাই নয়, এই সংশোধনাগারে এমন কয়েকজন রয়েছেন তাঁদের কর্ম জীবনের পথ চলা শুরু হয়েছিল শিক্ষকতা দিয়েই। পার্থ রায় (নাম পরিবর্তিত), অতনু সর্দার(নাম পরিবর্তিত), সঞ্জীব দাস( নাম পরিবর্তিত), শেখ আমিরুল (নাম পরিবর্তিত), প্রভাত ভট্টাচার্য (নাম পরিবর্তিত) ও মহম্মদ রৌহন (নাম পরিবর্তিত)- এদের কেউ সাজাপ্রাপ্ত, আবার কেউ বিচারাধীন বন্দি। যাঁরা নিজের কর্মজীবন শুরুর পর কোনও না কোনও কারণে জড়িয়ে পড়েন অপরাধ মূলক কাজে। এদের মধ্যে একজন কলেজে শিক্ষকতা করতেন একটা সময়। কেউ শিশুর যৌন হেনস্থার অভিযোগে আজ সংশোধনাগারে এসে পৌঁছেছেন, কেউ আবার প্রতারণা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।
কিন্তু কর্মজীবনের শিক্ষকতা এখনও মনের গভীরে লুকিয়ে। তাই সুযোগ পেলেই সংশোধনাগারের অন্দরে বসিয়ে ফেলেন পাঠশালা। এদিন তাঁদেরকেও সম্মানিত করল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। গান, আবৃত্তি, অভিজ্ঞতার গল্প কথায় ভরে উঠেছিল অনুষ্ঠান। এক এক জন তাদের স্কুল জীবনের কথাও এদিন ভাগ করে নিয়েছেন অনুষ্ঠানের মাঝেই। তাই হয়ত শেষে চোখের জলে একজন গেয়ে উঠেছিলেন, ‘দিল অ্যায়সা কিসিনে মেরে তোরা…’।
------অমিত সরকার
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।